মুর্শিদাবাদঃ একটা সময় ছিল, যখন গরম পড়তে না পড়তেই খোঁজ পড়ত মাটির কুঁজো-কলসীর। রোদে তেতে ঘেমে নেয়ে ঘরে ফিরে এক গ্লাস মাটির কলসী কিংবা কুঁজোর জল শুধু শরীরের তেষ্টা মেটাতো না, জুড়িয়ে দিত মনও। দিন পালটেছে। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। যার দৌলতে প্রতি ঘরেই রয়েছে ফ্রিজ। চলছে বাতানুকুল যন্ত্র। জলের বোতলের গায়ে এখন কৃত্রিম ঠাণ্ডার পরত। তাই আগের মতো মাটির তৈরী কুঁজো-কলসীর ব্যবহার আর নেই। তবুও এখনও কিছু বাড়ি রয়েছে যেখানে গরম পড়লেই কৃত্রিম ঠাণ্ডার পরিবর্তে কালো কুঁজো-কলসীর ঠাণ্ডা জলের চাহিদা থাকে। যদিও তা অনেক কম। অবশ্য শুধু ফ্রিজের কাছে হেরে নয়, খানিকটা উপযুক্ত মাটির অভাবেও এখন কুমোররা মাটির কলসী কিংবা কুঁজো তৈরি করেন না। তাঁরা শুধুই ছোট কলসী গড়েন। কারণ, ছোট কলসীর চাহিদা গোটা বছরই অল্পবিস্তর থাকে। পুজো হোক কিংবা বিয়ে, ছোট মাটির কলসী লাগবেই। কেন বড় থেকে ছোটতে অবতরণ, তার খোঁজ নিতে গিয়ে মুর্শিদাবাদের রাণীনগর এর পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা দেবাশীষ পাল জানালেন, ৩০ বছর ধরে তারা মাটির কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
একসময় প্রচুর মাটির কলসী, হাঁড়ি ও অন্যান্য মাটির জিনিস তারা তৈরি করতেন। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে মাটির কলসীর চাহিদা থাকতো তুঙ্গে। চাকে মাটির কলস তৈরী করে বাড়ির সামনে উঠোনে শুকাতে দিতেন তারপর সেগুলিকে বাজারে পাঠাতেন কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির জমানায় সেই মাটির কলসী আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে বসেছে।
আরও পড়ুনঃ সার্ধ দ্বিশতবর্ষে কান্দিতে রাজা রামমোহন রায়ের মূর্তির উদ্বোধন
মানুষজন মাটির তৈরী কলসী আর কিনতে চান না ।উপযুক্ত মাটির অভাবেও এখন কুমোররা বড় মাটির কলসী কিংবা কুঁজো তৈরি করেন না। এ বিষয়ে মৃৎশিল্পীর অনিতা পালের গলাতেও ও শোনা গেল একই সুর। জানালেন, একসময় কলসীর চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সেই কলসীর চাহিদা নেই।
আরও পড়ুনঃ গ্রীষ্মে শরীর ঠান্ডা রাখতে তালশাঁসের জুড়ি মেলা ভার
মানুষজন আর কলসী কেনেন না। এখন প্রত্যেকের বাড়িতে ফ্রিজ হয়েছে। রয়েছে অত্যাধুনিক জল ধারণ করার ঠান্ডা পাত্র। যার কারণে আস্তে আস্তে চাহিদা কমেছে মাটির কলসীর। তাই প্রায় লুপ্ত হতে বসেছে মাটির তৈরী এই কলসী।
Koushik Adhikaryনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Murshidabad