#নদিয়া: কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর ঐতিহ্য ও আবেগের একটি নাম চাষাপাড়া 'বুড়িমা'। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীর পুজোর প্রচলনের পর থেকেই চাষাপাড়া বারোয়ারি অর্থাৎ বুড়িমার পূজার প্রচলন হয়ে আসছে। কথিত আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কোনও এক সময় এই পুজোর খরচ ও ব্যয়ভার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। কীভাবে বহন করবেন এত খরচ? মা জগদ্ধাত্রী দেবী রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে স্বপ্নাদেশ দেন। চাষা পাড়ার যে সমস্ত লেঠেলরা আছেন তারাই দেবীর জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করবেন। রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো শুরুর কয়েক বছরের মধ্যেই এখানকার পুজো শুরু হয়েছিল বলে দাবি উদ্যোক্তাদের তবে বুড়িমা নামটা সত্তর পঁচাত্তর বছর আগে দেওয়া হয়েছিল বলে প্রবীণদের অভিমত।
কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সেরা আকর্ষণ বুড়িমা। এখানকার পুজো নিয়ে রাজা কৃষ্ণচ্ন্দ্র আলাদা করে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন এ রকম গল্প কোথাও নেই। তবে রাজা নিজের বাড়ির পুজোকে অন্যদের মধ্যে ছড়াতে উৎসাহী প্রজাদের অনুদান দিতেন। এ পুজোর নাম ছড়িয়েছে গোটা দেশে, এমনকি বিদেশের বাঙালি ভক্তদের মধ্যেও। বর্তমানে সাধারণ মানুষের দান এবং চাঁদাতেই বুড়িমা পুজো সম্পন্ন হয়। জগদ্ধাত্রী পুজোর আগের দিন থেকে অসংখ্য ভক্ত দেশ তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষ্ণনগরে চলে আসে বুড়িমা দর্শনে।
জাগ্রত দেবী বুড়িমার ভিড় সামলাতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুজোর দিন দান স্বরূপ নগদ অর্থ শাড়ি এবং স্বর্ণ অলংকার নিয়ে মানুষ মনের কামনা বাসনা পূরণ করতে আসে। অনেকের মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলেই এখনও পর্যন্ত জাগ্রত দেবীকে সকলে মেনে চলে। কৃষ্ণনগরে বুড়িমাকে নিয়ে রয়েছে অনেক অলৌকিক কাহিনী। দেবীর আগমন থেকে বিসর্জন সবেতেই রয়েছে এক অনন্য সৃষ্টি। দেবী বিসর্জন কৃষ্ণনগরের সমস্ত প্রতিমা আগে বিসর্জন হবে সবার শেষে বুড়িমা।
বুড়িমা যতক্ষণ না পর্যন্ত বিসর্জন হয় রাস্তার দুই ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে ভক্তকুল। কড়া পুলিশ প্রহরায় নিরাপত্তারক্ষীরা দেবী জগদ্ধাত্রীকে নিয়ে যান জলঙ্গীর ঘাটে। এ বিষয়ে চাষাপাড়া বুড়িমা পুজোর অন্যতম কর্তা গৌতম ঘোষ জানান, প্রশাসনের সাথে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। আমাদের প্রস্তুতি চলছে জোড় কদমে। কয়েক লক্ষ লোকের প্রসাদের ব্যবস্থা থাকে। করোনা বিধি মেনেই ভক্ত সমাগম হবে বুড়িমা মন্দির চত্বরে। মন্দিরের তিন দিক দিয়ে মানুষ প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জটলা এড়াতে অতিরিক্ত বাঁশের ব্যারিকেড করা হচ্ছে। অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে বেশি ভক্তের সমাগম চলবে না। মাত্রাতিরিক্ত চাপ যাতে না হয় তার সমস্ত রকম ব্যবস্থা আমরা আগেভাগে করে রাখছি। এ বার প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকেই তাকিয়ে আমরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jagadhatri Puja 2021, Krishnagar, Nadia