Waqf Act: দেশ জুড়ে কীভাবে ওয়াকফ আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে? দেখুন বিস্তারিত রিপোর্ট
- Published by:Sanjukta Sarkar
- trending desk
- Reported by:Trending Desk
Last Updated:
Waqf Act: সারা ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে প্রায় ৫২ হাজার সম্পত্তি ছিল। ২০০৯ সালের মধ্যে চার লাখ একরে জুড়ে ৩ লাখ সম্পত্তি নিবন্ধন করা হয়। এরপর বর্তমানে ৮ লাখ একর জমিতে ৮,৭২,২৯২টির বেশি সম্পত্তি নিবন্ধন করিয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। যার অর্থ ওয়াকফ জমি গত ১৩ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে।
নয়াদিল্লি: সংসদে ওয়াকফ আইন পরিবর্তনের জন্য সংশোধনী আনতে চলেছে মোদি সরকার। এই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ইতিমধ্যে ২০১৩ সালে একবার ওয়াকফ আইন সংশোধন করেছিল ইউপিএ সরকার। তার ফলে ব্যক্তিগত সম্পত্তি থেকে শুরু করে সরকারি জমি, মন্দিরের সম্পত্তি, গুরুদ্বারের জমি পর্যন্ত দখল করার অবারিত ক্ষমতা পায় ওয়াকফ বোর্ড।
সংশোধিত আইনে ওয়াকফ বোর্ডের সমস্ত সম্পত্তি জেলা কালেক্টরের কাছে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ৩০টি ওয়াকফ বোর্ড রয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওয়াকফ বোর্ডের কাজকর্মে স্বচ্ছতা এবং সংস্থায় মহিলাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবির প্রেক্ষিতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
মূলত, সারা ভারতে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে প্রায় ৫২ হাজার সম্পত্তি ছিল। ২০০৯ সালের মধ্যে চার লাখ একরে জুড়ে ৩ লাখ সম্পত্তি নিবন্ধন করা হয়। এরপর বর্তমানে ৮ লাখ একর জমিতে ৮,৭২,২৯২টির বেশি সম্পত্তি নিবন্ধন করিয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। যার অর্থ ওয়াকফ জমি গত ১৩ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে।
advertisement
advertisement
ওয়াকফ আইন কী: ‘মুসলিম ওয়াকফ আইন ১৯২৩’ চালু করেছিল ব্রিটিশরা। সেই সময় এই আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা। এরপর মুসলিমদের বাদ দিয়ে শুধু হিন্দুদের জন্য এই আইন চালু হয়। নাম দেওয়া হয় ‘মাদ্রাজ হিন্দু রিলিজিয়াস অ্যান্ড এনডাউমেন্ট অ্যাক্ট ১৯২৫’।
advertisement
স্বাধীন ভারতে ১৯৫৪ সালে প্রথমবার সংসদে ওয়াকফ আইন পাশ হয়। কিন্তু এই আইন বেশিদিন থাকেনি। ১৯৯৫ সালে ফের নতুন করে তৈরি হয় ওয়াকফ আইন। এই আইনে বোর্ডের হাতে বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে এই আইনে সংশোধন করা হয়। তাতে কারও সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়া হয় ওয়াকফ বোর্ডকে। এমনকী এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ করাও যায় না।
advertisement
সহজ কথায়, মুসলিম দাতব্য প্রতিষ্ঠানের নামে যে কোনও সম্পত্তি নিজেদের বলে দাবি করার সীমাহীন ক্ষমতা রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের। দেশের অন্য কোনও ধর্মীয় সংগঠনের এই ক্ষমতা নেই। ওয়াকফ অ্যাক্ট ১৯৯৫-এর ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ওয়াকফ যদি ‘মনে করে’ কোনও জমি তাদের, তাহলে সেটা ওয়াকফের সম্পত্তি। কেন তারা নিজেদের এই জমির মালিক বলে মনে করে, তার কোনও প্রমাণ দেওয়ার দরকার নেই।
advertisement
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, মুসলিম আইন মেনে চলা দেশগুলিতে ‘ওয়াকফ’ বলে কোনও কিছুর অস্তিত্ব নেই। এমন কোনও সংস্থাও সেখানেই তৈরি করা হয় না। কোনও ধর্মীয় সংস্থাকেই এমন সীমাহীন ক্ষমতা দেওয়ার নজিরও নেই। তাছাড়া ওয়াকফ সংস্থা দেশভাগের সময় পাকিস্তান থেকে চলে আসা হিন্দুদের কোনও জমি ফেরত দেয়নি।
ওয়াকফ আইন অপব্যবহারের উদাহরণ:
advertisement
অবিনাশী মামলায়, রাজস্ব রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে দেবেন্দ্রকুলা ভেল্লালা সম্প্রদায়ের ২১৬ জনকে চেইভুরের দেবেন্দ্রন নগরে ৬.৩ একর জমির বিনামূল্যে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সম্পত্তি ওয়াকফের বলে দাবি করা হয়। সেই জমির মালিকানা এখনও স্থির হয়নি। থোটিপালায়মের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে চিঠি দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন ৯৩ জন।
তিরুচিরাপল্লী জেলায় কাবেরি নদীর ধারে অবস্থিত তিরুচেনথুরাই গ্রামের ১৫০০ বছরের পুরনো সুন্দরেশ্বর মন্দিরকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে ওয়াকফ বোর্ড। ওয়াকফের হাত থেকে এখন মন্দিরের মালিকানা আদৌ কোনওদিন পাওয়া যাবে কি না, সেই নিয়ে চিন্তিত গ্রামবাসীরা।
advertisement
সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি রায় দিয়েছে, ব্যবহার করা হয় না এমন কোনও স্থানকে প্রার্থনা বা নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় স্থানের মর্যাদা দেওয়া যাবে না। এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং টাউনশিপ তৈরির জন্য এমনই একটি জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালের এপ্রিলে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টে হারের পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল তেলেঙ্গানা সরকার।
রাজস্থানের ওয়াকফ বোর্ড কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য রাজস্থান সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানায়। রাজস্থান জুড়ে ওয়াকফের ১৮ হাজারের বেশি সম্পত্তি রয়েছে। সেখান থেকে ভাল টাকা আয় হয়। কিন্তু তার পরেও কর্মীদের বেতন দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে সাহায্য চাওয়ার ঘটনা রীতিমতো আশ্চর্যজনক বলে মনে করেন অনেকেই।
তামিলনাড়ুর ১৫০০ বছরের পুরনো মানেন্দিয়াভল্লি চন্দ্রশেখর স্বামী মন্দিরের মালিকানা দাবি করেছে ওয়াকফ বোর্ড। তামিলনাড়ুর তিরুচেনথুরাই গ্রামে এবং তার আশেপাশে মন্দিরের নামে ৩৬৯ একর সম্পত্তি রয়েছে।
২০২১ সালে গুজরাত হাই কোর্টে দেবভূমি দ্বারকার বেট দ্বারকার দুটি দ্বীপের মালিকানা দাবি করে মামলা করেছিল ওয়াকফ বোর্ড। যদিও ক্ষুব্ধ আদালত ওয়াকফ বোর্ডের আবেদন শুনতে রাজি হয়নি।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 05, 2024 1:51 PM IST