যে শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই শ্রদ্ধার-ই মুন্ডু কাটার পর মুখ-টা পুড়িয়ে দিয়েছিল খুনি আফতাব

Last Updated:

যে-সমস্ত পুলিশ আধিকারিকরা জেরা করেছেন, তাঁরাও রীতিমত হতবাক আফতাবের আচরণ দেখে! এরকম ঘৃণ্য-হিংস্র-নৃশংস অপরাধের পরও বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই আফতাবের। রীতিমত আত্মবিশ্বাসে ডগমগ করছে! রাতে দিব্য লক-আপে ঘুমাচ্ছে, খাচ্ছে! হিন্দিতে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দিচ্ছে ইংরেজিতে।

#নয়াদিল্লি: সোমবার শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের ঘটনা সামনে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ! নিজের প্রেমিকাকেই খুন করে ৩৫ টুকরো করে কেটেছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারির পর জেলে নিতান্তই 'বিন্দাস' রয়েছে আফতাব! যে-সমস্ত পুলিশ আধিকারিকরা জেরা করেছেন, তাঁরাও রীতিমত হতবাক আফতাবের আচরণ দেখে! এরকম ঘৃণ্য-হিংস্র-নৃশংস অপরাধের পরও বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই আফতাবের। রীতিমত আত্মবিশ্বাসে ডগমগ করছে! রাতে দিব্য লক-আপে ঘুমাচ্ছে, খাচ্ছে! হিন্দিতে প্রশ্ন করা হলেও উত্তর দিচ্ছে ইংরেজিতে।
নৃশংসতার সমস্ত সীমা-পরিসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে 'দিল্লির ডেক্সটার' আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। পুলিশি জেরায় খুনি জানায়, শ্রদ্ধার দেহ টুকরো-টুকরো করে কাটার পর কাটা মাথার মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিল যাতে কখনও কাটা মুন্ডুটা খুঁজে পাওয়া গেলেও, শ্রদ্ধাকে চেনা না যায়! তার প্ল্যানিং ছিল, যদি পরবর্তীতে কখনও শ্রদ্ধার কাটা মুন্ডু উদ্ধার হয়, যাতে কেউ বুঝতে না পারে সেটি শ্রদ্ধার-ই মাথা।
advertisement
শ্রদ্ধা ওয়ালকরের সঙ্গে আফতাবের প্রথম আলাপ ‘বাম্বল’ নামক একটি ডেটিং সাইটে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, 'বাম্বল' ছাড়াও একাধিক ডেটিং অ্যাপে ছিল আফতাবের জাতায়াত। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, শ্রদ্ধার সঙ্গে লিভ-ইনে থাকাকালীন হয়তো একাধিক তরুণীর সঙ্গেও সম্পর্কে ছিল আফতাব। এমনকি শ্রদ্ধাকে খুনের সময় -ও হয়তো অন্য আফতাবের জীবনে ছিল অন্য কোনও নারী। পুলিশ এমনটাও মনে করছে, হয়তো শ্রদ্ধাকে খুনের নেপথ্যে রয়েছে অন্য এক মহিলার সঙ্গে আফতাবের ঘনিষ্ঠতা। সেই সম্পর্কে বাধা দেওয়ার কারণেই হয়তো খুন হতে হয়েছে শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে।
advertisement
advertisement
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৮ মে, খুনের দিন শ্রদ্ধা আর আফতাবের মধ্যে অশান্তি শুরু হয় সংসার খরচ কে চালাবে? তা নিয়ে। সূত্রের খবর, গৃহস্থালির সামগ্রী কেনা নিয়ে তাঁদের ঝগড়া শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, আফতাব যে অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছে, তা হয়তো আঁচ করতে পেরেছিল শ্রদ্ধা। আর তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত। ১৮ মে-ও ঝগড়া ক্রমে চরমে ওঠে। শ্রদ্ধার বুকের উপর চেপে বসে তাঁর গলা টিপে ধরে আফতাব, শ্বাসরোধ করে খুন করে প্রেমিকাকে। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের অন্তত ১০ দিন আগে অর্থাৎ, ৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করতে চেয়েছিলেন আফতাব। কিন্তু শ্রদ্ধাকে কাঁদতে দেখে আফতাব একটু নরম হয়ে পড়ে।
advertisement
