পাঁশকুড়া: স্কুলের ছাত্র ধরে রাখতে শিক্ষকেরা ভ্যান টানছেন। মিড ডে মিল বাঁচাতে ভ্যান হাতে পাশের গ্ৰামে অর্থাৎ ৩০০ মিটার দূরে জল আনতে যেতে হচ্ছে শিক্ষকদের। অবাক হচ্ছেন! অবাক হলেও এই ছবি পাঁশকুড়া ব্লকের গোপীমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।স্কুল সূত্রে জানা যায়, গ্রীষ্মের শুরু হতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুলের টিউবওয়েল থেকে জল পড়া। তারপর স্কুলের শিক্ষকরা পাশের বাড়িতে বেশকিছু দিন জল নিচ্ছিল। কিন্তু তারাও জল দিতে আর রাজি হয়নি।
এদিকে প্রসাশনের তরফ থেকে কড়া নির্দেশ কোনো কারণ বসত মিড ডে মিল পরিষেবা বন্ধ করা যাবে না।বাধ্য হয়ে স্কুলের শিক্ষকরা একটি ভ্যান নিয়েই জল আনতে যান পাশের গ্ৰামে। স্কুল থেকে যার দূরত্ব ৩০০ মিটার। স্কুলের প্রার্থনা হওয়ার পরে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জলের ডেগচি, বালতি ও ভ্যান নিয়ে বের হয়ে যান জল আনতে সাথে সঙ্গ দেন মিড ডে মিল রান্না করার সঙ্গে যুক্ত মহিলারা। পাঁশকুড়া উত্তর চক্রের গোপীমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯০১ সালে। বর্তমানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১১৯। ছ’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। জল নিয়ে এলে তবেই শুরু হয় মিড ডে মিল রান্না। রান্না থেকে শুরু করে বাসনপত্র ধোওয়া সবই হয় ওই জলে। মাঝে জলের ঘাটতি পড়লে শিক্ষক মহাশয়দের আবার দৌড়াতে হয় ভ্যান নিয়ে।
স্কুলে জলের হাহাকার দেখে অধিকাংশ অভিভাবক পড়ুয়াদের জল ভর্তি বোতল সাথে দিয়ে পাঠান। এবং টিফিনের সময় পুনরায় আবার জল দিয়ে যান। যদিও একদিকে শিক্ষক মহাশয়দের এই কাজের প্রশংসা করলেও অন্যদিকে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা মনে কাজ করছে এভাবে কতদিন স্কুল চলবে। স্কুলের পানীয় জলের সমস্যায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠাতে তাদের ভয় হয়। তাদের দাবি দ্রুত এই জলের সমস্যার সমাধান হোক। জলের সমস্যা নিয়ে গত ১৩ মার্চ পাঁশকুড়া ব্লকের বিডিও ও পাঁশকুড়া ব্লকের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গোপিমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা। যদিও এই নিয়ে পাশকুড়া ব্লকের বিডিও ধেনধূপ ভুটিয়া ফোনে জানান হলে তিনি বলেন -"জলের সমস্যা রয়েছে সেটা জানি তবে শিক্ষক মশাইরা যে ভ্যান হাতে নিয়ে জল আনছেন সেটা আমার জানা নেই। বিষয়টি যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় সে ব্যবস্থা করা হবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।'
Saikat Shee
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Midnapur news, School, Teacher