#পূর্ব মেদিনীপুর: বৃটিশ রাজের বিরুদ্ধে বার বার গর্জে উঠেছে অভিবিক্ত মেদিনীপুর। বিপ্লবীদের রক্তে ভিজেছে মেদিনীপুর। এই মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের কার্যকলাপ দেখতে এসেছিলেন মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী। মেদিনীপুরের মাটিতে বাস করেছেন কিছুদিন। গান্ধীজীর বসবাসের স্মৃতিতে আজও বসে গান্ধী মেলা। মহিষাদল ব্লকের এক্তারপুর এলাকায় মহাত্মা গান্ধী ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পাঁচ দিন বসবাস করেছিলেন। মহিষাদল রাজবাড়ির অভ্যর্থনা ফিরিয়ে দিয়ে গান্ধীজী, খড়ের চালার কুটিরে বসবাস করেন।
১৯৪২ এর অগাস্ট আন্দোলনে উত্তপ্ত হয় অবিভক্ত মেদিনীপুরের মাটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। সর্বাধিনায়ক সতীশ সামন্তের নেতৃত্বে দু বছরের বেশি সময় ভারতবর্ষে স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বদেশী বিপ্লবীরা একের পর এক থানা দখল করে বৃটিশ শাসকের হাত থেকে। সুশীল ধাড়া নেতৃত্বে বিদ্যুৎ বাহিনী স্বাধীন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সেনাবাহিনী হিসেবে কাজ করে। অবিভক্ত মেদিনীপুরের মাটিতে স্বদেশীরা বারবার গর্জে উঠেছে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। সেই সময়কার বাংলার ছোট লাট ঘর গান্ধীজিকে রিপোর্ট পাঠায় স্বদেশী বিপ্লবীরা অহিংসার নীতি ছেড়ে হিংসার নীতি নিয়েছে। ছোট লাটের রিপোর্টের ভিত্তিতে সব সবকিছু খতিয়ে দেখতে মেদিনীপুরে আসেন গান্ধীজী।
মেদিনীপুরের কংগ্রেসীরা বিপ্লবের নামে হিংসায় উন্মত্ত হয়ে উঠেছে এবং তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠন করে অরাজকতা সৃষ্টি করছে – বাংলার ছােট লাটের এই অভিযােগ তদন্ত করানাের জন্য গান্ধীজি জলপথে ইং ১৯৪৫ সালে ২৫ শে ডিসেম্বর এসেছিলেন। ১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর গান্ধীজি মহিষাদলে আসবেন ঠিক হওয়ার পরে গান্ধীজির অভ্যর্থনার আয়ােজনের জন্য কমিটি তৈরী হয়। সতীশ সামন্ত ও নীলমনি হাজরাকে সেই কমিটির সম্পাদক করা হয় । সুশীল ধাড়া তখন মেদিনীপুর - জেলে বন্দি । সেখান থেকেই তিনি গান্ধীজিকে অভ্যর্থনার জন্য কবিতা লিখে পাঠান ।
শিক্ষক স্থানীয় ইতিহাস গবেষক সুদর্শন সেন বলেন, গান্ধীজি কলকাতা থেকে জাহাজে করে হুগলী নদী হয়ে রূপনারায়ণ নদীর মােহনা পর্যন্ত আসেন। বাকি রাস্তা গেঁওখালী হয়ে ছােট লঞ্চে করে মহিষাদল আসেন। গান্ধীজির অভ্যর্থনায় বড় বড় তােরণ বানানাে হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ জনতা শঙ্খ - ধ্বনি দিয়ে পুষ্প - বৃষ্টির মাধ্যমে গান্ধীজিকে অভ্যর্থনা জানায়। মহিষাদলে রাজপ্রাসাদে না গিয়ে এক্তারপুরে ক্যানেলের পশ্চিম পাড়ে একটি ছােট্ট ঘরে তিনি ছিলেন যা এখন গান্ধী - কুটির নামে পরিচিত।
২৫ থেকে ২৯ ডিসেম্বর মহিষাদলে গান্ধীজি থাকাকালীন প্রত্যেকদিন সভায় পাঁচ থেকে সাত লক্ষ জনসমাগম হত। গান্ধীজির এই ২৫ থেকে ২৯ ডিসেম্বর মহিষাদলে অবস্থানের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ওই দিন গুলোতে গান্ধী মেলা আয়োজিত হয়। দুই অক্টোবর গান্ধীজির জন্ম জয়ন্তীতে প্রতিবছর মহিষাদল গান্ধী কুটিরে সাড়ম্বরে পালিত হয় গান্ধী জন্ম জয়ন্তী।
সৈকত শী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Gandhi birth day, Mahisadal, Purba medinipur