তদন্তের সঙ্গে যুক্ত দিল্লি পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার দাবি করেছেন, ডেটিং অ্যাপে অন্য মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাই আফতাব এবং শ্রদ্ধার মধ্যে ঝগড়ার অন্যতম মূল কারণ ছিল৷ ওই তদন্তকারী অফিসারের কথায়, 'আফতাব আমাদের জানিয়েছে, শ্রদ্ধা ওর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্কই তিনি মেনে নিতে পারতেন না৷ যদিও আফতাব অভিযোগ করেছে, ওই একই অ্যাপ ব্যবহার করে শ্রদ্ধাও অন্য পুরুষদের সঙ্গে দেখা করতেন৷ আফতাব আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধার দেহ ফ্রিজে রাখা থাকলেও একাধিক মহিলাকে ফ্ল্যাটে ডেকে তাঁদের শয্যাসঙ্গিনী করেছিল সে৷'
advertisement
তদন্তে উঠে আসে, আফতাব ছিল একজন প্রশীক্ষণপ্রাপ্ত শেফ! হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার দরুন মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে শেফের কাজ পেয়েছিলেন। কীভাবে ছুড়ি চালিয়ে হাড়-মাংস কাটতে হয়, মাংস সংরক্ষণ করতে হয়, সে বিষয়ে দক্ষ। খুব সহজেই শ্রদ্ধার শরীরটা ৩৫টি টুকরোয় কেটে ফেলে আফতাব। যদিও সেও ছুড়িটি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সূত্রের দাবি, হোটেলে দু’সপ্তাহ মাংস কাটার প্রশিক্ষণ নেন আফতাব। কী ভাবে মাংস টুকরো করতে হয়, তার পর সেই মাংস কী ভাবে সংরক্ষণ করতে হয়, সবটাই শেখে হাতে-কলমে।
advertisement
এখানেই শেষ নয়! শ্রদ্ধার দেহের টুকরো রাখার জন খুনের আগামিদিন একটি নতুন ফ্রিজ কেনে আফতাব। ফ্রিজটি সবথেকে বড় স্টোরেজ ক্যাপাসিটির। শ্রদ্ধার শরীরের টুকরোগুলি ডিপ ফ্রিজ এবং তার নীচের ট্রে-তে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রেখে দিয়েছিল। পরের ১৮ দিন ধরে রাতের অন্ধকারে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেহের টুকরো ফেলে আসতেন আফতাব বলে অভিযোগ। রোজ রাত দুটোয় একটি পলিথিনের প্লাস্টিকে করে দেহাংশ নিয়ে বাড়ি থেকে বের হত আফতাব। সূত্রের খবর, রোজ রাতে ফ্রিজ খুলে প্রেমিকার কাটা মাথা দেখত সে। যে-ঘরে প্রেমিকাকে খুন করেছিল, টুকরো করে কেটেছিল মরদেহ, সে-ই ঘরেই দিব্য রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাত আফতাব। এমনকি, ফ্রিজে শ্রদ্ধার দেহাংশ থাকাকালীন ফ্ল্যাটে অন্য মহিলাদের সঙ্গেও যৌনতায় মাতত আফতাব।
advertisement
রোমহর্ষক এই ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই প্রকাশিত হয়ে পড়ছে নৃশংসতা ও পৈশাচিকতা৷ আফতাবের পৈশাচিক আচরণের পাশাপাশি পরিশীলিত ভঙ্গিও অবাক করেছে তদন্তকারীদের৷ পুবিশি জেরায় সে ইংরেজিতে উত্তর দিয়েছে৷ ইংরেজিতেই জানায় যে সে খুন করেছে প্রেমিকাকে৷ তবে সে হিন্দিও জানে৷ এখন তদন্তে পুলিশের সন্দেহ প্রতিবেশীদের সন্দেহ এড়াতে গভীর রাতে পাম্প চালাত আফতাব৷ তার পর সাফ করত রক্তের দাগ৷ এমনিতেও পাড়ার কারওর সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না আফতাবের৷ সন্ধ্যায় সাধারণত বাড়ি ফিরত৷ বেশির ভাগ দিনই খাবার অর্ডার করত অনলাইনে৷
পুলিশ জানতে পেরেছে যে দিন সকালে প্রেমিকাক আফতাব খুন করে, সেদিন দোকান থেকে একটি রেফ্রিজারেটর কিনে আনে৷ তার জন্য ক্রেডিট কার্ডে ২৩ হাজার ৫০০ টাকা পেমেন্টও করে৷ এর পর কিনে আনে ছুরি এবং বড় গারবেজ ব্যাগ৷ দোকানি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন তিনি আফতাবের হাতে একটি ক্ষত লক্ষ করেছিলেন৷ পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সেখানে স্টিচও করায় আফতাব৷ সেই চিকিৎসক আফতাবকে চরম উদ্ধত যুবক বলেই জানিয়েছেন৷ তাঁর মধ্যে অনুশোচনার কোনও লক্ষণ ছিল না৷ চিকিৎসককে সে বলেছিল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ভাল বেতনের জন্য সে মুম্বই ছেড়ে দিল্লিতে চলে এসেছিল।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
যে শ্রদ্ধার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, সেই শ্রদ্ধার-ই মুন্ডু কাটার পর মুখ-টা পুড়িয়ে দিয়েছিল খুনি আফতাব
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement