ধর্ষকের সুনিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড! মহারাষ্ট্রের শক্তি বিল পাস হলে সমস্যায় পড়তে পারেন অনেকে!
Last Updated:
ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের বিরুদ্ধে প্রস্তাবিত সেই বিলে অপরাধীর সুনিশ্চিত শাস্তির লক্ষ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছিল। যার মধ্যে অন্যতম ধর্ষকের সুনিষ্টিত মৃত্যু।
#মুম্বই: রাজ্য বিধানসভায় ২০২০ সালে শক্তি বিল পেশ করেছিল মহারাষ্ট্র সরকার। ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের বিরুদ্ধে প্রস্তাবিত সেই বিলে অপরাধীর সুনিশ্চিত শাস্তির লক্ষ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছিল। যার মধ্যে অন্যতম ধর্ষকের সুনিষ্টিত মৃত্যু। কিন্তু আইন করে তা প্রবর্তন করলেই কি সব সমস্যার সমাধান করা যাবে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
তদন্তের সময় কমিয়ে আনা-
শক্তি বিলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের ক্ষেত্রে তদন্তের সময় কমিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। শক্তি বিল অনুযায়ী, এফআইআর দায়ের করার পর ১৫টি কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে, ট্রাল শেষ করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে এবং মামলার শুনানি শেষ করতে হবে ৪৫ দিনের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এক্ষেত্রে সুষ্ঠু তদন্ত হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। কেন না, ২০১৯ সাল থেকেই পরিসংখ্যান মোতাবেকে দেশের জনসংখ্যার ১ লক্ষের মধ্যে পুলিশকর্মীর সংখ্যা মাত্র ১৯৫! অন্য দিকে জেলা আদালতে বিচারকের শূন্যপদ ২২ শতাংশ। পাশাপাশি পরিসংখ্যান বলছে যে মহারাষ্ট্রে এখনও নারীদের উপরে অত্যাচারের মামলার ৪৪ শতাংশের তদন্ত হয়নি, ৯৪ শতাংশের মামলার রায় স্থগিত আছে। এরকম পরিস্থিতিতে তদন্তই বা করবেন কে আর বিচারের রায়ই বা দেবেন কে, সেই অস্বস্তিকর প্রশ্নটি ভাবিয়ে তুলেছে।
advertisement
মিথ্যা অভিযোগে শাস্তি-
শক্তি বিলে বলা হয়েছে যে কেউ যদি ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের ক্ষেত্রে কারও নামে মিথ্যা অভিযোগ আনেন এবং তা যদি প্রতিপন্ন হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এক বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে বা জরিমানা ধার্য হতে পারে। পরিস্থিতি বিশেষে জরিমানা আর কারাবাস দুই প্রযোজ্য হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এর সুযোগ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের লাঞ্ছনা বাড়বে বই কমবে না। অনেকেই এই ধরনের ঘটনার অভিযোগ করতে চান না, শক্তি বিলের এই নিয়ম সেই প্রবণতা আরও বাড়িয়ে তুলবে। ফলে, সমাজে অপরাধও বেড়ে চলবে।
advertisement
advertisement
ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ-
শক্তি বিলে বলা হয়েছে যে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া এবং টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডাররা পুলিশকে সব রকমের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে বাধ্য থাকবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এই নিয়মের জেরে আদালতের নোটিশ ছাড়াই পুলিশ এই ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে যা কার্যত জনসাধারণের পক্ষে বিপজ্জনক বলে সাব্যস্ত হতে পারে।
advertisement
ধর্ষকের নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড-
শক্তি বিল বলছেন যে ধর্ষণ, গণধর্ষণ এবং অ্যাসিড অ্যাটাকের ক্ষেত্রে অপরাধ যদি নৃশংসতার সব সীমা পার করে ফেলে, যদি অত্যাচারিতার মৃত্যু ঘটে, সেক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডকেই সুনিশ্চিত করতে হবে। এক হিংসামূলক অপরাধকে দমন করতে ফের হিংসারই আশ্রয় নিচ্ছে সরকার, এই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আদতে এটি সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা এবং ২১ নম্বর ধারার বিরোধী। এই দুই ধারায় যথাক্রমে সবার সমান অধিকার এবং জীবনের অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে, বিষয়টি হয়ে পড়েছে বিতর্কাধীন।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
January 22, 2021 12:02 PM IST