জেলার 'ফার্স্ট বয়' শিলিগুড়ির রোহিত ! স্বপ্ন দেখছে ডাক্তারি পড়ার

Last Updated:

 ঘুম থেকে উঠে স্টাডি টেবিল তারপর নিজস্ব কাজ, ফের স্টাডি টেবিল। পড়াশোনাকেই নিজের নেশা বানিয়েছিল রোহিত।

#শিলিগুড়ি: একের পর এক যেন খুশির খবর শিলিগুড়িতে। এবার সিবিএসই-র দশমে সম্ভাব্য সেরা শহরের অরবিন্দপল্লির রোহিত বর্ধন। সুকনার টেকনো ইণ্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলের ছাত্র রোহিত। শিলিগুড়ির অরবিন্দপল্লির নিবাসী শিপ্রা বর্ধন ও রতন বর্ধনের ছেলে রোহিত এবার ৯৮.৬% পেয়ে তাঁর স্কুল তথা শহর পেরিয়ে গোটা জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে।
প্রত্যেকটি বিষয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর: ইংরেজি- ৯৯, বাংলা- ৯৭, অঙ্ক- ১০০, বিজ্ঞান - ৯৯, সোশিয়াল সায়েন্স- ৯৮, ইনফর্মেশন টেকনোলজি - ১০০। রোহিত ভবিষ্যতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে চায়। বড় হয়ে ডাক্তারের রূপে মানুষের সেবা করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। স্কুল কর্তৃপক্ষ রোহিতের সাফল্যে খুব আনন্দিত। স্কুলে বরাবরই খুব ভালো ফলাফল করেছে রোহিত। এছাড়াও কবিতা ও বৈজ্ঞানিক নানা অনুষ্ঠানে নামডাক রয়েছে তাঁর।
advertisement
নিউজ ১৮ লোকালের ক্যামেরায় ধরা পড়ল বর্ধন বাড়ির চিত্র! চারিদিকে মেডেল, ট্রফি ও শংসাপত্রের মাঝে বইয়ের ছড়াছড়ি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রোহিতের সাফল্যের কাহিনী যেন বাড়ির দেওয়ালের কোণে কোণে ফুটে উঠেছে। রোহিতের বাবা রতনবাবু ব্যবসায়ী। সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝেও ছেলেকে সময় দিতেন। মাও দেখতেন রোহিতের পড়াশোনা। একেই কোভিডে ঘরবন্দি, তার উপর এবার প্রথম বোর্ড পরীক্ষা। চিন্তা স্বাভাবিক। তবে পরীক্ষা হলে আরেকটু খুশি হতো রোহিত। বিজ্ঞানের প্রতি ভীষণ ঝোঁক ওঁর। স্কুলের  'অটল টিঙ্কারিং ল্যাবে' গেলেই দেখা মিলবে নানান সব যন্ত্রপাতির। ফাঁকা সময়ে ল্যাবেই কাটাত রোহিত।
advertisement
advertisement
ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায় সে। দুঃস্থদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতে চায়। এছাড়া শিপ্রাদেবী তাঁর ছেলেকে বরাবরই বলে এসেছেন,  'মানুষের পাশে থাকিস।'  মায়ের সেই কথাকেই মূলমন্ত্র করে জীবনে এগিয়ে যেতে চায় রোহিত। শিপ্রাদেবী ও রতনবাবু তো বেজায় খুশি। ছেলের সাফল্যের কথা শুনে চোখে দু'ফোটা খুশির জলও এসেছিল। এরপর আসতে থাকে শুভেচ্ছাবার্তা।
advertisement
রোহিতের মা শিপ্রা বর্ধন বলেন,  'প্রথম রেজাল্ট জানার পর আমার চোখে জল চলে এসেছিল। আমরা অনেকেই ভেবেছি এবার হয়ত সেভাবে পড়তে হবে না। অনলাইন পরীক্ষা! কিন্তু রোহিত ওর নির্দিষ্ট রুটিনের বাইরে বের হয়নি। ও আগে যেমন পড়াশোনা করত। তেমন এবারও করেছে। সারাদিন পড়ত। ঘুম থেকে উঠে স্টাডি টেবিল তারপর নিজস্ব কাজ, ফের স্টাডি টেবিল। পড়াশোনাকেই নিজের নেশা বানিয়েছিল রোহিত। আমি একদিন ওকে বলেছিলাম যে সবাই যাতে তোর নামেই আমাকে চিনুক। আজ ও আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে। ভবিষ্যতে ও ভালো মানুষ হোক, এটাই চাই।'
