বুনো শুকর মারার সুযোগ নিয়ে জেলায় প্রবেশ করছে শিকারীরা, চিন্তিত পরিবেশ প্রেমীরা
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
পরিবেশ মঞ্চের সম্পাদক শুভ্রদ্বীপ ঘোষ জানান, "এলাকায় বুনো শুকরের উৎপাত কমলেই গ্রামবাসীদের শিকারীদের ডেকে আনার প্রবণতা কমবে
গ্রামীণ হাওড়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে বেড়ে চলেছে বুনো শুকরের অবাধ চরাচর। তাদের উপদ্রবে প্রতিনিয়ত ক্ষতি করছে আনাজের ক্ষেত , ধানের ক্ষেত , পান বোরজ সমেত নানান জমির ফলনকে । ফলে চাষ জমি বাঁচাতে কার্যত বাধ্য হয়েই জেলার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা খাল কেটে কুমির ডাকার মতো ডেকে আনছেন প্রতিবেশী জেলাগুলির পশু শিকারিদের । অর্থের বিনিময়ে নিজেদের দলবল নিয়ে রীতিমতো গাড়িতে করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জেলায় ঢুকছে এরা । ফাঁদ পেতে হয়তো বেশ কয়েকটা শূকরও ধরছে তারা । কিন্তু শূকর ধরার নামে শিকারিদের হাতে প্রাণ যাচ্ছে নেউল, বনবেড়াল, কাঠবিড়ালী, ভাম, বাঘরোলদের। ঠিক এমনটাই অভিযোগ জানাচ্ছেন জেলার পরিবেশ প্রেমীরা।
বৃহস্পতিবার হাওড়ার আমতা ১ ব্লকের মুক্তিরচক এলাকার জঙ্গল এলাকায় এরকমই একদল শিকারিদের ঘুরে বেড়ানোর খবর আসে জেলার পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের হেল্পলাইন নম্বরে । তৎক্ষণাৎ তাদের তরফ থেকে এই বিষয়ে দ্রুত যোগাযোগ করা হয় বনদপ্তর ও চন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়িতে । অতি দ্রুত সেই এলাকায় এসে শিকারিদের উদ্দেশ্যে খোঁজ শুরু করেন ওই পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্য ও স্থানীয় পরিবেশ প্রেমীরা । বেশ কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরাও এসে পৌঁছন সেই স্থানে। পরিবেশ মঞ্চের সম্পাদক শুভ্রদীপ ঘোষ স্থানীয় সূত্রে খোঁজ করে শিকারিদের গাড়িটির খোঁজ পান । সেই গাড়িতে তিনজন পশু শিকারিও উপস্থিত ছিল। তাদের বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয় । এরপর পুলিশ ও বনদফতরের কর্মীরা এলাকার জলা জঙ্গলগুলিতে আরও শিকারিরা উপস্থিত আছে কিনা সেই বিষয়ে খোঁজ লাগান।
advertisement
শিকারিদের খুঁজতে বনদপ্তর , পুলিশ ও পরিবেশ প্রেমীদের দীর্ঘক্ষণের এই দৌড়ঝাঁপ দেখে এলাকাবাসীদের মধ্যে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের । চাষীরা জানান বুনো শূকরের উৎপাত থেকে বাঁচতেই তারা ফোন করে শিকারীদের এই দলকে গ্রামে ডেকেছে শূকর শিকার করতে । পাশাপাশি বনদপ্তরের বিরুদ্ধে বুনো শুকরের উপদ্রব কমানোর ব্যাপারে কেন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না , সেই বিষয়ে প্রতিবাদও জানায় চাষিরা । পরে চন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জের উদ্যোগে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় । পুলিশ মোট ৩০ জনের শিকারির দলটিকে গ্রাম থেকে নিয়ে চলে আসে ও তাদের এইভাবে বন্যপ্রাণী শিকার করা যে বেআইনি সেই বিষয়টি ভাল করে বুঝিয়ে ছেড়ে দেয় ।
advertisement
advertisement
গ্রামীণ এলাকায় এই বুনো শুকরের সমস্যা সমাধানের জন্য বনদপ্তরের কাছে আবেদন জানান পরিবেশ মঞ্চের সদস্যরা । মঞ্চের সম্পাদক শুভ্রদ্বীপ ঘোষ জানান , " এলাকায় বুনো শুকরের উৎপাত কমলেই গ্রামবাসীদের শিকারীদের ডেকে আনার প্রবণতা কমবে । ফলে গ্রামীণ হাওড়ার বিপন্ন বন্যপ্রাণীরা শিকারিদের হাতে পড়ে নির্বিচারে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে। " পাশাপাশি গ্রামবাসীদের সচেতন করতে ওই সংগঠনের তরফ থেকে এই বিষয়ে প্রচার অভিযানও চালানো হবে বলে জানান তিনি ।
Location :
First Published :
September 10, 2021 3:52 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
বুনো শুকর মারার সুযোগ নিয়ে জেলায় প্রবেশ করছে শিকারীরা, চিন্তিত পরিবেশ প্রেমীরা