কলকাতার থেকে কোনও অংশে কম নয়, কার্শিয়ংয়ের দুর্গাপুজোয় বুঁদ বাঙালি! এক নস্টালজিয়া
- Published by:Raima Chakraborty
Last Updated:
অবাঙালিরাও ভিড় জমায়, চলে নাচ, গান আর কব্জি চুবিয়ে খাওয়া-দাওয়া।
#কার্শিয়ং: একটা সময়ে কার্শিয়ং পাহাড়ে প্রচুর বাঙালি বসবাস করতেন। পাহাড়ে বাঙালিদের সংস্কৃতির পীঠস্থান ছিল এই কার্শিয়ং। সেই থেকেই বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের গড়ে ওঠা। পাহাড়ে এসে বাংলার প্রথম রাজ্যপাল প্রয়াত হরেন্দ্র কুমার মুখোপাধ্যায় এই সংগঠন গড়ে তোলেন বলে জানা যায়। ১৯১৫ সাল থেকে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দূর্গাপুজা হয়ে আসছে পাহাড়ে।
কখনও তিনধরিয়ায়, আবার কখোনও কার্শিয়ং স্টেশনে পুজো হত। তিনধারিয়া থেকে বিসর্জনের সময়ে টয়ট্রেনে কার্শিয়ং স্টেশন পর্যন্ত আনা হত প্রতিমা। তারপর সংস্কৃতির চর্চার জন্যে তৈরি করা হয় হল ঘর। ট্রাস্টিবোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত শশীভূষণ দে হল ঘরটি তুলে দেন অ্যাসোসিয়েশনের হাতে। নাম রাখা হয় রাজ রাজেশ্বরী হল। সেটা ১৯৩০ সাল। সেই থেকেই এই হলঘরেই পুজা করে আসছেন কার্শিয়ংয়ের বাঙালিরা।
advertisement
আরও পড়ুন: দেড় বছরের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে আটক মা ও সৎ বাবা
কে আসেননি এই হলঘরে? এখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী থেকে শুরু করে বিধানচন্দ্র রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, ভিভি গিরি, পিসি সরকার (সিনিয়র), শরৎ বসু, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখেরা পা ফেলেছেন বিভিন্ন সময়ে।এবারে শারোদৎসব পা ফেলছে ১০৬ বর্ষে। প্যাণ্ডেলের থিম নেই ঠিকই। কিন্তু পুজায় একটা প্রাণ আছে। আছে পুজাকে ঘিরে উন্মাদনা, উৎসবের মেজাজ। বছরভর শরতের অপেক্ষায় প্রহর গোনে এখানকার বাঙালিরা। দিন দিন সংখ্যাটা কমছে। তবে উৎসাহে ঘাটতি নেই। সুর কাটে ২০১৭-তে। পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবীতে আন্দোলনের সময়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাঙালিদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্মারক এই রাজ রাজেশ্বরী হলে। পুজোর মুখে দুশ্চিন্তায় পড়েন উদ্যোক্তারা।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: খেলতে গিয়ে নর্দমায় পড়ে নিখোঁজ শিশুকন্যা, আর খুঁজেই পাওয়া গেল না!
ওই বছর নমো নমো করে পুজো সারেন তাঁরা। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে নতুন করে তৈরী করা হয় এই ভবন। এই পুজো পাহাড়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে মিলনমেলা! নেপালি, বিহারি, বাঙালি-সহ অন্য সম্প্রদায়ের, ভিন্ন ধর্মের লোকেদের একসুঁতোয় বেঁধে দেয়। পঞ্চমীর সন্ধ্যেয় প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছনর পর থেকেই উৎসবের শুরু। প্রতিদিনই কোনো না কোনো সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শঙখধ্বনি, উলুধ্বনি থেকে শুরু করে বসে আঁকো, নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় সকলে।
advertisement
অষ্টমী থেকে খাওয়া-দাওয়া। নবমীতে হাজারে দেড়েক লোকের খিচুরি ভোগের আয়োজন। দশমীতে সিঁদুর খেলাতেও মেতে ওঠেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মহিলার। তারপর দেবীর বিসর্জন শেষে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন। পুজোর জন্যে চাঁদাও তোলা হয়। এগিয়ে আসেন সকলেই। পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওনা। পাহাড়ে বেড়াতে এসে বাঙালিদের সেরা পার্বনে আনন্দে মেতে ওঠেন পর্যটকেরাও। আবার এই পুজোর সময়ে চার দিনের ছুটিতে ফিরে আসেন পাহাড় ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া বাঙালিরাও।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
September 26, 2022 3:12 PM IST