Siliguri Durga Puja: স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে পুজোর প্রথম দিনেই উপচে পড়া ভিড় শহরজুড়ে, চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
Siliguri Puja: কোথাও থুতনিতে ঝুলতে দেখা গেল মাস্ক, কোথাও মোটেই নেই মাস্কের চিহ্ন, আবার কোনও পুজো প্যান্ডেলে প্রসাদ বিলিতে দেখা গেল ভিড়।
#শিলিগুড়ি: মহালয়ার রাতেই 'কিন্তু ' শব্দটা জানান দিয়েছিল বিশেষজ্ঞ থেকে প্রশাসনের মনে। পুজোর প্রথম দিনেই সেই কিন্তু সত্যি হয়ে দাঁড়ায়। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বাঁধভাঙ্গা ভিড়ে আমেজটাই বদলে দিল গোটা শহরজুড়ে।
শিলিগুড়ির বিভিন্ন ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতেও দেখা মিলল একই ছবি। মহাবীরস্থান, বিধান মার্কেট, হংকং মার্কেট চত্বরে উপচে পড়া ভিড়। ঠিক যেন সেই পুরনো ছবি। বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তা থেকে চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে বিশেষজ্ঞদের অগ্রীম করোনাসতর্ক বাণী বারবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।
তবুও কোথাও থুতনিতে ঝুলতে দেখা গেল মাস্ক, কোথাও মোটেই নেই মাস্কের চিহ্ন, আবার কোনও পুজো প্যান্ডেলে প্রসাদ বিলিতে দেখা গেল ভিড়। করোনার ভয় এখনও আছে, তবে উৎসবমুখর বাঙালি তার শ্রেষ্ঠ উৎসবকে কেন্দ্র করে আবেগের রাশ ঢিল দিতে যে নারাজ তা কিন্তু শহরের চালচিত্র বলে দিল। এদিকে বিশেষজ্ঞরাও বারংবার সেই করোনাবিধির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন।
advertisement
advertisement
আজ মহাসপ্তমী। নবপত্রিকা স্নানে দেবীর পুজো শুরু। চড়া রোদে বেশ গরম। তবুও সকাল থেকেই মানুষ রাস্তায়। কিন্তু পুজোর আনন্দে যেন ভাটা না পরে সেই কথাও মাথায় রেখেছে সাধারণ মানুষ। যেন সূর্যাস্তের অপেক্ষা। এরপরই শুরু প্যান্ডেল হপিং (pandal hopping)। সন্ধ্যা যতই রাতের দিকে গড়িয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি শিঁকেয় তুলে মানুষের ঢল তত মেতে উঠেছে পুজোয়।
advertisement
আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়িতে মামার বাড়িতে পুজো কাটাতে আসেন অনুরাধা মোদক। তিনি বলেন, 'কাজ সেরে ভাবলাম মার্কেট (market) থেকে পুজোর টুকিটাকি বাজারটা সেরে আসি। পা রাখার জায়গা নেই।
স্বাভাবিকভাবেই প্যাচপ্যাচে গরম আর অসহ্যকর পরিবেশে থাকা দায় হচ্ছিল। তাই এক বান্ধবীকে নিয়ে চলে গেলাম মলে। সেখানেও একই অবস্থা। অনেকটা খোলা জায়গা হলেও লোকের মুখে মাস্ক নেই। নজরদাড়িও এখন গা এলিয়েই চলছে। ভয় তো এক জায়গায়; ভ্যাকসিন নেওয়া সত্ত্বে শুনছি করোনা হচ্ছে। সেখানে নিজে এতোটা মেনে চলেও এই পুজোয় বেরিয়ে এই মাস্কহীনদের জন্য যদি আমরা সংক্রামিত (infected) হয়ে পরি, তার দায় কার থাকবে?'
