সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে চিন্তিত গোটা দেশ! এমন মত কেউ কেউ প্রকাশ করেন। কিন্তু তার মধ্যেই উঠে আসে এমন একটি চিত্র, যা প্রকাশ করে ভারতের ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য অতিপ্রাচীন। বিশেষত বাংলার আনাচে কানাচে এমন অসংখ্য উদাহরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তেমন অনেক উদাহরণই আবার জড়িয়ে আছে বাঙালির শ্রেষ্ট উৎসব দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে। তেমনই এক সাম্প্রদায়িত সম্প্রীতির উদাহরণ তৈরি হয়েছে আরামবাগের সরকার বাড়ির বনেদি আনায় পূর্ণ দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে।
কেন এই পুজো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ? তার কারণ শেষ সাড়ে তিনশো বছর ধরে এই পুজো শুরু হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের নমাজের সুরের সঙ্গে। মুসলিমরা নমাজ পড়া শেষ করলে হয় আরতি, শুরু হয় পুজো। মা দুর্গার আবাহনে এই রীতিই চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ৩৫০ বছর আগে এই পুজো শুরু করেছিলেন জমিদাম বাবুরাম সরকার। তাঁর জমিদারিতে ছিলেন অনেক মুসলিম মানুষ। বাবুরাম নিজে খোলা মনের মানুষ ছিলেন, তাই তাঁদেরও নিজের সংস্কৃতির মধ্যে জায়গা করে দিয়েছিলেন। দুই সম্প্রদায় মিলে মিশে দুর্গাপুজোর আয়োজন করতেন। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, যখন জাতপাতের বিচার সবচেয়ে বেশি ছিল, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে কী করে এতটা প্রগতিশীল চিন্তা করতেন তাঁরা। ২১ শতকে দাঁড়িয়েও হয়ত কেউ কেউ এই ভাবনা ভাবতে পারেন না, যা তখন ভেবেছিলেন বাবুরাম।
সেই থেকে সপ্তমীতে নমাজ পাঠের মাধ্যমেই পুজোর শুরু করে আসছেন সরকার পরিবার। অষ্টমী, নবমীতেও নমাজ পড়ার পর শুরু হয় পুজো। এই পুজো মণ্ডপে আব্দুল মতলেব নামে স্থানীয় এক মুসলিম শেষ ৩০ বছর ধরে পুজোর আগে নমাজ পড়ে আসছেন। সরকার পরিবার আজও এই রীতি বজায় রেখেছেন। আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক বার্তা দিতেই এই প্রথাম আরম্ভ, এমন মনে করেন অনেকেই।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।