বয়স মাত্র দশ, গাইডের কাজ করেই প্রকৃতি বাঁচাতে নেমেছে পাহাড়ের সৌরভ

Last Updated:

গাইডের কাজ করে পরিবেশ রক্ষার কাজ করে চলছে বছর দশেকের পুষ্প থুড়ি সৌরভ রাজ | 

#কলকাতা: বায়স্কোপে পুরো চন্দন গাছের জঙ্গল কেটে রাতারাতি হিরো হয়ে গিয়েছিলো 'পুষ্পা রাজ' প্রকৃতিকে ধ্বংস করে সবার মন জয় করে নিয়েছিল পুস্পা৷ আজ আপনাদের যার গল্প শোনাবো, যার নামের শেষ অংশটিও " রাজ "৷  প্রকৃতির কাছে সব সময় মাথা ঝুঁকিয়েই থাকে ৷  দশ বছরের "রাজ" কিন্তু এলাকায় পরিচিত প্রকৃতিকে বাঁচানোর লড়াই করে | আর এই লড়াইয়ে তার সঙ্গী ছয় বন্ধু৷
এই ছয় সঙ্গীর সাহায্যে দার্জিলিঙের নামচি পোখরির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সৌরভ রাজ  প্রকৃতির পুষ্প হয়ে উঠেছে | দার্জিলিঙের " সিটং " ঘুরতে গেলে আপনাকে যেতে হবে " নামচি  পোখরি " এলাকায় ৷ নামচি অর্থাৎ নিচু এলাকা আর পোখরি মানে পুকুর৷ আর এই পোখরিকে ঘিরে রয়েছে সুন্দর গাছগাছাড়ি৷ সেখানে গেলেই শুনতে পাবেন পাহাড়ি পাখীদের কলরব৷ রয়েছে সুন্দর একটি প্রাচীন শিব মন্দির ৷ রয়েছে বিশাল এটি প্রয়োজনীয় জঙ্গল ৷
advertisement
ইদানিং কালে এই এলাকাটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে যাওয়ায় মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে অনেকটাই ৷ আর মানুষ যেখানে সেখানেই দূষণের হাতছানি | মানুষের ব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে শুরু করে যাবতীয় আবর্জনা ক্রমশ দূষিত করছে এলাকাকে৷ যার জেরে একসময় ময়ুরের দল যারা এই প্রকৃতির বুকে ঘুরে বেড়াতো তারাও আজ আতঙ্কে এমুখো হতে চায়না৷ ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে পাখিদের কলরব | কিন্তু চোখের সামনে সব শেষ হয়ে যাবে ? কিছু করা যাবে না !
advertisement
advertisement
এই সব চিন্তাই কুড়ে কু়ড়ে  খাচ্ছিলো " নামচি পোখরির " ছোট্ট সৌরভ রাজকে৷ ছোট্ট সৌরভ ঠিক করে এলাকার তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে শুরু করবে প্রকৃতি বাঁচানোর লড়াই ৷ কিন্তু ছোট্ট হাতে এতো কাজ, মাথায় হাত সৌরভ রাজের ৷ আর বন্ধুরাও বলে এতো কাজ করে কি লাভ তাদের৷ হত দরিদ্র বন্ধুদের কথা মাথায় আসে ছোট্ট সৌরভের ৷ সে ঠিক করে সপ্তাহে একদিন সে এলাকা পরিষ্কার করবে, সভ্য মানুষের ফেলে যাওয়া আবর্জনা কুড়িয়ে এলাকা কে দূষণ মুক্ত করবে৷
advertisement
কাজটা অবশ্য সহজ ছিল না৷ কারণ সৌরভের বন্ধুরা পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণেই এই বয়স থেকেই উপার্জনের চেষ্টায় নেমে পড়েছে৷ তাই  বন্ধুদের অর্থ লাভের দিশা দেখিয়ে কাজ শুরু করে সৌরভ রাজ ৷ বাবার রয়েছে ছোট্ট মুদিখানার দোকান ৷ সেই টাকায় কোনও রকমে চলে সংসার৷ কারণ এলাকায় পরিবার মানে হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার৷  ফলে বাড়ি থেকে যে সে কোনও অর্থ সাহায্য পাবে না সৌরভ রাজ তা জানতো ৷ তাই সে ঠিক করে গাইডের কাজ করে সে পর্যটকদের কাছ থেকে রোজগার করেই সে শুরু করবে প্রকৃতি বাঁচানোর লড়াই ৷
