Manmohan Singh: ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইমমিনিস্টার’ ‘মৌনমোহন’, কটাক্ষ শুনে কী বলতেন মনমোহন সিং?

Last Updated:

এসব তিনি শুনতেন। তাঁকে কে কী বলে সবই জানতেন। তবে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রকাশ্যে কখনও এই নিয়ে মুখ খোলেননি। মনমোহন এমনই।

২০০৬ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টরেট অফ ল’ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন৷ অনেকেই দাবী করেছিলেন, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক রঙ নীল৷ 
সেই বিশ্ববিদ্যালের প্রতি সম্মান জানাতেই নাকি তিনি নীল রঙের পাগড়ি পরতে ভালবাসতেন৷
২০০৬ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টরেট অফ ল’ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন৷ অনেকেই দাবী করেছিলেন, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক রঙ নীল৷ সেই বিশ্ববিদ্যালের প্রতি সম্মান জানাতেই নাকি তিনি নীল রঙের পাগড়ি পরতে ভালবাসতেন৷
মনমোহন সিং ছিলেন মিতভাষী। স্বভাবে নরম প্রকৃতির। তাঁকে কখনও কারও সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলতে দেখেনি কেউ। এই নিয়ে কটাক্ষ করত বিরোধীরা। কেউ বলতেন, “মনমোহন নন, উনি মৌনমোহন।” আবার কেউ বলতেন, “নীরব প্রধানমন্ত্রী।”
এসব তিনি শুনতেন। তাঁকে কে কী বলে সবই জানতেন। তবে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রকাশ্যে কখনও এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তিনি বরাবরই এমনই। তবে ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’ বইতে এর জবাব দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, তিনি নিয়মিত সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। সাংবাদিক সম্মেলন করতেন। ভাবটা যেন, এর বাইরে আলাদা করে বলার কী আছে! তাঁর নেতৃত্বের ধরনটাই এরকম।
advertisement
“মানুষ বলে আমি নীরব প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। এই বই সে কথা বলে না। একটা কথা বলতে চাই, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পাব, এমন প্রধানমন্ত্রী আমি কোনওদিনই ছিলাম না। নিয়মিত সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিতাম। বিদেশ সফরে বিমানে বা বিমান থেকে নামার পরই সাংবাদিক সম্মেলন করতাম। এমন অসংখ্য সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। তার ফলাফলের (বইতে) বর্ণনা রয়েছে।” ২০১৮ সালে ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’-এর প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই কথাগুলো বলেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
advertisement
advertisement
মনমোহন সিংকে নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়াণ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনীশ তিওয়ারিও। এক্স পোস্টে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন, সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব তুলে ধরেছেন তিনি।
মনীশ লেখেন, “প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তাঁর ১০ বছরের মেয়াদকালে ১১৭ বার সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন। কথা বলেন, প্রশ্নের জবাব দেন।” ১১৭টি সাংবাদিক সম্মেলন খুঁটিনাটিও জানান মনীশ।
advertisement
তিনি লিখেছেন, “ড. মনমোহন সিংয়ের সাংবাদিক সম্মেলন ২০০৪ থেকে ২০১৪: বিদেশ সফরে – ৭২টি, বার্ষিক সাংবাদিক সম্মেলন – ১০টি, দেশের মধ্যে বা রাজ্য সফরকালীন – ২৩টি, নির্বাচন, রাজনিতি বা ইস্তেহার প্রকাশকালে – ১২টি।”
ঐক্যমত তৈরিতে দক্ষ, সহজ-সরল, জ্ঞানী, নরম স্বভাবের মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
advertisement
মনমোহন সিংকে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ বলে কটাক্ষ করে বিরোধীরা। অর্থাৎ তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল না, দুর্ঘটনাক্রমে হন। কিন্তু শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি “দূর্ঘটনাক্রমে” অর্থমন্ত্রীও হন। ২০১৮ সালে ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’ বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে নিজেই জানিয়েছেন সে কথা।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে একাধিক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মনমোহন সিং। ভারতের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছিলেন শক্ত ভিতের উপর। তাঁর হাত ধরেই উদার অর্থনীতির মুখ দেখে এই দেশ। ভারতীয় অর্থনীতির জন্য বিদেশি বাজারকে খুলে দেন তিনি। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পিভি নরসিমা রাও। নরসিমা এবং মনমোহনের যুগলবন্দীর কথাও সর্বজনবিদিত।
advertisement
মনমোহন জানান, অর্থমন্ত্রী হিসেবে আইজি প্যাটেলকে চেয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও। কিন্তু প্যাটেল রাজি হননি। তখন তাঁর ঘাড়ে দায়িত্ব এসে পড়ে। রসিকতার মেজাজে মনমোহন বলেন, “অনেকেই বলে আমি দূর্ঘটনাক্রমে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলাম। কিন্তু আমি দুর্ঘটনাক্রমে অর্থমন্ত্রীও হয়েছিলাম।”
মনমোহন জমানার শেষ কয়েক বছরে খুব খারাপ অবস্থা হয় ইউপিএ সরকারের। ২জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি, কমনওয়েলথ দুর্নীতি, কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে ঘরে-বাইরে তোপের মুখে পড়তে হয় সরকারকে। মুদ্রাস্ফীতিও লাগাম ছাড়িয়ে যায়। সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস দশা। বিরোধীরা নখ-দাঁত বের করে ঝাঁপিয়ে পড়ে মনমোহন সিংয়ের উপর। একমাত্র সেই সময় কংগ্রেস এবং ইউপিএ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জোর গলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি দুর্বল নন।
advertisement
তবে মিডিয়া বা বিরোধীরা যাই বলুক, ইতিহাস তাঁর প্রতি সদয় হবে বলে মন্তব্য করে হইচই ফেলে দেন মনমোহন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি বলেন, “আমি সত্যিই আশা করি যে সমসাময়িক মিডিয়া বা সংসদে বিরোধী দলের তুলনায় ইতিহাস আমার প্রতি বেশি সদয় হবে।” তাঁর এই মন্তব্য ভারতীয় রাজনীতিতে ঝড় তুলে দিয়েছিল।
তিনি ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ কি না তা ইতিহাস বিচার করবে। বিরোধীদের ‘মৌনমোহন’ কটাক্ষও তোলা থাকবে ইতিহাসের কাছেই। তবে এসব কোনও কিছুই গায়ে মাখেননি তিনি। শেষ দিন পর্যন্ত কর্তব্যে অবিচল ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পর একটি সর্বভারতীয় দৈনিক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনমোহন সিং বলেছিলেন, “প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে আমার লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই।”
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Manmohan Singh: ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইমমিনিস্টার’ ‘মৌনমোহন’, কটাক্ষ শুনে কী বলতেন মনমোহন সিং?
Next Article
advertisement
BCCI New President: দৌড়ে ছিলেন সৌরভ, হরভজন! শেষ পর্যন্ত বিসিসিআই-এর নতুন সভাপতি কে? বড় চমক
দৌড়ে ছিলেন সৌরভ, হরভজন! শেষ পর্যন্ত বিসিসিআই-এর নতুন সভাপতি কে? বড় চমক
  • সৌরভ, হরভজনের মতো হেভিওয়েটদের পিছনে ফেলে বিসিসিআই-এর শীর্ষ পদে বসছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার মিঠুন মানহাস৷ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের প্রতিনিধিত্ব না করলেও কয়েক বছর আগেও ঘরোয়া ক্রিকেট পরিচিত মুখ ছিলেন মিঠুন৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement