গয়া : কোনও কিছু শেখার পথেই বাধা নয় বয়স ৷ যদি কারও সদিচ্ছা থাকে, তিনি সফল হবেনই ৷ পুরনো প্রবাদ নতুন করে প্রমাণ করলেন শিবকুমার গুপ্ত (Shivkumar Gupta) ৷ বিহারে বুদ্ধগয়া শহরের গয়া স্টেশনের (Gaya Junction) ষাটোর্ধ্ব মালবাহক ৷ কথ্য ইংরেজিতে দড় এই মালবাহক পরিচিত ‘ইংলিশ কুলি ম্যান’ বলে ৷
প্রবীণ শিবকুমারের কোনও প্রথাগত বিদ্যা বা ডিগ্রি নেই ৷ কিন্তু কাজ করতে করতে বিদেশি পর্যটকদের দৌলতে পরিচিত হয়েছেন ইংরেজি শব্দের সঙ্গে ৷ তার পর নিজের ইচ্ছাশক্তি ও মনোবলের দৌলতে শিখে ফেলেছেন ভাষাটাই৷
গয়া জংশনে ট্রেন থেকে নেমে যদি কোনও মালবাহককে দেখেন এক হাতে ইংরেজি সংবাদপত্র এবং মুখে একগাল হাসি নিয়ে অপেক্ষা করছেন, তা হলে বুঝবেন উনিই শিবকুমার ৷ জানিয়েছেন, তিনি পেশায় মালবাহক ৷ কিন্তু তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য, মানুষকে সাহায্য করা ৷ ইংরেজি বলা ও বুঝতে পারায় তাঁর দক্ষতা তাঁকে আলাদা করে তুলেছে বুদ্ধগয়া স্টেশনের অন্যান্য মালবাহকের থেকে ৷ শিবকুমারের জনপ্রিয়তা এতটাই, অনেক বিদেশি পর্যটক বুদ্ধগয়া স্টেশনে নেমে খোঁজ করেন শিবকুমারের ৷ সকল বিদেশি পর্যটকের মালপত্র হয়তো বহন করে উঠতে পারেন না ৷ কিন্তু তাঁদের অন্তত কথা বলিয়ে দেন অন্য মালবাহকের সঙ্গে ৷ ইংরেজি না জানা মালবাহকের সঙ্গে পর্যটকদের হয়ে দোভাষীর কাজ করেন শিবকুমার ৷
শুধু মালবাহকই নন ৷ বিদেশি পর্যটকদের কাছে শিবকুমারের গুরুত্ব আরও অনেক ক্ষেত্রেই ৷ বুদ্ধগয়াতে পর্যটকরা যত দিন থাকেন, গাইডের কাজ করেন শিবকুমার ৷ স্থানীয়দের কাছেও তিনি খুব প্রিয় ৷ শিবকুমারের কথায়, চেনা অচেনা অনেক মুখই তাঁকে ভালবেসে উপহার দিয়ে যান ৷
গয়া জংশনের আরও একজন মালবাহক সুরজ দেব চন্দ্রবংশী জানিয়েছেন, আগে শিবকুমারকে সকলে ডাকতেন ‘বাবা’ বলে ৷ এখন আর তাঁর পরিচয় ‘বাবা’ নয় ৷ বরং তিনি এখন সকলের থেকে বিস্ময় ও সম্ভ্রম আদায় করে নেওয়া ‘ইংরেজি বলিয়ে মালবাহক’ ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।