advertisement
প্রতি পর্যটকদের দল প্রতি তার চাহিদা ১০০ টাকা৷ কেউ দেয় আর কেউ দেয় না৷ তাতে কি, কেউ না দিলেও স্কুলের পর বা ছুটির দিনে এলাকার বিভিন্ন স্থান তার ইতিহাস, প্রয়োজনীয়তা সবই সরল ভাবে উপস্থাপনা করে চলে শিশুটি ৷ ইংরেজি ও হিন্দিতে পটু হলেও আধো বাংলায় সে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে৷ ছোট্ট সৌরভকে দেখলেই আপনার হয়তো প্রথমে তাকে আদর করতে ইচ্ছে করবে৷ অনেকেই খুদে গাইডের নরম গাল টিপে দিচ্ছেন৷
advertisement
গাইডের কাজ করে যৎসামান্য উপার্জিত অর্থ ভাগ করে দেয় নিজের সঙ্গীদের, কিছুটা বেশি অর্থ উপার্জন হলে সে তাঁর পড়াশোনার পিছনে তা ব্যয় করে ৷  পর্যটকদের দল দেখলেই সে ছুটে গিয়ে বলে, " ম্যায় সৌরভ রাজ, ম্যায় আপ লোগোকো ইহা পুরা ইলাকা ঘুমকে দিখায়েঙ্গে " মেরেকো সব মালুম ৷''
এর পর পাহাড়ের চড়াই উৎরোই পথ ধরে এগিয়ে যাওয়া আর এলাকা সম্বন্ধে অনর্গল তথ্য পেশ, কখনও হিন্দি, কখনও ইংরেজি | ঘোরাঘুরির শেষে কেউ খুশি বেশি টাকা দিতে গেলেও অবশ্য সৌরভ নেয় না৷
advertisement
প্রকৃতি চুরি করা " রাজ্ " মানে পুষ্পা রাজ কারোর কাছে মাথা নতো না করলেও প্রকৃতিকে বাঁচাতে নামচি পোখরির সৌরভ রাজ্ কিছু সবসময় মাথা নিচু করেই থাকে ৷  নিশ্চিত করে বলা যায়, এখানে এলে  আপনার সামনে সৌরভ না এলেও, পারলে একবার খোঁজ করে নেবেন সৌরভের, দেখা মিললেসাক্ষাৎ দেব দর্শন করবেন৷
কেউ ১০ টাকার চিপস বা ঠান্ডা পানীয় খেয়ে সেই প্লাস্টিক ফেলে আসতেই পারেন, কিন্তু পর্যটকরা চলে যাওয়ার পরেই সেখানে হাজির হয়ে যাবে নামচি পোখরির শিশু সৌরভ রাজ৷ না আপনাকে চমকাবে বা ধমকাবে, শুধু একটি মিষ্টি হেসে সে নিমেষেই পরিষ্কার করে দেবে এলাকা ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/উত্তরবঙ্গ/
বয়স মাত্র দশ, গাইডের কাজ করেই প্রকৃতি বাঁচাতে নেমেছে পাহাড়ের সৌরভ
Next Article
advertisement
২০১৬-এর ১৮০৬ জনের তালিকায় 'দাগিদের' পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করল SSC, কোথায় দেখা যাবে তালিকা?
২০১৬-এর ১৮০৬ জনের তালিকায় 'দাগিদের' পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করল SSC, কোথায় দেখা যাবে?
  • ২০১৬-এর নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগের 'অযোগ্যদের' চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল কমিশন! আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেইমতো আজ বৃহস্পতিবার, আদালতের নির্দেশ মেনেই ১৮০৬ জনের 'দাগি' যাঁরা তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন

VIEW MORE
advertisement
advertisement