#নয়াদিল্লি: স্থলভাগের তুলনায় সাগরে জীববৈচিত্র্য অনেক বেশি। সেখানে রয়েছে বহু অদ্ভুত প্রাণী, যাদের কথা আমরা প্রায় জানিই না। এদেরই একজন ‘সি ড্রাগন’ (Sea Dragon)। এই প্রাণীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য বিজ্ঞানীদেরও অবাক করে দেয়।
এর শরীরের কিছু অংশ পাতার মতো দেখতে। আবার মুখের আকার আকৃতি অদ্ভুত। এদের শরীরে দাঁত ও পাঁজরের অস্তিত্বই নেই। কেন এমন অদ্ভুত শারীরিক গঠন এই প্রাণীর, তা খুঁজতেই গবেষণা চালান একদল বিজ্ঞানী। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে জিন তত্ত্বের কথা। সমুদ্র-ড্রাগনের জিনগত গঠনের কারণেই এমন ধারা। জানা গিয়েছে, DNA-এর গঠন একটু ভিন্ন প্রকৃতির। এমন কিছু জিন সি-ড্রাগনের শরীরে অনুপস্থিত যা অন্য জীবের দাঁত, স্নায়ুতন্ত্র এবং মুখাবয়ব গঠনে সাহায্য করে। সম্ভবত সে সব জিন ক্রমশ বিলুপ্ত হয়েছে।
সমুদ্র ড্রাগনের জিনোম পরীক্ষা করে তাদের উদ্ভব সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। মেরুদণ্ডী এই প্রাণীটি ‘সিংনাথাইড’ (Syngnathidae) পরিবারভুক্ত। এই একই পরিবারের সদস্য হল পাইপফিশ (Pipefish) এবং সিহর্স বা সিন্ধুঘোটক (Sea Horse)। Syngnathidae এমন জীব পরিবার, যার পুরুষ প্রজাতিরও গর্ভধারণের ক্ষমতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের এ কী রূপ! কন্যাসমা ছাত্রীর সঙ্গে যা করলেন, ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা
সি ড্রাগন নামের এই প্রাণীটি আরও অনেক কারণেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এটি বিরলের মধ্যে বিরল একটি মাছ (Oddball Fish) বলে ধরা হয়। পরীক্ষা করে দেখার জন্য গবেষকরা ‘লিফি সি ড্রাগন’ (Leafy Sea Dragon) এবং ‘সাধারণ সমুদ্র ড্রাগন’ (Weedy Sea Dragon) নামক দু’টি প্রজাতির জিনোম সিকোয়েন্সিং করে দেখেন। এই দুই প্রজাতিই অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ উপকূলে পাওয়া যায়। পাতাযুক্ত সামুদ্রিক ড্রাগনগুলি ছল করে নিজেদের লুকিয়ে ফেলতে পারদর্শী। অসম্ভব পাতলা এই প্রাণীকে খুঁজে পাওয়াই বেশ শক্ত কাজ। এদের তৃতীয় প্রজাতিটির নাম ‘রুবি সি ড্রাগন’। ২০১৭ সালে প্রথম এটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: রেকর্ড-রেকর্ড-রেকর্ড! শুরু হতেই তাক লাগিয়ে দিল পদ্মা সেতু! কী হল জানেন?
রুবি সি ড্রাগনের শরীরে পাতার মতো আকার নেই। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় ৫ কোটি বছর আগে আগে সিন্ধু ঘোটক প্রজাতির থেকে নিজেদের আলদা করে ফেলে এই সি-ড্রাগনরা। তখন থেকেই ক্রমাগত বিবর্তিত হচ্ছে তারা।
পাইপফিশ এবং সিন্ধু ঘোটকের সঙ্গে তুলনা করে গবেষকরা দেখেছেন সি ড্রাগনের শরীরে রয়েছে প্রচুর সংখ্যক Transposons (ক্রোমোজোমের একটি ভাগ) যা জাম্পিং জিন নামে পরিচিত। দ্রুত কিছু জিনগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বিকাশ লাভ করেছে আজকের সি ড্রাগন। লিফি এবং উইডি সি ড্রাগনের দাঁত, এমনকি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র নেই। কারণ সেই জিনই নেই ওদের।
লম্বা মুখ, ঝালরযুক্ত গঠন কোথা থেকে এল তা হয়তো জানা যাবে এই জিন পরীক্ষার মধ্যে দিয়েই। কিন্তু সে জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। উইডি সি ড্রাগনের শরীরে হাই-রেজোলিউশন এক্স-রে স্ক্যানিং করে গবেষকরা বুঝেছেন, তাদের শরীরের মেরুদণ্ডই বিবর্তিত হয়ে ঝালরে পর্যবসিত হয়েছে। সি ড্রাগনের হাড়ের গঠনও মাছের পাখনার থেকে অনেক আলাদা। এ গুলি আসলে কোলাজেনাস টিস্যুর মূল শক্ত হয়ে তৈরি হয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Creature, Viral News