‘ সম্মানের সঙ্গে মৃত্যু মানুষের অধিকার ’.... স্বেচ্ছামৃত্যুতে আইনি সম্মতি সুপ্রিম কোর্টের

Last Updated:

নতুন আইন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নিষ্কৃতি-মৃত্যুর নির্দিষ্ট কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

#নয়াদিল্লি: প্রশ্নটা উস্কে দিয়েছিলেন অরুণা রামচন্দ্র শানবাগ। ৪২ বছর ধরে জড় পদার্থের মতো তিনি পড়ে ছিলেন মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালের বিছানায়।
জীবন্মৃত অবস্থায়। নিষ্কৃতি মৃত্যুর আবেদন জানিয়ে সাড়া পাননি অরুণা। বিশেষ অবস্থায় স্বেচ্ছামৃত্যুকে শুক্রবার বৈধ বলে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই ঐতিহাসিক রায়কে অরুণা শানবাগের নৈতিক জয় হিসাবেই দেখছে আইনজীবী মহল।
হাসপাতালের খুপরি ঘর। বিছানায় শুয়ে এক মহিলা। চোখে দেখেন না, কিছু বলেনও না। জড়। জীবন্মৃত। সেই জড় পদার্থের মতো মানুষটার এ ভাবে বেঁচে থাকােক ঘিরেই বদলে গিয়েছে এ দেশের আইন। বাঁচার অধিকার যদি থাকে, তা হলে মরার অধিকার থাকবে না কেন, এই প্রশ্ন নাড়িয়ে দিয়েছিল ভারতের সংবিধান। তিনি অরুণা রামচন্দ্র শানবাগ। ১৯৭৩-এর এক নভেম্বর-রাতে ধর্ষণ ও নারকীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে ৪২ বছর কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে ছিলেন। মারা গেলেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে।
advertisement
advertisement
আইনের ফাঁসে নিষ্কৃতি মৃত্যু
--২০০৯ সালে অরুণার নিষ্কৃতি-মৃত্যুর আবেদন
--সুপ্রিম কোর্টে মামলা বন্ধু পিঙ্কি ভিরানির
--২০১০ সালে আবেদন গ্রাহ্য আদালতে
--অরুণার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট তলব
--২০১১ সালে কোর্টের নির্দেশে ৩ সদস্যের মেডিক্যাল প্যানেল
--আদালত জানায়,বিশেষ অবস্থায় ‘পরোক্ষ নিষ্কৃতি-মৃত্যু’র অনুমতি
advertisement
--অনুমতি দিতে পারে শীর্ষ আদালত
--তবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রোগীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-বন্ধুকে
--তঁারা বললেই বন্ধ হবে জীবনদায়ী ব্যবস্থা
--অরুণার নিষ্কৃতি মৃত্যুতে সায় ছিল না চিকিৎসক-নার্সদের
--২০১১ সালে অরুণার নিষ্কৃতি-মৃত্যুর বিপক্ষে রায় সুপ্রিম কোর্টের
২০১৫ সালের ১৮ মে মারা যান অরুণা শানবাগ। ২০১৮ সালের ৯ মার্চ, পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধ বলে ঘোষণা করলেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতি। যেন একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল।
advertisement
নিষ্কৃতি মৃত্যুতে সিলমোহর দিলেও সুপ্রিম কোর্ট প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুর মধ্যে সীমারেখা টেনে দিয়েছে। কেবলমাত্র পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুকেই মান্যতা দিয়েছেন বিচারপতিরা। এক্ষেত্রে লিভিং উইল বা স্বরচিত ইচ্ছাপত্রের প্রসঙ্গ তুলেছে শীর্ষ আদালত। ধরা যাক কোনও ব্যক্তি সজ্ঞানে লিখলেন যে, কোনও এমন রোগে যদি তিনি আক্রান্ত হন যেখানে জীবনদায়ী ব্যবস্থা ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব— তা হলে যেন সেই ব্যবস্থা বন্ধ করে নেওয়া হয়। আইনি ভাষায় একে ‘লিভিং উইল’ বলা হয়। রোগী যদি এমন অচেতন অবস্থায় পৌঁছে যান যে সেই অবস্থা থেকে ফেরানোর আর সম্ভাবনা নেই, তখন সেই উইল বা ইচ্ছাপত্রের ভিত্তিতে হাইকোর্টে আবেদন করতে পারেন রোগীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা নিকট কোনও আত্মীয়। এর পর আদালতের নির্দেশের ভিত্তিতে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
advertisement
আদালতে স্বেচ্ছামৃত্যু
--শুধুমাত্র পরোক্ষ স্বেচ্ছামৃত্যুতে সায় আদালতের
--প্রত্যক্ষ নিষ্কৃতি মৃত্যুকে মান্যতা নয়
--সজ্ঞানে ‘লিভিং উইল’ করে রাখতে হবে
--লিভিং উইলে থাকবে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি
--রোগী অচেতন বা কোমাচ্ছন্ন হলে লিভিং উইল প্রয়োগ
--ইচ্ছাপত্র পেশ করতে পারবেন আত্মীয়-বন্ধুরা
advertisement
--হাইকোর্টে পেশ করতে হবে লিভিং উইল
--হাইকোর্ট গঠন করবে মেডিক্যাল টিম
--স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেবে সেই টিম
তবে নিষ্কৃতি মৃত্যুর অধিকারের অপব্যবহার হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের চিকিৎসার ভার থেকে মুক্তি পেতে সন্তানরা এই উইলকে কাজে লাগাতে পারেন, এ আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারেননি কেন্দ্রও। নতুন আইন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নিষ্কৃতি-মৃত্যুর নির্দিষ্ট কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
‘ সম্মানের সঙ্গে মৃত্যু মানুষের অধিকার ’.... স্বেচ্ছামৃত্যুতে আইনি সম্মতি সুপ্রিম কোর্টের
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement