Woman's Day Special Story: অ্যাসিডে পুড়েছে মুখ, ত্যাগ করেন স্বামী, ঠেলাগাড়িতে রুটি বেচে একার সংগ্রাম মমতা গায়েনের, শুনে চোখে জল আসবে
- Published by:Teesta Barman
- hyperlocal
- Reported by:SUMAN SAHA
Last Updated:
Woman's Day Special Story: একটা ঘটনা জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে সব কিছু। চাকরি গিয়েছে, ছেড়ে গিয়েছেন কাছের মানুষজন। সব হারিয়েও অবশ্য লড়াই ছাড়েননি বারুইপুরের অ্যাসিড আক্রান্ত মমতা গায়েন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: একটা ঘটনাই জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে সব কিছু। চাকরি গিয়েছে, ছেড়ে গিয়েছেন কাছের মানুষজন। সব হারিয়েও অবশ্য লড়াই ছাড়েননি বারুইপুরের অ্যাসিড আক্রান্ত মমতা গায়েন। বেঁচে থাকার লড়াই লড়তে ছোট্ট ঠেলা গাড়িতে চা-ঘুগনি বিক্রি করছেন বছর পঞ্চাশের মহিলা। তৈরি করছেন রুটিও। রোজ ঠেলা ঠেলে পাড়ার মোড়ে গিয়ে বসেন তিনি। সারা সন্ধে রুটি, ঘুঘনি, চা বেচে বাড়ি ফেরেন রাতে।
বারুইপুরের উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা মমতা। একসময় তিনি কলকাতায় এক বেসরকারি সংস্থায় রিসেপশনিস্টের কাজ করতেন। সংসার সামলে রোজ সকালে বারুইপুর থেকে ট্রেনে বালিগঞ্জ যেতেন। সেখান থেকে কর্মস্থলে। কাজ সেরে আবার ট্রেন চেপে ফিরতেন বারুইপুরে। ২০১০ সালে এরকমই একদিন বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনে অ্যাসিড হামলা হয় তাঁর উপর।
মমতা জানান, রোজকার মতোই সেদিনও ফেরার পথে সন্ধ্যাবেলা বালিগঞ্জ থেকে ট্রেন ধরেন। ট্রেন ছাড়ার মুখে কিছুটা দৌড়েই মহিলা কামরায় ওঠেন তিনি। সেই সময়ই অ্যাসিড ছুড়তে ছুড়তে ওই কামরা থেকে নেমে যাচ্ছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী। মমতার মুখে-শরীরে এসে লাগে অ্যাসিড। পাশাপাশি আরও ১১ যাত্রী জখম হন সেই ঘটনায়। কিছুটা এগিয়ে ঢাকুরিয়া রেল বসতির কাছে ট্রেনের গতি কমতেই লাফিয়ে নেমে পড়েন তাঁরা। বসতির বাসিন্দারাই তাঁদের প্রাথমিক শুশ্রুষা করেন। পরে রেল পুলিশ এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
advertisement
advertisement
বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চলে মমতার। তবে একটা চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর চাকরি চলে যায় মমতার। ছেড়ে চলে যান স্বামীও। মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফেরার কিছুদিনের মধ্যে মৃত্যু হয় বৃদ্ধা মায়েরও। একা হয়ে পড়েন মমতা। নতুন কাজ জোগাড়ের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় মুখে-শরীরের ক্ষত চিহ্ন, পোড়া দাগ।
advertisement
মমতা জানান, লোকজন এড়িয়ে চলতেন। সেভাবে কাজ মিলত না। ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে নেন মহিলা। কার্যত ঘরবন্দি হয়ে পড়েন। সেই সময় দাদার পরিবারের তরফে একবেলা খাবার মিলত। তা দিয়েই কোনওরকমে দিন গুজরান করতেন তিনি। পরে অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা বারুইপুরের এক সংগঠনের হাত ধরে ঘর থেকে বেরোন তিনি। অ্যাসিড আক্রান্ত আরও মহিলাদের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত হন। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ফেরে। শেষ পর্যন্ত বছর খানেক আগে নিজেই কিছু করার ইচ্ছা থেকে তৈরি করে ফেলেন একটি ঠেলা গাড়ি। সেই ঠেলাগাড়ি নিয়েই রোজ বিকেলে বাড়ির কাছে পাড়ার মোড়ে এসে বসেন মমতা। চা, বিস্কুট, ঘগুনি বিক্রি করেন। রুটিও তৈরি করেন। পাড়ার অনেকেই রাতে খাবারের জন্য কিনে নিয়ে যান মমতার বানানো রুটি। চা-ঘুগনি খেতেও ভিড় করেন অনেকে। এই ভাবেই একা জীবনের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলা।
advertisement
সুমন সাহা
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
March 07, 2024 5:27 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Woman's Day Special Story: অ্যাসিডে পুড়েছে মুখ, ত্যাগ করেন স্বামী, ঠেলাগাড়িতে রুটি বেচে একার সংগ্রাম মমতা গায়েনের, শুনে চোখে জল আসবে