প্রথমবার সেলফি ভিডিও উদয়নের স্বীকারোক্তি, ‘আমিই খুন করেছি মা, বাবা আর আকাঙ্ক্ষাকে’
Last Updated:
পুলিশের কাছে জেরায় নিজেই খুনের কথা স্বীকার করেছিল উদয়ন ৷ তবে এভাবে সেলফি ভিডিও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি এই প্রথম ৷
#রায়পুর: সিরিয়াল কিলারের ভাবলেশহীন অকপট স্বীকারোক্তি ৷ তিন খুনে অভিযুক্ত উদয়ন এই মুহূর্তে ট্রান্সজিট রিমান্ডে রায়পুর পুলিশের হেফাজতে ৷ গ্রেফতারের পর প্রথম থেকেই ঠান্ডা মাথার এই খুনির মধ্যে কোনও চাঞ্চল্য দেখা যায়নি ৷ পুলিশের কাছে জেরায় নিজেই খুনের কথা স্বীকার করেছিল উদয়ন ৷ তবে এভাবে সেলফি ভিডিও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি এই প্রথম ৷
ভাবটা এমন যেন বীরত্বের গল্প বলছে ৷ রায়পুর তদন্তকারীদের সঙ্গে পুলিশ ভ্যানে বসে হাসতে হাসতেই সেলফি তুলছিল নিজের বাবা-মা ও প্রেমিকার খুনে অভিযুক্ত ভোপালের বাসিন্দা উদয়ন দাস ৷ আধিকারিকদের থেকে ক্যামেরা ফোনটি নিয়ে সেলফি ভিডিও মোড অন থাকা অবস্থাতেই তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তরে এই বিলাস প্রিয় অপরাধী বলে, ‘হাঁ মার দিয়া ৷’
advertisement
বাঁকুড়ার বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা শর্মার নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনে নেমেই উঠে আসে নির্মম উদয়নের কুকীর্তি ৷ পুলিশি তদন্তে উঠে আসে একের পর এক খুনের ঘটনা ৷ উদয়নের তিন শিকার আকাঙ্ক্ষা ও তার বাবা-মা ৷
advertisement
বাঁকুড়া পুলিশের জেরায় উদয়ন এর আগে নিজের অপরাধ কবুল করে ৷ তদন্তে উঠে আসে, টাকার জন্যই খুন হতে হয়েছিল উদয়নের বাবা-মাকে। বাবা-মাকে সরিয়ে দেওয়া গেলে কত টাকা পাওয়া যাবে, তা হিসাব করেই খুনের ছক কষে উদয়ন। আকাঙ্খাকে খুনের পিছনেও সেই টাকার লোভ। আকাঙ্খা তাকে ছেড়ে কলকাতায় ফিরে গেলে টাকার জোগান বন্ধ হয়ে যাবে। জোড়া খুনের ঘটনাও সামনে চলে আসবে। এই আশঙ্কা থেকেই আকাঙ্খাকে গলা টিপে খুন করে উদয়ন। ব্যাঙ্কে বড় অঙ্কের টাকা আছে জেনেই তার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায় উদয়ন।
advertisement
ভালো জামাকাপড়, বিদেশ ঘোরা, কলগার্লদের পিছনে খরচ। এই বিপুল খরচ জোগাড়েই বাবা-মাকে খুনের পরিকল্পনা উদয়নের। বারবার অনুরোধেও বাড়ি থেকে টাকা মিলছিল না। উলটে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার নামে নেওয়া টাকা ফেরৎ চাইছিল বাবা-মা। তখনই বাবা-মাকে খুন করে বাগানে পুঁতে দেওয়ার ছক কষে উদয়ন।
বাবা-মাকে খুন করলে কত টাকা মিলবে? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-পেনশন ও জমানো টাকা মিলিয়ে কত পাওয়া যাবে তা হিসাব করেই হয় খুনের ছক।
advertisement
বাবা-মায়ের টাকা হাতিয়েই বিদেশ যাওয়া, কলগার্লদের পিছনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ। বাড়ি বিক্রি, এফডি ভাঙে হাতে এসেছিল প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা। খরচের চোটে তাতে টান পড়তেই সময় লাগেনি। তখনই নেটে অবস্থাপন্ন তরুণীদের টার্গেট করা শুরু। আমেরিকায় চাকরির টোপ দিয়ে ফাঁসানো হয় আকাঙ্খাকে।
আকাঙ্খা খুনের আগেই অবশ্য আকাঙ্খার অ্যাকাউন্টের পাস ওয়ার্ড জানত উদয়ন। তাই খুনের পরেও টাকা তোলায় বাধা ছিল না। তবে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে রাখা বড় অঙ্কের টাকার খোঁজ পায়নি উদয়ন। বাঁকুড়ায় এসে আকাঙ্খার বাবা-মায়ের কাছে সে অ্যাকাউন্টের সে ব্যাপারে জানতে চাইবে। এমন পরিকল্পনা করলেও ধরা পড়ার ভয়ে সেই পথে আর হাঁটেনি উদয়ন।
advertisement
টাকার লোভে একের পর এক খুন করলেও স্বস্তি ছিল না। আকাঙ্খা খুনের পর আবারও টাকায় টান পড়েছিল। জেরায় সেকথাও স্বীকার করেছে ঠান্ডা মাথার এই অপরাধী।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
February 20, 2017 12:20 PM IST