লকডাউনে ফুচকা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে টিটাগড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রী
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
শিক্ষাগত যোগ্যতায় সে একজন ইঞ্জিনিয়রিং এর ছাত্রী। তবে বর্তমানে তার পেশা, ফুচকাওয়ালা।
#উত্তর ২৪ পরগনা :শিক্ষাগত যোগ্যতায় সে একজন ইঞ্জিনিয়রিং এর ছাত্রী। তবে বর্তমানে তার পেশা, ফুচকাওয়ালা। সে আবার ফুটপাতে ঠেলা সাজিয়ে ফুচকা নয়। রিতীমতো রেস্টরেন্ট এর আদলে তৈরি তার ফুচকার দোকান।টিটাগড়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্রী জ্যোতির্ময়ী সাহা তার এই উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় বেশ সাড়া ফেলেছেন এলাকায়।তবে হঠাত করে কেন এমনচিন্তা তারমাথায় এলো ?
করোনা মহামারীদেশের বহু মানুষকে কর্মহীন করে ফেলেছে ইতিমধ্যেই,তার আঁচ পড়েছেজ্যোতির্ময়ীর বাড়িতেও।বাবা, মা ওদাদা দেবজ্যোতি সাহাকে নিয়ে তার পরিবার। পরিবারের রোজগেরে বলতে মা সুশীলা সাহা আইসিডিএস এর কর্মী, দাদা কর্মরত একটি বেসরকারি সংস্থায়।জ্যোতির্ময়ীর বাবা শ্রীদাম সাহা চালাতেন একটি মুদির দোকান তবে তা দীর্ঘ কয়েক বছর আর্থিক অনটনের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছিলো।
advertisement
লকডাউনে প্রথম ধাক্কা আসে তার দাদার সংস্থার মাধ্যমে। বাজারের অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ার ফলে ওই সংস্থা তার দাদার মাইনে কমিয়ে দেয়। এদিকেজ্যোতির্ময়ীর স্বপ্নছিল প্রাইভেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে B.tech করে বড় কোন কোম্পানিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর কাজ পাওয়া।এই অবস্থায় তাকে তার স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবের মাটিতে দাঁড়াতে হয়। পরিবারের অর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে তাকে চিন্তা করতে হয় কীভাবে নিজে এই পরিস্থিতিতে সংসারে কিছু আর্থিক সহযোগীতা করতে পারবে। তার বাবার একটি বন্ধমুদিখানারদোকান ছিলো। প্রথমে পরিবারের তরফে চিন্তা ভাবনা করা হয় দোকানটি বিক্রি করে সংসারের আর্থিক সমস্যার সমাধান করা হবে।জ্যোতির্ময়ী অবশ্য এই সিদ্ধান্তে সায় দিতে নারাজ হয়। তারমাথায় আসে ব্যবসা করার কথা। কিন্তু কি ব্যবসা করবে ঠিক বুঝতে পারছিল না। চটজলদি ঠিক করে নেয় ফুচকা বিক্রি করবে। এই ভাবনা নেওয়াতে প্রথমদিকে অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকদের কাছে কটু কথাও শুনতে হয় সাহা পরিবারকে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ।শুরু হল ফুচকা বিক্রির ব্যবসা। দোকানের নাম দেওয়া হল 'ফুচকাওয়ালা'। খড়দহ স্টেশন রোডের পাশেই ফুচকাওয়ালা। এই দোকানে মুখরোচক ফুচকার টানে ভিড় জমাতে থাকেন এলাকার ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষেরা। প্রায় ১০ থেকে ১২ রকমের ফুচকা বিক্রি করতে থাকে তারা। করোনা মহামারীর এই লকডাউনের করুণ পরিস্থিতিতে তাদের এই উদ্যোগ অভিনব। নেটদুনিয়ায় ফুচকাওয়ালা ভাইরাল।হৈ চৈ পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। জ্যোতির্ময়ী এর এই অদম্য চিন্তাভাবনাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন আজ অনেকেই। পরিবারের আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে এসেছেনজ্যোতির্ময়ী। তবে এবার ফের তার নিজের স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতে লেগে পড়েছেন কাজে। ইঞ্জিনিয়র তাকে হতেই হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার এই উদ্ভাবনী ব্যবসাকে বন্ধ করে দেবেন তিনি। আজ ফুচকাওয়ালা ধীরে ধীরে একটি ব্রান্ড এর রূপ নিয়ে ফেলেছে। তাই এই ব্রান্ডকে কাজে লাগিয়ে আগামীদিনে আরো বড় কিছু করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে টিটাগড়ের এই সাহা পরিবার ও তাদের স্বপ্নের ফুচকাওয়ালা।
advertisement
advertisement
রাতুল ব্যানার্জি
Location :
First Published :
June 24, 2021 11:53 PM IST