সেবক দেবশর্মা, মালদহ: তৈরির পর বছর ঘোরার আগেই বসে গিয়েছে রাস্তা। গ্রামের রাস্তায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রাস্তা তৈরিতে ব্যাপক দুর্নীতি মালদহের মানিকচকে। ভেঙে বসে যাওয়া রাস্তা অবিলম্বে সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর। একইসঙ্গে উঠেছে তদন্তের দাবি।
মালদহের মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে চৌকী পঞ্চায়েতের বাঙালচক এলাকায় সাড়ে ৭০০ মিটার কংক্রিট ঢালাই রাস্তা তৈরি হয় বছরখানেক আগে। এই কাজে খরচ দেখানো হয় ২৫ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। ১০০ দিনের কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে রাস্তা তৈরির কাজ হয়। কিন্তু, ওই রাস্তার কাজ এতটাই নিম্নমানের হয়েছে যে গ্রামবাসীদের অভিযোগ অনুযায়ী কাজ শেষের চার মাসের মধ্যেই রাস্তার নিচের মাটি ধসে গিয়েছে। বসে গিয়েছে অন্তত ২০ থেকে ২৫ মিটার রাস্তা।
গত বর্ষার সময় জলস্রোত বেশি হতেই রাস্তার একাংশ ভেসে যায়। জায়গায় জায়গায় দেখা যায় ফাটল। ক্রমেই ওই ফাটল তীব্র হয়ে ভেঙেচুরে পড়েছে রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন হাজারের বেশি মানুষ। গন্তব্যে পৌঁছতে চরম সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের ছেলে মেয়েরাও। গ্রামের রাস্তা ধসে যাওয়ার কথা ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতিকে জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একেই নিম্নমানের কাজ, তারওপর সংস্কারে প্রশাসনিক উদাসীনতায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকার মানুষ।
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল লিখলেন অ, আ... বললেন ‘জয় বাংলা'! হাতেখড়িতে কাকে দিলেন গুরুদক্ষিণা? রাজভবনের ইতিহাসে 'ব্যতিক্রমী' ছবিবাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামে যোগাযোগের মাধ্যম বলতে এই একটিমাত্র রাস্তা। ছোট ছোট পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে হলে এই রাস্তার উপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। আপাতত ভাঙা রাস্তার পাশে নিচু জমি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কিন্তু, বর্ষা এলে তাও অসম্ভব হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, রাস্তা ভাঙা থাকার কারণে গ্রামে কোনও অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছয় না। কেউ অসুস্থ হলে বা প্রসুতি মায়েদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হলে কার্যত খাটিয়ায় করে নিয়ে যেতে হয়।
গ্রামবাসীদের দাবি, রাস্তা তৈরির সময় কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ৬ ইঞ্চি ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও একাধিক জায়গায় কোথাও দুই ইঞ্চি, কোথাও তিন ইঞ্চি ঢালাই দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার কাজের আগে ঠিকঠাক মাটিভরা বা শক্তপোক্ত করার কাজ হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ভেঙে পড়ার পর সাত মাস কেটে গেলেও রাস্তার সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। এই অবস্থায় নিম্নমানের কাজের তদন্তের দাবিতে সরব গ্রামবাসীরা।
মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ অবশ্যই জানিয়েছে, ওই রাস্তার সমস্যার বিষয়টি নজরে আছে। আপাতত ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প বন্ধ। তাই, দ্রুত সংস্কার সম্ভব হয়নি। বর্ষার আগেই ওই রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি নির্মাণ কাজে কোনওরকম দুর্নীতি ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Damage, North bengal news