advertisement
রোহিতের বাবা রতন বর্ধন বলেন, 'স্কুলের টপার হয়েছে ও, ভেবেই খুব আনন্দ। রোহিতের সঙ্গে ওর পড়াশোনার সময় আমি না থাকতে পারলেও ওর মা থাকত। সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝেও আমরা ওকে সাপোর্ট করে গিয়েছি। আগামীতেও করব। ও নিজের লক্ষ্যে যাতে পৌঁছাতে পারে। সবাইকে বলব যাতে ওকে দু'হাত ভরে আশীর্বাদ করেন।'
তবে শুধুমাত্র পরিবারে নয়। নিউজ ১৮ লোকাল পৌঁছে গিয়েছিল সুকনার টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলে। সেখানেও যেন খুশির উৎসব। স্যার-ম্যাডামরা তো রোহিতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ স্কুলের ফাউন্ডিং প্রিন্সিপাল তথা নর্থ বেঙ্গল জোনের ডিরেক্টর মীরা ভট্টাচার্য বলেন, 'রোহিতের সাফল্যে আমরা সকলেই ভীষণ খুশি। শুধুমাত্র পড়াশোনায় সীমিত নয়, ও আবৃতিপাঠেও সাবলীল। এছাড়া বিজ্ঞানের বিষয়ে ওর আলাদা আগ্রহ। নর্থ বেঙ্গল সায়েন্স সেন্টার থেকেও বহুবার ওর ডাক পড়েছে। আগামীতেও আমরা রোহিতের সঙ্গে থাকব। ও নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাক এটাই কামনা করব। এছাড়া বাকি সবাই খুব ভালো ফলাফল করেছে। সবার মধ্যে নম্বরের ব্যবধান খুবই কম। তবে শারীরিকভাবে ওরা পরীক্ষা দিতে পারলে হয়ত ওদের আরও ভালো লাগত।'
advertisement
হাসিমুখে স্কুল ঘুরিয়ে দেখালেন প্রিন্সিপাল নন্দিতা নন্দী। নন্দিতাদেবী রোহিতের প্রশংসা করে বলেন, 'রোহিত যে এমন ফল করবে, এটা আমরা আশা করেছিলাম। ও ভীষণ উজ্জ্বল ছাত্র। বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টে ওর নামডাক রয়েছে। ওর সাফল্যে স্কুল বা ওর পরিবারই নয়। গোটা শহর ও জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে সে।'
এদিন রোহিতের বাড়িতে ছিল আনন্দের ছবি। ভবিষ্যত নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে ও। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে মা বাবার পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষেরও সেবা করতে চায়। সবার আশীর্বাদ নিয়ে এভাবেই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে সাফল্যের চূড়ার পথে পা বাড়িয়েছে রোহিত।
advertisement
ভাস্কর চক্রবর্তী
view comments
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
জেলার 'ফার্স্ট বয়' শিলিগুড়ির রোহিত ! স্বপ্ন দেখছে ডাক্তারি পড়ার
Next Article
advertisement
Weather Update: ২৫ ডিসেম্বর থেকেই বড় বদল আবহাওয়ায়! আরও নামবে পারদ, কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশার সতর্কতা বঙ্গে
২৫ ডিসেম্বর থেকেই বড় বদল আবহাওয়ায়! আরও নামবে পারদ, কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশার সতর্কতা
  • দক্ষিণবঙ্গে বুধবার পর্যন্ত এবং উত্তরবঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কুয়াশার সতর্কতা

  • সকালে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পরে পরিষ্কার আকাশ

  • কুয়াশার কারণে দিনভর শীতের অনুভূতি

VIEW MORE
advertisement
advertisement