কার আবদারে এই রূপেই পূজিত হতে চেয়েছিলেন জগন্নাথ ?

Last Updated:

দেবতা বলতেই যেমন অপার সৌন্দর্যের উজ্জ্বল রূপটি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে এই তিন ভাইবোনের রূপ তাঁদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা ৷ অর্ধসমাপ্ত তিন মূর্তি ৷ হাত নেই, পা নেই ৷ বড় বড় বিস্ফোরিত চোখ ৷

#কলকাতা: দেবতা বলতেই যেমন অপার সৌন্দর্যের উজ্জ্বল রূপটি আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে এই তিন ভাইবোনের রূপ তাঁদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা ৷ অর্ধসমাপ্ত তিন মূর্তি ৷ হাত নেই, পা নেই ৷ বড় বড় বিস্ফোরিত চোখ ৷ এমনই রূপে ভক্তের কাছে পূজিত হতে চেয়েছিলেন ভগবান ৷ কেন জগন্নাতের মূর্তি অসমাপ্ত অবস্থাতেই পুজো করা হয় সে গল্প অবশ্য প্রায় সকলেরই জানা ৷
বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিলেন কলিঙ্গের রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন ৷ তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি মন্দির, নাম শ্রীক্ষেত্রে। এখন এই মন্দিরই পুরীর জগন্নাথধাম ৷ মন্দিরে বিগ্রহ স্থাপন করতে নীলমাধবের খোঁজ শুরু করলেন তিনি ৷ রাজার অনুচর এক ব্রাহ্মণ শবররাজ বিশ্ববসুর ঘরে নীলমাধবের খোঁজ পেলেন ৷ নীলমাধব দৈববাণী করেছিলেন, সমুদ্রের জলে ভেসে আসবে যে কাঠ সেই কাষ্ঠখণ্ড থেকেই তৈরি হবে বিগ্রহ ৷ সমুদ্রের জলে কাঠ পাওয়া গেল ৷ কিন্তু অত্যন্ত শক্ত সেই কাঠে কিছুতেই বিগ্রহ খোদাই করা যায় না ৷ শেষ পর্যন্ত শিল্পীর রূপ ধরে স্বয়ং জগন্নাথ এসে দাঁড়ালেন রাজপ্রাসাদের দরজায় ৷ তবে তাঁর একটাই শর্ত ৷ ২১ দিনের আগে কেউ যেন তাঁর কাজ না দেখে ৷ কিন্তু হঠাৎ একদিন ভিতর থেকে বিগ্রহ তৈরির কোনও শব্দ না পেয়ে ইন্দ্রদ্যুম্নের স্ত্রী দরজা খুলে দেখেন বিগ্রহ অর্ধেক তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে ৷ সেই বৃদ্ধ কারিগরের দেখা নেই ৷ তখন অনুশচনা করতে লাগলেন রাজা-রানি ৷ কিন্তু ভগবান দেখা দিয়ে বললেন, এই সবকিছু আগে থেকেই তৈরি করা ছিল ৷ তিনি এই রূপেই প্রতিষ্ঠিত হতে চান এবং ভক্তের পুজো পেতে চান ৷rath-yatra
advertisement
advertisement
কিন্তু কেন ভগবানের এই ইচ্ছে ? এর পিছনেও রয়েছে এক গল্প ৷ একদিন দ্বারকায় মহিষীরা রোহিনী মাতাকে জিজ্ঞাসা করেন, কৃষ্ণকে এতো সেবা করার পরও কেন ভগবান এত অন্যমনস্ক-অতৃপ্ত থাকেন ? কেন কৃষ্ণের এই বিরহ ? তখন রোহিনী সুভদ্রাকে একটি কক্ষের সামনে পাহারায় রেখে রুদ্ধদ্বারের ভিতর মহিষীদের কাছে কৃষ্ণের বিরহের কারণ বর্ণণা করতে লাগলেন ৷ এদিকে বোন সুভদ্রাকে একটি কক্ষের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কৃষ্ণ আর বলরাম সেখানে এসে উপস্থিত হল ৷ এদিকে রোহিনী সকলকে বলতে লাগলেন, কৃষ্ণের অভাবে বৃন্দাবনের গাছে গাছে ফুল ফোটে না, তরুলতা আনন্দে দুলে ওঠে না, ব্রজবাসীগণের প্রাণ যায় যায়, নন্দরাজা আর মাতা যশোদা প্রতিদিন ছানা মাখন তৈরি করে গোপাল গোপাল বলে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গিয়েছেন ৷ ঘরের মধ্যে থেকে বৃন্দাবনের এই দুর্দশার কথা শুনতে শুনতে দরজার বাইরে কৃষ্ণ, বলরাম আর সুভদ্রা বিকারগ্রস্থ হতে থাকলেন ৷ তাঁদের হাত-পা শরীরের মধ্যে ঢুকে যেতে লাগল ৷ চোখ বিস্ফোরিত হতে শুরু করল ৷
advertisement
ঠিক এই সময় নারদমুনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভগবানের ওই রূপ দর্শন করলেন ৷ তখন নারদ মুনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করলেন, হে ভগবান আমি আপনার যে রূপ দেখলাম সে রূপে সকলের সামনে আসুন ৷ ভক্ত বিরহে আপনি স্বয়ং যে বিকারগ্রস্ত হয়ে থাকেন, কৃপা করে আপনার এই করুণার মূর্তি জগতবাসীর কাছে প্রকাশ করুন। নারদ মুনির প্রার্থনায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে প্রতিশ্রুতি দিলেন যে দারুব্রহ্ম (জগন্নাথ) রূপে শ্রীক্ষেত্র বা পুরীতে আমি এই রূপে আবির্ভূত হব ৷
advertisement
নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে পরে মহারাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের ঘরে জগন্নাথের রূপে আসেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ৷
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
কার আবদারে এই রূপেই পূজিত হতে চেয়েছিলেন জগন্নাথ ?
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement