PM Modi's mother Heeraben dies: কেমন ছিলেন হীরাবেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্লগেই ধরা পড়েছিল সেই আশ্চর্য কাহিনি
- Published by:Uddalak B
Last Updated:
আমরা আজ, আর একবার ফিরে দেখি সেই লেখার দিকে৷
#আহমেদাবাদ: মায়ের ১০০তম জন্মদিনে একটি আবেগভরা ব্লগ লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ আজ এই দিনে, এক বার ফিরে দেখা যাক সেই ব্লগের দিকে৷ আবেগ মথিত নানা দিকের কথা সেই ব্লগে লিখেছিলেন মোদি৷ আসুন আমরা আজ, আর একবার ফিরে দেখি সেই লেখার দিকে৷
মোদি লিখছেন, ‘‘আমি আজ ভীষণ খুশি ও ভাগ্যবান বলেই এই খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছি যে আমার মা শ্রীমতি হিরাবেন মোদি আজ জন্মলগ্নের শতবর্ষে এসে উপস্থিত৷ এ বছর তাঁর জন্মশতবর্ষ৷’’
যুদ্ধজয়ের প্রতীক তিনি
advertisement
শৈশবে মা-কে অনেক কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘মা আমার সাধারণ, কিন্তু একই সঙ্গে অনন্য৷ যেমন সব মায়েরাই হন৷’’ অল্প বয়সে মা-কে হারিয়েছিলেন হীরাবেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘‘মায়ের তো দিদিমার মুখটাও মনেও পড়ত না, মনে পড়ত না দিদিমার কোলে তিনি কতটা স্নেহচ্ছায়া পেয়েছেন৷ মায়ের অনুপস্থিতিতেই তাঁর শৈশব কেটেছে বলা চলে৷’’
advertisement
ভাই ও মায়ের সঙ্গে পারিবারিক জীবন তাঁর কাটত ভাডনগরের একটি ছোট্ট মাটির বাড়িতে৷ মোদি জানিয়েছেন, তাঁর মা কেবল মাত্র দৈনিক গৃহকর্মের কাজ করতেন, এমনটা নয়, বাড়ির উপার্জনের দিকেও নজর রাখতে হত তাঁকে৷ কয়েকটি বাড়িতে বাসন ধোয়ার কাজ করতেন মা, উপার্জনের জন্য চরকাও কেটে সুতো তৈরি করতেন তিনি৷ মোদি স্মৃতিচারণায় বলেছেন, ‘‘বৃষ্টির সময় বাড়ির ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ত৷ জল জমে যেত কাঁচা বাড়িতে৷ মা তখন বাড়ির বাসনপত্র সেই ছাদ চোঁয়ানো জল ধরতে বসিয়ে দিতেন এখানে-ওখানে৷ কঠিন পরিস্থিতিতেও যুদ্ধজয়ের মানসিকতা ছিল তাঁর৷’’
advertisement

সাফাইকর্মীদের প্রতি ছিল তাঁরা গভীর সন্মান
মোদি বলেছেন, কয়েকটি বিষয়ে মায়ের ছিল বিশেষ ভাবনা৷ তিনি সেই ভাবনা থেকে নড়তেন না৷ তার উদাহরণ একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীও উল্লেখ করেছেন৷ পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সদা সতর্ক থাকতেন হীরাবেন৷ সাফাইকর্মীদের প্রতি হীরাবেনের ছিল গভীর সন্মান৷ মোদি স্মৃতিচারণ করে বলছেন, ‘‘যাঁরা বাড়ির পাশের ময়লা নর্দমা পরিস্কার করতে আসতেন, তাঁদের কখনও চা না খাইয়ে ছাড়েননি মা৷’’
advertisement
অন্যের আনন্দে খুশি হওয়া
অন্যের আনন্দে খুশি হওয়া ছিল হীরাবেনের স্বভাব৷ দিলদরিয়া মানুষ ছিলেন তিনি৷ ব্লগে একাধিকবার সে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেছেন, ‘‘পাশের গ্রামে আমার বাবার এক বন্ধু থাকতেন৷ সেই বন্ধুর অকাল মৃত্যুর পর বন্ধুর ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন বাবা৷ আব্বাস ছিল তাঁর নাম৷ সেই আব্বাস আমাদের বাড়িতে ছিলেন, পড়াশোনা শেষ করেছিলেন৷ আব্বাস ছিলেন মায়ের স্নেহভাজন, আমাদের সবাইকে যে ভাবে স্নেহ করতেন মা, সে ভাবেই আব্বাসকেও স্নেহ করতেন তিনি৷’’
advertisement

মায়ের থেকে কী কী শিখেছিলেন তিনি
মায়ের থেকে কী শিখেছিলেন তিনি, উত্তরে মোদি বলেছিলেন, মায়ের থেকে শিখেছিলেন প্রথাগত শিক্ষা না পেয়েও আদর্শবান, শিক্ষিত হওয়া যায়৷ এক বার জীবনের শিক্ষকদের সন্মান জানাতে চেয়েছেন মোদি, সেই তালিকায় ছিলেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষক, মা-ও৷ সেই মুহূর্তে হীরাবেন বলেছিলেন, ‘‘আমি খুব সাধারণ মানুষ, আমি তোমার জন্মদাত্রী ঠিকই, কিন্তু তোমায় প্রকৃত মানুষ করে তুলেছেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর৷’’
advertisement
একজন কর্তব্যপরায়ণ নাগরিক
দেশের একজন কর্তব্যপরায়ণ নাগরিক হীরাবেন৷ যবে থেকে ভারতের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে থেকে তিনি প্রতিটি ভোটে ভোট দিয়েছেন৷
খুব সাধারণ জীবনযাপন
Took blessings of my mother today as she enters her 100th year... pic.twitter.com/lTEVGcyzdX
— Narendra Modi (@narendramodi) June 18, 2022
advertisement
খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন হীরাবেন৷ মোদি লিখেছেন, ‘‘আমি কোনদিন দেখিনি আমার মা সোনায় গয়না পরেছেন৷ তাঁর কোনওদিনই গয়নার দিকে নজর ছিল না৷ একটি ছোট ঘরে তিনি আজীবন এক সরল, সাধারণ জীবন যাপন করেছেন৷’’
ছিলেন সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে ওয়াকিবহাল
সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে সমবসময় ওয়কাবিহাল থাকতেন প্রধানমন্ত্রীর মা৷ নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘‘আমি এই কয়েকদিন আগে জিজ্ঞাসা করেছিলাম মা-কে, দিনে কতক্ষণ তিনি টিভি দেখেন৷ তিনি বলেছিলেন, টিভিতে বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের মধ্যে ঝগড়াতে ব্যস্ত থাকেন, তিনি শুধু দেখেন যাঁরা শান্ত হয়ে টিভিতে খবর পড়েন৷ আমি অবাক হয়েছিলাম শুনে যে মা সব খবর রাখেন৷’’
এই বয়সেও তাঁর স্মৃতি তুখোড়
বয়স বাড়লেও স্মৃতি ঝাপসা হয়নি হীরাবেনের, সে কথা একটি উদাহরণ তুলে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ২০১৭ সালে কাশী থেকে সরাসরি তিনি গিয়ে দেখা করেছিলেন মায়ের সঙ্গে, সেই স্মৃতি নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘মা জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি কাশি-বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছিলাম কি না৷ মা পুরো নামটাও ব্যবহার করেছিলেন, কাশি বিশ্বপনাথ মহাদেব৷ তিনি সেই সময় কথায় কথায় জিজ্ঞাসা করেছিলেন মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা একই রকম আছে কি না৷ একটি বাড়ির ভিতরে একটি মন্দির ছিল, সেটিও একইরকম আছে কি না জিজ্ঞাসা করেছিলেন৷’’
অন্যের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তাঁর মা শুধুমাত্র অন্যের পছন্দকে গুরুত্ব দিতেন তাই নয়, নিজের পছন্দ অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ারও বিরোধী ছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমার সিদ্ধান্তকে তিনি সবসময় গুরুত্ব দিতেন৷ কোনও সময়ে তার বিরোধিতা তিনি করেননি, আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন৷ আমার ভিতরে যে অন্যরকমের এক ভাবনা ছোটবেলা থেকেই চলছে, তা মা বুঝতে পেরেছিলেন৷’’ মোদির বাড়ি ছেড়ে সমাজ সংস্কারে নিজেকে উৎসর্গকরার সিদ্ধান্তের সময়েও মা ছিলেন তাঁর পাশে৷ বলেছিলেন, ‘‘তোমার মন যা বলে, তাই করো৷’’
Maa…this isn’t a mere word but it captures a range of emotions. Today, 18th June is the day my Mother Heeraba enters her 100th year. On this special day, I have penned a few thoughts expressing joy and gratitude. https://t.co/KnhBmUp2se
— Narendra Modi (@narendramodi) June 18, 2022
গরিব কল্যাণে মনযোগ
গরিব কল্যাণে মনযোগ দিতে সবসময় তাঁর মা উৎসাহ দিতেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ২০০১ সালে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরের একটি ঘটনা এক্ষেত্রে তুলে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ সে বার গুজরাতে পৌঁছে সরাসরি মায়ের কাছে গিয়েছিলেন তিনি৷ মা বলেছিলেন, ‘‘আমি তোমার সরকারি কাজ বুঝি না, কিন্তু একটা কথা বলি, কখনও ঘুষ নিও না৷’’ নরেন্দ্র মোদিকে তিনি সব সময় বলতেন, তাঁকে নিয়ে চিন্তা না করতে, বরং সরকারি কাজে মন দিতে৷
জীবনের মন্ত্র -কঠিন পরিশ্রম
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তাঁরা অভিভাবকদের জীবনের অন্যতম মন্ত্র ছিল আত্মসন্মান৷ দারিদ্র্য ও অন্য সমস্ত বাধার সঙ্গে লড়েও তাঁর অভিভাবকরা কখনও সত্যবাদের পথ থেকে সরে আসেননি বা কখনও আত্মসন্মান বিসর্জন দেননি৷ জীবনের সমস্ত বাধা অতিক্রমের জন্য তাঁদের মূল মন্ত্র ছিল কঠিন পরিশ্রম৷
মাতৃশক্তির আইকন
মোদি আরও বলেছেন, ‘‘দেশের মাতৃশক্তির অন্দরে আমার মায়ের মহান সংযোগ আমাকে অবাক করে৷ আমি যখন আমার মায়ের দিকে তাকাই বা এমনই কোটি কোটি মায়ের দিকে তাকাই, তখন আমার মনে হয়, ভারতীয় মহিলাদের পক্ষে কোনও উচ্চতায় পৌঁছানো অসম্ভব নয়৷’’ তারপরেই মোদি কয়েকটি শব্দে বিষয়টি বর্ণনা করেছেন৷
‘‘সমস্ত অন্যায়-অত্যাচারের কাহিনিকে দূরে ফেলে,
মায়ের এক উজ্জ্বল কাহিনি সামনে আছে,
প্রতিটি লড়াইকে অনেকটা দূরে ফেলে
আছে মায়ের এক উজ্জ্বল উপস্থিতির বার্তা৷’’
Location :
First Published :
December 30, 2022 8:08 AM IST