হরপ্পার অধিবাসীরা কী খেত, কেমন ভাবে রান্না করত উঠে এল তথ্য!
- Published by:Arka Deb
- news18 bangla
Last Updated:
সম্প্রতি এই শেষ বিষয়টি অর্থাৎ হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে এক তথ্যে সিলমোহর দিল ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজের রাসায়নিক পরীক্ষা। নিশ্চিত করে বলল সেই পরীক্ষা- হরপ্পার অধিবাসীরা মাংসভক্ষণে বেশ ভালো মতোই অভ্যস্ত ছিল!
১৯২২ সালে প্রথম বিশ্বের কাছে সিন্ধু সভ্যতার (Indus Valley Civilisation) এই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পীঠ হরপ্পার (Harappa) প্রত্নরূপটি তুলে ধররেন রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (Rakhaldas Bandyopadhyay)। তার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হরপ্পা এবং তার সভ্যতা নিয়ে অনেক গবেষণাই হয়েছে। ধীরে ধীরে কিছুটা হলেও জানতে পেরেছি আমরা- কেমন ভাবে থাকত সেই সভ্যতার মানুষ, কী পরত তারা, কী-ই বা খেত! সম্প্রতি এই শেষ বিষয়টি অর্থাৎ হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে এক তথ্যে সিলমোহর দিল ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজের রাসায়নিক পরীক্ষা। নিশ্চিত করে বলল সেই পরীক্ষা- হরপ্পার অধিবাসীরা মাংসভক্ষণে বেশ ভালো মতোই অভ্যস্ত ছিল!
সত্যি বলতে কী, আমিষ ভক্ষণের রীতি মানুষের সভ্যতায় নতুন কিছু নয়। সুদূর আদিমকাল থেকে শিকারের মাধ্যমে খাবার সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে মানুষ এবং অন্য মাংসাশী প্রাণীর কোনও প্রভেদ নেই। কিন্তু হরপ্পার (Harappan Civilisation) এই তথ্য উদ্ধারের গুরুত্ব অন্য জায়গায়। কোনও ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে পরীক্ষা চললে সাধারণত তা পূর্বে অনুমান করে নেওয়া হয়েছে, এমন বিষয়ের উপরেই চলে। সে দিক থেকে দেখলে এই আবিষ্কার কেবল পূর্বের অনুমানিত তথ্যের প্রমাণ মাত্র!
advertisement
খবর বলছে যে বর্তমান সময়ের হরিয়ানা (Haryana) এবং উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) থেকে এই সভ্যতার যে মৃৎপাত্র আবহিষ্কার করা হয়েছিল, সেগুলোর গায়ে কিছু মেদ অবশেষ আবিষ্কার করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এর পর তাঁরা ল্যাবরেটরিতে ওই মেদ (Fat) অবশেষের ফরেনসিক পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় দেখা যায় যে সেগুলো এসেছে রান্না করা মাংস থেকে।
advertisement
এ বিষয়ে যে সমীক্ষাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে কেমব্রিজের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তরফে, তার প্রধান লেখক অক্ষয়িতা সূর্যনারায়ণ বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে। তিনি বলছেন যে মেদ অবশেষ পরীক্ষা করে হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা কেমন মাংস খেত, তার একটা ধারণা পাওয়া গিয়েছে। সেই তালিকায় গাভী, বৃষ, শূকর, মেষ, ছাগের মতো পশুরা রয়েছে সিংহভাগ জুড়ে।
advertisement
সূর্যনারায়ণ এ প্রসঙ্গে বলেছেন যে আদুনিক যুগে যে ভাবে তেল দিয়ে রান্না করা হয়, হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরাও সে ভাবেই রান্না করতেন। মেদ অবশেষের ধরন সেই প্রমাণ দিয়েছে। কখনও তেল দিয়ে শুধু মাংসই রান্না করা হত, কখনও বা আবার নানা শস্য আর সবজির সঙ্গে মিশিয়ে একত্রেও মাংস রান্না করত হরপ্পা সভ্যতার মানুষ, দাবি করেছেন তিনি।
advertisement
পাশাপাশি তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন এই সভ্যতার মানুষের রন্ধনশৈলীর উপরেও। জানিয়েছেন যে গ্রাম আর শহরের জীবনযাত্রার পার্থক্য সেই সময়েও ছিল। গ্রামের অধিবাসীরা নাগরিকদের মতো ধাতুর তৈরি পাত্র ব্যবহার করতেন না। তবে রন্ধনশৈলীর অনেকটাই এক ছিল গ্রামের আর শহরের জীবনে, সে কথা বলতে ভোলেননি সূর্যনারায়ণ।
Written By: Anirban Chaudhury
Location :
First Published :
December 13, 2020 12:44 AM IST