আদিবাসী সম্প্রদায় কীভাবে সাপ তাড়ায় জানেন? এই ৩ পদ্ধতি বিষধরের ক্ষতি না করেই বজায় রাখে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
সাপ যে বাস্তুতন্ত্রেরই এক অংশ, এ কথা তাঁরা ভুলে যান না। ফলে, হত্যা করেন না সাপ দেখলেই! বরং, তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এমন কিছু উপায় অবলম্বন করেন যাতে উভয় পক্ষই সুরক্ষিত থাকে।
Report: SHASHIKANT KUMAR OJHA
বলা হয় বটে অহি-নকুল সম্পর্ক! তবে, অহি-মানুষ সম্পর্ক বললেও বড় একটা ভুল বোধ হয় না। বেজি যেমন সাপ দেখলেই তাকে মারতে চেষ্টা করে, মানুষও তেমনটাই করে। সাপের বিষ মানুষের জীবনহানির কারণ হয়ে উঠতে পারে, সেই কারণেই একেবারে হত্যা করে নিশ্চিন্ত হওয়া! কিন্তু, এটাও ভুলে গেলে চলবে না যে নিতান্ত বাধ্য না হলে সাপ যেমন মানুষের বসতির ধারেকাছে আসে না, তেমনই বিপদ না বুঝলে দংশনও করে না। আমরা শহুরে মানুষেরা এ কথা ভুলে যাই, সাপ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। কিন্তু প্রকৃতির মাঝে যাঁদের বাস, সেই আদিবাসী সম্প্রদায়ে সাপের সঙ্গে ঘর করা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। সাপ যে বাস্তুতন্ত্রেরই এক অংশ, এ কথা তাঁরা ভুলে যান না। ফলে, হত্যা করেন না সাপ দেখলেই! বরং, তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এমন কিছু উপায় অবলম্বন করেন যাতে উভয় পক্ষই সুরক্ষিত থাকে।
advertisement
advertisement
সেই বিষয়েই এবার আমাদের জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের পালামৌয়ের চেরো আদিবাসী সম্প্রদায়ের এক সদস্য। উমেশ সিং বলেছেন যে তাঁর সম্প্রদায়ে বাড়ির বাইরে ঘোড়বচ গাছ লাগানোর একটি ঐতিহ্য রয়েছে। ঘোড়বচ এমন এক ধরনের উদ্ভিদ যার গন্ধ সাপকে ঘরে ঢুকতে বাধা দেয়। উপজাতি সমাজ বিশ্বাস করে যে এই গাছটি সাপের জন্য এক ধরনের লক্ষ্মণরেখা হিসাবে কাজ করে। ঘোড়বচ গাছটি ছোট গুল্মাকৃতির উদ্ভিদ, এটি বাড়ির চারপাশে লাগালে তা বেড়ার মতো সাপের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি কার্যকর উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়।
advertisement
রয়েছে অভিনব মহুয়া পিঠের ব্যবহারও। মহুয়ার তেল বের করে নেওয়ার পর যে ছড়া পড়ে থাকে, উমেশ সিং বলছেন যে তাঁরা তাকে খলি বা মহুয়ার পিঠে বলেন। সাপ যদি ঘোড়বচের বাধা পেরিয়ে ঘরে কোনও ক্রমে ঢুকেও পড়ে, তাহলেও চিন্তার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয় এই মহুয়ার পিঠে। তাতে আগুন ধরিয়ে দিলে যে কটু গন্ধের ধোঁয়া বের হয়, সাপ তা সহ্য করতে পারে না, সঙ্গে সঙ্গে সেই জায়গা ছেড়ে চলে যায়।
advertisement
ঝাড়খণ্ডের পালামৌয়ের চেরো আদিবাসী সম্প্রদায়ের আরেক সদস্য অর্জুন সিং ঈশ্বরমূল নামে আরেকটি উদ্ভিদের কথা জানিয়েছেন, যা ঘোড়বচের মতোই সাপ থেকে সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই গাছটি জঙ্গলে পাওয়া যায় এবং এটি বাড়ির চারপাশে লাগালে সাপের প্রবেশের সম্ভাবনা কমে যায়। তবে ঈশ্বরমূল শুধু সাপকে বাড়ি থেকে দূরে রাখতেই সহায়ক নয়, এটি সাপের কামড়ের ক্ষেত্রেও কার্যকর প্রতিষেধক বলে বিবেচিত হয়। অর্জুন সিং বলেছেন যে যদি কোনও ব্যক্তিকে সাপে কামড়ায় তবে ঈশ্বরমূল পাতার রস ক্ষতস্থানে দেওয়া হয়। এই রস ১০ মিনিটের মধ্যে সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম, এমনটাই বিশ্বাস প্রচলিত উপজাতীয় সমাজে।
view commentsLocation :
Jharkhand
First Published :
October 25, 2024 9:49 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
আদিবাসী সম্প্রদায় কীভাবে সাপ তাড়ায় জানেন? এই ৩ পদ্ধতি বিষধরের ক্ষতি না করেই বজায় রাখে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য