মৃতদেহ দাহ থেকে অন্য কাজ, রাজ্যের এই শ্মশানে একাই একশো টুম্পা!
Last Updated:
South 24 Parganas News: বেশ কয়েকবছর আগে বাবা মারা যাওয়ায় সংসার টানতে শ্মশানের ডোমের দায়িত্ব এসেছে মাধ্যমিক পাশ টুম্পার উপর। বাড়ির বড় মেয়ে টুম্পা।
#বারুইপুর: শ্মশানে ডোমের দায়িত্বে বরাবরই থাকে ছেলেরা। কিন্তু ব্যতিক্রম বারুইপুরের পুরন্দরপুর মহাশ্মশান। এখানে ডোমের দায়িত্বে রয়েছেন একজন মহিলা। মৃতদেহের নাম নথিভুক্ত করা থেকে শুরু করে চুল্লির কাজ সবই করে আসছেন বারুইপুরের টুম্পা দাস। টানা ১৪ ঘণ্টার ডিউটির পর কেউ যদি একটু ভালো বকসিস দেয় তাতেই খুশি তিনি। ডোমের দায়িত্বে ছেলেরাও রয়েছে এই শ্মশানে। কিন্তু সবাই এখানে কাজে চায় টুম্পাকেই। তাঁর কাজে নিষ্ঠার তারিফ শ্মশানযাত্রীদের মুখে মুখে।বারুইপুরের কল্যানপুর পঞ্চায়েতের পুরন্দরপুর জোড়া মন্দিরের কাছেই বাড়ি টুম্পা দাসের। বাবা বাপি দাস পুরন্দরপুর মহাশ্মশানের ডোমের দায়িত্বে ছিলেন।
বেশ কয়েকবছর আগে বাবা মারা যাওয়ায় সংসার টানতে শ্মশানের ডোমের দায়িত্ব এসেছে মাধ্যমিক পাশ টুম্পার উপর। বাড়ির বড় মেয়ে টুম্পা। বাড়িতে রয়েছে ছোট বোন, মা। এই শ্মশানে কাঠের চুল্লি যেমন আছে। তেমনই রয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লি। ২০১৯ এর মার্চ শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেছিলেন বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৫ সাল থেকে টুম্পা শ্মশানে কাঠের চুল্লির কাজের যাবতীয় দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু ২০১৯ সালে বৈদ্যুতিক চুল্লি হওয়ার পর তার দায়িত্ব নিয়েছে টুম্পা। এক হাতে গ্লাভস পড়ে অন্য হাতে কাঠ নিয়ে সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়ে টুম্পা। তিনি বলেন, মৃতদেহ শ্মশানে এলে নাম নথিভুক্ত করা থেকে কাজ শুরু হয়। তারপর মৃতদেহ চুল্লিতে ঢোকানো থেকে শুরু করে মেশিন চালানো, অস্থি নিয়ে আসা সব আমাকেই করতে হয়। সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা ডিউটি। কোনও বিশ্রাম নেই।
advertisement
advertisement
বারুইপুরের শুধু কল্যানপুর পঞ্চায়েত এলাকার লোকজন নয় আশপাশের পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজনও আসে শ্মশানে। এমনকী, বিষ্ণুপুর থেকে মরদেহ নিয়ে শ্মশানযাত্রীরা আসে। তাই ভিড় লেগে থাকে। টুম্পা বলেন, প্রথম দিকে কেমন যেন ভয় লাগত। সারাদিন একের পর এক মৃতদেহ চুল্লিতে ঢোকানো।
advertisement
তারপর কাজ হয়ে গেলে অস্থি তুলে আনা এই সবে শরীর যেন অবশ হয়ে যেত। কিন্তু এখন সব কেটে গিয়েছে। শ্মশানযাত্রীদের ভালোবাসা আর কাজের প্রতি ইচ্ছায় মন থেকে সব ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি। সংসার তো টানতে হবে এই কাজ করেই। আপেক্ষ ঝড়ে পড়ল তাঁর কণ্ঠে। বলেন, কল্যানপুর পঞ্চায়েত থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকার বেতন পাই মাসে। এখনকার যুগে এই বেতনে কী হয়? অনেক শ্মশানযাত্রী বলেন, টুম্পা কোনও দিন খারাপ ব্যবহার করে না। খুব দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করে। সেই জন্য ছেলে ডোম থাকলেও তিনিই হয়ে ওঠে ভরসা।
advertisement
---সুমন সাহা
view commentsLocation :
First Published :
August 17, 2022 7:29 PM IST