advertisement
চম্পাসারিতে দোকান রয়েছে বাবলু বিশ্বাসের। দোকানের সামনে রাখা প্ল্যাকার্ড (placard)। সেখানে লেখা 'নো মাস্ক, নো সেল' (No mask no sell)। তবে অবাক করা বিষয়, ভিড় সামলাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ী। বাবলুবাবুর কথায়, 'অনেকেই আসছেন মাস্ক পরে। তবে আমরা সবাইকে সচেতন করছি। ভিড় বেড়ে গেলে সবাইকে লক্ষ্য করাও সম্ভব নয়। সবার নিজেদেরই উদ্যোগ নিয়ে সচেতন হতে হবে। একে অপরের পাশে না দাঁড়ালে এই সময় আরও বিপদ ডেকে আনবে।'
advertisement
শিলিগুড়ি গিভ লাইফ সোসাইটির (Give Life Society - Siliguri) প্রধান ঋত্বিক ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা একাধিকবার পথে নেমেছি। দিনকয়েক আগেও বিভিন্ন মার্কেট চত্বরে মানুষকে সচেতন করতে বিনামূল্যে মাস্ক বিলি করা থেকে ঢাক বাজিয়ে সচেতনতার বার্তা ছাড়াও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কিন্তু টনক নড়েনি মানুষের।
এভাবে পুজোর প্রথমদিনেই যদি এতটা কঠিন পরিস্থিতি হয়, তবে বাকি পুজোর দিনগুলো মণ্ডপে কি লক্ষ্য করা যাবে তা বড়ই চিন্তার বিষয়। কারণ বাজারেই এতো যা অসচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা এক বিরাট বড় প্রশ্ন তৈরি করছে পুজোর দিনগুলো নিয়ে।'
advertisement
তবে এ প্রসঙ্গে করোনা বিশেষজ্ঞ তথা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক-চিকিৎসক ডাঃ কল্যাণ খাঁ অবশ্য নিউজ ১৮ লোকালকে (News 18 Local) বলেন, 'মানুষের চিন্তায় বিরাট সমস্যা রয়েছে। শুরু থেকেই মানুষ ভেবেছে, লকডাউন হয়েছে মানে এখন কড়াকড়ি। লকডাউন নেই মানে করোনাও নেই। এই মানসিকতাটাই সর্বনেশে।
এছাড়া পুজো কমিটিগুলোকেও কিন্তু সেভাবে সব মানতে দেখা যাচ্ছে না। মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ লেখা থাকলেও প্রসাদ নিতে মণ্ডপের বাইরে যে ভিড় দেখা যাচ্ছে, তা রীতিমত উদ্বেগের বিষয়। বেশিরভাগ দর্শনার্থীর মুখে নেই মাস্ক। তাঁরা নিজেদের মতো যত্রতত্র ছিটিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সবই সচেতনতার অভাব। উদ্যোক্তাদের জন্য কোর্টের নির্দেশ যেন আইওয়াশ (eyewash)। এটা বললাম কারণ, নিজে দেখতে পাচ্ছি স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিনগুলো রাখা। ব্যস, ভেতরে অনেকের মুখেই মাস্ক নেই।'
advertisement
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'কিছু কিছু জায়গায় মাস্ক বিলি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মানুষের চিন্তায় কোথাও একটা গন্ডগোল রয়েছে। কোর্ট এবং সরকারের শিথিলতার সঙ্গে আমাদের নিজেদেরও কিছু সৌজন্যতা এবং দায়িত্ববোধ রাখতে হবে। যেই কোর্ট এবং সরকারের তরফে গাইডলাইন (Guideline) শিথিল করা হল, সেই দেখা গেল মানুষের ঢল। এখানে যদি নির্দেশ আসত যে লকডাউন পালন করতেই হবে। তখন কিন্তু সাধারণ মানুষ এটা পালন করতে বাধ্য হত।'
ডাবল ভ্যাকসিন (double vaccine) নেওয়া মানেই কি আমরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত? এই প্রশ্নের উত্তরে ডাক্তারবাবু নিউজ ১৮ লোকালকে (News 18 Local) বলেন, 'ভ্যারিয়েন্ট এবং ভ্যাকসিন (variant and vaccine), এই দুটি ক্ষেত্রকে আমাদের মাথায় রাখতেই হবে। টিকা নতুন ভ্যারিয়েন্টের উপর কার্যকারী হবে কিনা, আদৌ নতুন ভ্যারিয়েন্ট (variant) আসছে কিনা, এলেও বা সেটা কী, এসব বিষয় সামনে এলেই পরিষ্কার হবে আমাদের ভিক্টরি (Victory) -র দিন। তবে আমি আবার বলব, প্রশাসন যাতে আরও কড়া হোক। একেক জনকে সতর্ক করা বড্ড প্রয়োজন।'
Vaskar Chakraborty
view commentsLocation :
First Published :
October 12, 2021 10:05 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
Siliguri Durga Puja: স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় তুলে পুজোর প্রথম দিনেই উপচে পড়া ভিড় শহরজুড়ে, চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা