পুরনো মোবাইল ফোন কিনবেন? সাবধান! ঘুরছে বড় দালাল চক্র
- Published by:Suman Majumder
- hyperlocal
- Reported by:Mainak Debnath
Last Updated:
আধার কার্ড ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি দিয়ে তাৎক্ষণিক অর্থ লাভের প্রলোভনে পা দেবেন না, আপনি জানতেও পারবেন না আপনার নামে ঋণ খেলাপির নোটিশ আসবে বাড়িতে।
নদিয়া: সাবধান! আধার কার্ড ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি দিয়ে তাৎক্ষণিক অর্থ লাভের প্রলোভনে পা দেবেন না, আপনি জানতেও পারবেন না আপনার নামে ঋণ খেলাপির নোটিশ আসবে বাড়িতে।
বর্তমান দুনিয়ায় মোবাইল একটি দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দামি ফোন ব্যবহার করা সামাজিক স্টেটাস হিসেবে অনেকেই মনে করেন। আর সেই কারণে অনেক সময় সাধ্য না থাকলেও অনেকেই কিনে ফেলেন নামি দামি ফোন। আর তার সহজপন্থা যে কোনও মোবাইলের দোকানেই রয়েছে।
শহরতলিতে বড় ও মাঝারি ইলেকট্রনিক্স কিংবা মোবাইলের দোকানে ছোট্ট একটি কাউন্টার থাকে ব্যাংক লোনের। অর্থাৎ গ্রাহকের পকেটে পয়সা না থাকলে কাউন্টারে থাকা সেই ব্যাংকের এজেন্ট সম্পূর্ণ টাকা দিয়ে দেবে গ্রাহকের হয়ে, গ্রাহক পেয়ে যাবে পছন্দের মোবাইল কিংবা অন্য জিনিস। এর পর গ্রাহক কিস্তির মাধ্যমে সেই টাকা শোধ করবে সেই ব্যাংককে। যদিও সেই কিস্তির মধ্যে সুদ হল অন্যতম রসদ ব্যাংকের।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- বন্ধুর বাড়িতে জুতো, ঘরে বিয়ারের বোতল! শিলিগুড়িতে ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় বাড়ছে রহস্য
সম্প্রতি শান্তিপুরের অধিকাংশ মোবাইলের দোকানের সেই সমস্ত দোকানদারেরা ফাইন্যান্স কোম্পানির এজেন্টের থেকে জানতে পারছে অধিকাংশ গ্রাহকেরাই দামি কোনও ইলেকট্রনিক্স জিনিস অথবা নামিদামি মোবাইল নিয়ে তার মাসিক কিস্তি দিতে ফেল করছেন। অর্থাৎ সঠিক সময় সেই কিস্তি দিচ্ছেন না।
advertisement
এক দুজন নয়, বরং এই সমস্ত গ্রাহকের সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এর পর মোবাইলে দোকানদাররা একটু খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, বেশ কিছু গ্রাহক নিজেদের ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড দিয়ে একটি দামি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রিক কিংবা একটি মোবাইল ফোন কেনার পরেই দিয়ে দিচ্ছেন একজন থার্ড পার্টির হাতে, তার পরিবর্তে সেই গ্রাহক পেয়ে যাচ্ছে নগদ কিছু টাকা।
advertisement
তাদেরকে বোঝানো হচ্ছে, দু-একটি কিস্তি দেওয়ার পর বাকিটা সেটেলমেন্ট করে দেবে ওই তৃতীয় ব্যক্তি কিংবা দালাল। এর পর সেই তৃতীয় ব্যক্তি অন্য একটি দোকানে গিয়ে সেই ফোন বিক্রি করে ক্রয় মূল্য থেকে সামান্য কম অর্থ পেয়ে যাচ্ছেন অনায়াসেই। আর এই ধরনের আভাস পেয়ে সমস্ত মোবাইলে দোকানদাররা নড়েচড়ে বসে। তারা চেয়েছিলেন কোনওভাবে এক আধজনকে ধরে এই চক্রের পর্দা ফাঁস করতে। এর পর সময়ও এসে যায় একদিন।
advertisement
জানা যায়, গতকাল সুজয় কুন্ডু নামে এক মোবাইল বিক্রেতার কাছে একজন গ্রাহক আসে একটি ৫০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন কিনতে। গ্রাহকের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় সুজয়বাবুর। দোকানদার যে কোনও ফোন দেখানো হলেই প্রত্যেকবার ওই গ্রাহক বাইরে যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলে পুনরায় ফিরে এসে অন্য কোনও সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন।
এর পরই সন্দেহ হয় সুজয়বাবুর। তিনি সেই গ্রাহকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এই মোবাইল ফোন কিনে তিনি কী করবেন! এর পরই স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে যায়, ওই গ্রাহক স্বীকার করে, শান্তিপুর কলেজ মোড়ে বাড়ি তুহিন সরকার নামে এক যুবক তাকে এই মোবাইল দোকানে পাঠিয়েছে নিজের নথিপত্র দিয়ে কিস্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোনটি নেওয়ার জন্য। তার পরিবর্তে সে পাবে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
advertisement
জানা যায়, এইরকমই এক দালাল চক্র চলছে গোটা শান্তিপুর জুড়ে। তবে শুধু শান্তিপুর নয় আশেপাশের কৃষ্ণনগর ফুলিয়া এমনকি রানাঘাটের গ্রাহক পর্যন্ত রয়েছে। যারা এই ধরনের গ্রাহককে আর্থিক সুযোগ নিয়ে তাদের নামে কিস্তির মাধ্যমে দামী জিনিসপত্র তুলে গ্রাহকদের প্রয়োজনমতো টাকা দিয়ে তারা ওই একদিনের পুরনো নতুন মোবাইল অথবা ইলেকট্রনিক্স বস্তুটি বিক্রি করে দিচ্ছেন অন্য কোন দোকানদারের কাছে। এর পর কিস্তির টাকা শোধ করার জন্য চাপ পড়তে থাকে জনৈক সেই সমস্ত গ্রাহকদের কাছে।
advertisement
এর পরই দোকানদাররা তুহিন নামে ওই যুবককে ডেকে পাঠায়। অভিযুক্ত ওই যুবক আসার পরে বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। দোকানদাররা জানান, জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন একাধিক দোকানদারের বিভিন্ন জিনিসপত্রের জন্য ফোন আসতে থাকে তার কাছে। এরপরে ওই যুবকের থেকে জানতে পারে, শুধু একজন নয়, এরকম বেশ কয়েকজন মিলে একটি দালাল চক্র চলছে গোটা শান্তিপুর জুড়ে।
ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত দোকানদাররা মিলে শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে বলে সিদ্ধান্ত নেন। তারা গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে জানান, আজকাল অনেক মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকেরাও বিভিন্ন নামিদামি জিনিস কিনছেন শুধুমাত্র ব্যাংক থেকে তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে। কিন্তু এই সমস্ত দালাল চক্রের পাল্লায় পড়ে ব্যাংকের সেই সুবিধা অনেকেই অসৎ উপায় ব্যবহার করছেন। যার ফলে কিস্তি মেটানোর জন্য হেনস্থা তো হতে হচ্ছেই, এমনকী ভবিষ্যতে কোনও জিনিস কেনার জন্য যে সিভিল স্কোর প্রয়োজন হয় সেটিও তাদের খারাপ হচ্ছে।
তাঁরা অনুরোধ করছেন, কোনও জিনিস কিনতে হলে সরাসরি সেই দোকানে গিয়ে যোগাযোগ করুন। সেখানেই ব্যাংক থেকে লোন করিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যাংকের এজেন্ট বসে থাকেন। তাঁরাই আপনাকে জরুরি নথিপত্র চেক করে সরাসরি আপনার নামে আপনাকে সেই জিনিসটি কিনতে সাহায্য করবেন।
মৈনাক দেবনাথ
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
April 02, 2025 7:33 PM IST