#দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা: করোনা কালে কয়েক দিন স্কুল হয়েছে।জীবনের বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক এবার হচ্ছে না।মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মত রাজ্যের সব স্কুলগুলিতে দশম শ্রেণীর পড়ুয়াদের নাম বোর্ডের কাছে জমা পড়ে গেছে।তারপরেও এবার আমডাঙ্গার একটি স্কুলের দশম শ্রেনীর আট ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না।
ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের অভিযোগ স্কুলের গাফিলতির জন্যই এই ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ বড়সড় সমস্যার মুখে।ছাত্রীদের অভিভাবকরা দাবি করছে স্কুলের নির্দেশ মেনে সাড়ে চারশো টাকা স্কুলের কাউন্টারে জমা দিয়েছে। রেজিস্ট্রেশন ও তারপর স্কুলের শিক্ষকরা যে ফর্মে সই করতে বলেছে সেটাও করেছে তারা। আর গত কয়েকদিন আগে তাঁরা জানতে পারেন তাদের মেয়েরা এবার মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীই নন। কারণ হিসেবে স্কুলের লেটারহেডে প্রধান শিক্ষক সুবীর কুমার ঘোষ লিখিত ভাবে জানিয়েছেন ছাত্রীরা এনরোলমেন্ট ফর্মে সই না করায় এই বিপত্তি।
আমডাঙ্গা থানার অধীন মাধবপুর প্রহ্লাদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ ঘটনা এটি।জেসমিনা খাতুন এই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। আমডাঙ্গা থানার বেড়াবেড়িয়া গ্রামে বাড়ি তার। তাঁর বাবা পেশায় ভ্যানচালক। গত এক বছরের লকডাউনের মাঝে কষ্ট করে প্রাইভেট টিচার দিয়ে পড়িয়েছেন।মেয়ের শিক্ষার জন্য করোনা অতিমারির মধ্যে কঠিন সময়ে নগদ সাড়েচারশো টাকা স্কুলে জমা দেন। মেয়ে, মাধ্যমিকটা যাতে দিতে পারে।একই ভাবে সাহিনা খাতুনের দাবি রাজমিস্ত্রীর কাজ করা পরিবারের সন্তান তিনি। পরিবার চায় মেয়ে শিক্ষিত হক। তাই এক প্রকার বেকার বাবা তাঁকেও এই অতিমারির জন্য স্কুলের ফি জমা দেওয়ার টাকা যোগাড় করে দিয়েছেন। সমস্যায় পড়া ছাত্রীদের অভিযোগ স্কুল থেকে তাদের সব সই করিয়ে নেওয়া হয়নি। তাদের শিক্ষকরা যেমন বলেছেন তারা তেমন করেছে। আর জেসমিনা ও সাহিনার অভিভাবকদের অভিযোগ, টাকা যখন রশিদ কেটে স্কুল নিল, তখন সবাই সব কটি ফর্ম ও জায়গায় সই করল কি না সেটা দেখার দায়িত্ব তো স্কুলের। অন্তত বোর্ডের কাছে নামের তালিকা ও নথি পাঠানোর আগে স্কুল কেন লিস্ট চেক করল না।
দশম শ্রেণির ছাত্রী মানেই নাবালিকা।বছর ষোলোর এই সব বাচ্চারা কি সেই সব বোঝে। প্রশ্ন অভিভাবকদের। তাদের দাবি মেয়েদের শিক্ষার জন্য কন্যাশ্রী তৈরী করা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করবেন তাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সমস্যা সমাধানের একটা পথ যেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার করে দেন এটাই তাঁদের আবেদন । আর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবীর কুমার ঘোষ ফোনে এদিন জানান বোর্ডের কাছে কাগজ পত্র জমা হওয়ার পরই বিষয়টি জানা যায়। কিন্তুু বোর্ড এখন এই সব ছাত্রীদের এনরোলমেন্ট ফর্ম ছাড়া মাধ্যমিকে বসতে দিতে চাইছে না। নতুন করে এনরোলমেন্ট ফর্মও নিতে রাজী নয় বোর্ড। এক প্রকার তার স্কুলের এই আট ছাত্রী এ বছর আর মাধ্যমিক দিতে পারবেন না বলে তিনি অভিভাবকদের জানিয়েও দিয়েছেন। তবে তিনিও হাল ছাড়ছেন না। বরং বোর্ড ছেড়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে সমস্যা সমাধানের জন্য চিঠি দেবেন তিনি দাবি তাঁর।
RAJARSHI Roy
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।