উত্তরে চা নিলাম কেন্দ্র সরানোর পরিকল্পনা, দক্ষিণে অ্যান্ড্রু উইল, শুরু নতুন যুদ্ধ
- Published by:Arka Deb
- news18 bangla
Last Updated:
জলপাইগুড়ি থেকেও সরতে চলেছে চা নিলাম কেন্দ্র, এই সিদ্ধান্তকেও বড় ক্ষতিই মনে করছে রাজ্য।
#কলকাতা: সেল (SAIL) এর পরে এবার অ্যান্ড্রু ইউল কোম্পানি। কলকাতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই সংস্থার সদর দফতর সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারের। যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শিল্প, বাণিজ্য মন্ত্রক ও মন্ত্রীর কাছে চিঠি দিচ্ছেন রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এই সংস্থার সাথে দীর্ঘদিন ধরেই পেশাগত কারণে যুক্ত ছিলেন রাজ্যের বর্তমান শিল্পমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছেন সংস্থার কর্মী ও আধিকারিকরা। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে অ্যান্ড্রু ইউলের কর্মীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে৷ এর পাশাপাশি অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এই সংস্থা যদি রাজ্য থেকে চলে যায় তাহলে শিল্প মানচিত্রে নাম খারাপ হবে রাজ্যের। এদিকে জলপাইগুড়ি থেকেও সরতে চলেছে চা নিলাম কেন্দ্র, এই সিদ্ধান্তকেও বড় ক্ষতিই মনে করছে রাজ্য।
শিল্পমন্ত্রী নিজেও যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে এই সংস্থার উচ্চপদে আসীন ছিলেন তাই একাধিক কর্মী সংগঠন যোগাযোগ করেছে তাঁর সঙ্গেও। রাজ্যের আবেদন, অবিলম্বে কেন্দ্র সরকার এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। কথা বলুক সংস্থার সঙ্গে৷ কেন্দ্রীয় অসহযোগিতার কারণেই এই সংস্থা চলে যাওয়ার অবস্থা বলে মনে করছেন শিল্প মন্ত্রী।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের জন্যেও খারাপ খবর। জলপাইগুড়িতে থাকা রাজ্যের অন্যাতম চা নিলাম কেন্দ্র তুলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ শিল্প মন্ত্রীর। ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিলাম কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর থেকে সমস্যায় ধুঁকছে। দেশের প্রতিটি নিলামকেন্দ্র সচল করার জন্য প্রথম কয়েক বছর বিক্রয় কর ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি ওই সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকেছে বলে অভিযোগ। যে কারণে এখানে চায়ের জোগান কমেছে। নিলাম কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরুতে ৩৫ দিন নিলাম হলেও ২০০৮-২০০৯ সালে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৮ টিতে। চায়ের জোগান কমে যাওয়ায় ২০০৮-২০০৯ সালে নিলাম কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে ফের নিলাম চালু হলেও দুর্যোগ কাটেনি। ২০১৪-২০১৫ সালে মাত্র ১৫ দিন নিলাম হয়েছে। তার পর থেকে ক্রমশ ধুঁকছে এই চা নিলাম কেন্দ্র। সূত্রের খবর, চা পাতার সঙ্কটই নিলাম কেন্দ্রটিকে ধীরে ধীরে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
advertisement
advertisement
২০০৫ সালে নিলাম কেন্দ্রের জন্মলগ্ন থেকেই চা পাতার জোগান নিয়ে বড়সড় সমস্যা শুরু হয়। প্রতি বছর চা পাতার অভাবে একাধিক নিলাম বাতিল হতে থাকে। মাঝে টানা দু’বছর এই কেন্দ্রে একটিও নিলাম হয়নি। ক্রেতারাও মুখ ফিরিয়ে নেয় জলপাইগুড়ির এই কেন্দ্র থেকে।ডুয়ার্সের চায়ের জেলা জলপাইগুড়িতে কেন নিলাম কেন্দ্রে চা আসবে না, তা নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে।
advertisement
চা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির তরফে বেশ কিছু পরিকাঠামো তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। যদিও ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, সেই পরিকাঠামোগুলিও প্রশাসনের তরফে যথাযথ ভাবে এত বছরেও তৈরি করা হয়নি। সেই সঙ্গে জলাপাইগুড়ি কেন্দ্রের থেকে কর ছাড়ের আবেদন জানানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। তাতেও সে অর্থে সাড়া মেলেনি। কর ছাড় মিললে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই সাড়া মিলত বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এই নিলাম কেন্দ্রও তাতে লাভবান হতো। কিন্তু বছরের পর বছর ছাড়ের আবেদন জানিয়েই কেটে গিয়েছে, কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ হয়নি। চা'য়ের নিলাম বন্ধ থাকায়, কেন্দ্রের বিদ্যুতের বিল সহ অনান্য রক্ষণাবেক্ষণের খরচও ওঠে না।
advertisement
তাই পরিচালন কমিটির সদস্যদের অনেকেই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন। রাজ্যের শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "এই নিলাম কেন্দ্র নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিচ্ছি আমি। নিলাম কেন্দ্র তুলে বঞ্চনা করা হচ্ছে আমাদের রাজ্যের সাথে।"
এক সময়ে ভোট এলে জলপাইগুড়িতে চা নিলাম কেন্দ্র নিয়ে ভোটপ্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি-আশ্বাস দিতেন। এবারে ফের ভোটের পরেই জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। যা আটকাতে বদ্ধ পরিকর রাজ্য সরকার।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
June 23, 2021 11:22 PM IST