মহামায়া সব দেবতাদের আরাধ্যা। দেবীর পুজোর হাজার বিধি। পুজোর চারদিন মহাস্নানে লাগে সপ্তনদীর জল থেকে শিশিরকণা-সবই। এমনকি লাগে বেশ্যাদ্বারের মাটিও, শোনা যায় এমনটাই। কিন্তু কতদূর সত্য এই তত্ত্ব? কী বলছে পুরাণ?
সনাতনশাস্ত্র এবং প্রাচীণ ভারতের ইতিহাসে চোখ রেখে বেশ্যা শব্দটির অর্থ অনুসন্ধান করলে বিষয়টা অনেকটা অনুধাবন করা যাবে। প্রাচীণ ভারতে বেশ্যা মানে সাধারণ রূপোপজীবীনী নন, তাঁর কাজও শুধু দেহসম্ভোগের পরিষেবা বিতরণ নয়। তিনি আলোকসামান্যা, চৌষট্টিকলায় পারঙ্গম এক নারী, যার দ্বারে সম্ভ্রমে পা রাখেন রাজাও। এমনকি নানাপাঠ নিতে তার কাছে সময় সময়ে রাজপরিবারের সন্তানরা এসেছে এমনও দেখা গিয়েছে। সে কুলটা নয়, পরশ্রীকাতর নয়, নিজগুণে এক অসামান্যা নারী। ভাষা, অস্ত্র, শাস্ত্র শিক্ষায় তিনি পুরুষকে টক্কর দিতে সক্ষম।
তবে যুগভেদে বেশ্যার শ্রেণিরও ফারাক ঘটেছে। যেমন কোথাও নগরের বেশ্যাকে নাগরী বলা হয়েছে, কোথাও আবার রাজার অনুগ্রহ প্রাপ্ত বেশ্যা রাজবেশ্যা নামে পরিচিত। ব্রহ্মবেশ্যা বা দেববেশ্যা তো তীর্থস্থানেই থাকতেন। এদের অংশগ্রহণ ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ।
আরেকটি ব্যাপারও প্রণিধানযোগ্য. কামাখ্যাতন্ত্র ভৈরবী, কালী, তারাকেও বেশ্যা বলেছে। বেশ্যা শব্দের অর্থ যিনি যেমন খুশি সাজতে পারেন। বলা হয়, সর্বসিদ্ধি প্রদা বেশ্যা কালীকা রূপধিরিনী। কাজেই পুজোয় বেশ্যাদ্বারের মাটি লাগে এমন তত্ত্ব কী ভাবে চালু হল সহজেই অনুমেয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।