Siliguri News: রাজবংশীদের দুর্গা পুজো, তান্ত্রিক মতে পুজো শতাব্দী প্রাচীন দেবী মালডাঙ্গীর!
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
শতাব্দী প্রাচীন মালডাঙ্গীর মেলা এবার ১১৫ বছরে পদার্পন করলো। সেই সময়কার বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের বর্তমান উত্তর একটিয়াশালের দেবী দশভূজা পুজোর প্রচলন করেন স্থানীয় রাজবংশী সমাজের রসকান্ত রায়, কান্তালাল মালিরা।
#শিলিগুড়ি : শতাব্দী প্রাচীন মালডাঙ্গীর মেলা এবার ১১৫ বছরে পদার্পন করলো। সেই সময়কার বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের বর্তমান উত্তর একটিয়াশালের দেবী দশভূজা পুজোর প্রচলন করেন স্থানীয় রাজবংশী সমাজের রসকান্ত রায়, কান্তালাল মালিরা। আজও পুরনো রীতি মেনেই লক্ষ্মী পূজার পরের দিন তান্ত্রিক মতে হয় দুর্গা মায়ের আরাধনা। তার পাশে মেলাও বসে।মালডাঙ্গীর মেলা বলেই খ্যাত এই পীঠস্থানটি ।'মালডাঙ্গী' কথাটি রাজবংশী শব্দ। সেই সময় কাঠের গুড়িকে বোঝাতে 'মাল' বলা হত। জঙ্গলের ঐ কাঠের গুড়ি বা মালগুলোকে উঁচু বা 'ডাঙ্গা' জায়গায় এনে রাখা হত। সেই থাকেই 'মালডাঙ্গী' শব্দের উৎপত্তি।
কেন পুজো শুরু হয়?
সেসময় জঙ্গলের বিভিন্ন ক্ষিপ্ত পশু বা জানোয়ারদের আক্রমনের থেকে রক্ষা পেতে রসকান্ত,কান্তিলালেরা সেই সময় মায়ের আরধানা শুরু করেন। কথিত আছে যে, কান্তিলাল মালি নিজের হাতে দেবী দূর্গার প্রতিমা বানিয়েছেন। নিজের হাতে প্রতিমা বানিয়ে দেবী দূর্গার কাছে সন্তানলাভের কামনা ও প্রার্থনা করেন তিনি। ঘটনাচক্রে পরের বছরেই তার পুত্র সন্তান লাভ হয়। আর সেই থেকেই সেখানকার স্থানীয় রাজবংশী সমাজের মানুষের মনে দেবী দূর্গা বা মালডাঙ্গী দেবীর "জাগ্রত" এর রূপকথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে যা আজও বিদ্যমান। তারপর থেকে রসকান্ত রায় ও কান্তিলাল মালির বংশধরেরা বংশপরম্পরায় স্থানীয় রাজবংশী মানুষদের সাথে নিয়ে এই পুজো করে আসছেন।
advertisement
advertisement
পুজোর বিশেষত্ব :
এই পুজোর বিশেষত্ব হচ্ছে লক্ষ্মী পূজার পরের দিন বিশেষ তান্ত্রীক মতে দেবী দূর্গার বা মালডাঙ্গী দেবীর পুজো দেওয়া হয়।যেখানে শত শত ভক্তবৃন্দরা নিজের মনকামনা পূরন হবার পর আজও দেবীর উদ্দেশ্য পাঠা বা কবুতর বলি দেন। এতই জাগ্রত এখানকার দেবী 'মালডাঙ্গী'। আজ দেবী মালডাঙ্গী'র বিশেষ পুজো হবার পর এখানে একদিনের জন্য বসেছে মেলা।যেখানে হরেকরকম দোকানপাঠ নিয়ে দোকানদারেরা আসেন। আগে এই মেলা হত হ্যাজাক জ্বলিয়ে।সেই সময় ছিলো না আধুনিক রকমারি লাইটের বাহাদুরি। তখন আমবাড়ি, মাটিগাড়া, রাজগঞ্জ থেকে গরু বা মোষের গাড়িতে করে লোকেরা আসতেন এই পূজা দেখতে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ শিলিগুড়ির এই মন্ডপ যেন জীবনযাত্রার প্রতিবিম্ব! থিমের নাম সংসার
পাশাপাশি এলাকার মেয়ে জামাইয়েরাও বছরের এই সময়ে দেবী মালডাঙ্গীর টানে আসেন নিজ নিজ শ্বশুর বাড়ি। বর্তমান সময়ের পূজার 'মারেয়া' রসকান্ত রায়ের নাতি গনেশ রায় এলাকার লোকজনদের নিয়ে এই পূজার দায়িত্বে আছেন। দুর্জয় রায় জানালেন দুর্গাপুজোর বিজয়া দশমীর পরে ৭ দিন আমরা মাকে এখানেই রাখি। তারপর প্রথম দিন কোজাগরী রূপে লক্ষ্মী মায়ের পূজো হয় এবং পরের দিন তান্ত্রিক মতে পূজো হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত পূজো হয় । এই মেলায় দূরদূরান্ত থেকে অনেকে আসেন। শহরের মধ্যে রাজবংশী ঐতিহ্যকে ধরে রেখে শতবর্ষ দূরে আজও পূজিত হচ্ছেন মা।
advertisement
Anirban Roy
Location :
First Published :
October 10, 2022 7:01 PM IST