Independence Day : নেতাজি, মহাত্মা থেকে দেশবন্ধু, পশ্চিম বর্ধমান বার বার রসদ জুগিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- news18 bangla
Last Updated:
সুভাষচন্দ্র বসুর মহানিষ্ক্রমণ বীজ বপন করেছিল ভারতের বুকে ব্রিটিশ শাসনের পতনের। দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি আসানসোল (Asansol) হয়ে পৌঁছেছিলেন গোমো স্টেশনে।
আসানসোল : সুভাষচন্দ্র বসুর মহানিষ্ক্রমণ বীজ বপন করেছিল ভারতের বুকে ব্রিটিশ শাসনের পতনের। দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি আসানসোল (Asansol) হয়ে পৌঁছেছিলেন গোমো স্টেশনে। তারপর সেখান থেকে ট্রেন ধরেছিলেন ব্রিটিশ সৈন্যের চোখে ধুলো দিয়ে। তবে তার আগেও অধুনা পশ্চিম বর্ধমানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল নেতাজির। নিউজ ১৮ লোকালের পাতায় উঠে এসেছে সেই গল্পই।
আসানসোলের সীতারামপুরের বেলুরই গ্রাম। সেখানে অভিজাত রায় পরিবার। রায় পরিবারের দুর্গাপুজো ও দশমীতে কামান দাগার গল্প হয়ত অনেকেই জানেন। রায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজিরও। রায়বাহাদুরের বাড়িতে এসে সময় কাটিয়েছেন তিনি। বেলুরইয়ের রায় পরিবারের কাছে সংরক্ষিত হয়েছে নেতাজির লেখা একটি চিঠি। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে নেতাজির কলকাতার বাড়ির ঠিকানা। সুভাষচন্দ্র বসু এসে যে চেয়ারে বসেছিলেন, সেই চেয়ারটিও সংরক্ষণ করা হয়েছে পরম যত্নে। তবে এই বিষয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চান না রায় পরিবারের সদস্যরা। নেতাজির স্মৃতি রায়বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যেই সীমিত রাখতে চান তাঁরা। জানা গিয়েছে, সোনার বাংলা কটন মিলের বোর্ড অফ ডিরেক্টরর্সের সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন নেতাজি। চিঠিটি লেখা হয়েছিল সীতারমপুরের জমিদার রায়সাহেব নকুলচন্দ্র রায়কে। চিঠিটি যেদিন রায় বাহাদুর হাতে পেয়েছিলেন, সেদিন রায়বাড়িতে পদার্পণ করেছিলেন নেতাজি। চিঠি পাঠানোর তারিখ ছিল ১৯৪০ সালের ১৬ জুন। সেদিনই অস্টিন গাড়িতে করে নেতাজি এসেছিলেন বেলুরইয়ের রায় বাড়িতে। বাড়ির একতলায় একটি কাঠের চেয়ারে বসেছিলেন।
advertisement
একটি ৪/৬ ইঞ্চির কাগজে চিঠিটি লেখা হয়েছিল। সেখানে প্রেরকের ঠিকানা ইংরাজিতে টাইপ করে লেখা আছে। ঠিকানা দেওয়া আছে ‘৩৮/২, এলগিন রোড, ক্যালকাটা’। চিঠির নীচে কালো কালিতে হস্তাক্ষর রয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের।
advertisement
তবে এই চিঠি লোকচক্ষুর আড়লেই রেখে দিয়েছেন রায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। নেতাজি যে অস্টিন গাড়িটি ব্যবহার করতেন, তা বর্তমানে সংরক্ষিত রয়েছে। ইতিহাসবিদদের গবেষণা মতে, ১৯৩০ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করতেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের বেশিরভাগ জায়গা এবং আসানসোল সংলগ্ন জায়গাগুলিতে এই অস্টিন গাড়ি নিয়েই ঘুরতেন তিনি। নেতাজির ব্যবহৃত এই অস্টিন গাড়িটি বর্তমানে ধানবাদের ভারত কুকিং কোল লিমিটেডের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
advertisement
এছাড়াও নেতাজি বেশ কয়েকবার এসেছিলেন রানিগঞ্জে। জানা যায়, তৎকালীন রানিগঞ্জ পুরসভার মেয়র ডঃ জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজির। ডঃ জ্যোতিষচন্দ্র ঘোষের মাধ্যমে বিপ্লবীদের সাহায্যের কাজ চলত। সেখানে অনেকবার এসেছেন গান্ধিজী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস-সহ বহু স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক। স্থানীয় ইতিহাস গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে একটি সমাবেশে যোগ দিতে রানিগঞ্জে এসেছিলেন নেতাজি। রানিগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে একটি মাঠে চার ঘণ্টা ব্যাপী জনসমাবেশে ভাষণ দেন নেতাজি। তারপর ভাষণ শেষে মাঠ সংলগ্ন রানিগঞ্জ স্কুলপাড়ার একটি বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানে রাত্রিযাপন করে পরদিন নেতাজি রওনা দেন পুরুলিয়ার দিকে। সবমিলিয়ে ইতিহাস গবেষকদের মতে, অধুনা পশ্চিম বর্ধমান জেলা বারবার রসদ জুগিয়েছে স্বাধীনতার ইতিহাসে। আজও শহরের অনেক জায়গায় লুকিয়ে রয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলেনর গৌরবময় স্মৃতি। বাঙালির গর্ব নেতাজির সঙ্গে এই জেলার নিবিড় যোগাযোগের অমর কাহিনী আজও সমানভাবে অমলিন।
view commentsLocation :
First Published :
August 14, 2021 4:41 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
Independence Day : নেতাজি, মহাত্মা থেকে দেশবন্ধু, পশ্চিম বর্ধমান বার বার রসদ জুগিয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে