শুধু একালে নয়, প্রাচীন ভারতেও লাল ফুল পাঠিয়ে প্রণয় নিবেদন করতেন নারীরা
- Published by:Ananya Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
শুধু তা-ই নয়, ভ্যালেন্টাইন'স ডে-র মতো এই দেশেও ছিল ভালোবাসা উদযাপনের একটি বাৎসরিক দিন। যা সুবসন্তক বা মদনোৎসব নামে পরিচিত ছিল
#নয়াদিল্লি: ভ্যালেন্টাইন'স ডে আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ কি না, এ নিয়ে একাধিক তর্ক-বিতর্ক চলছে। তাও আবার বহু বছর ধরে। এই প্রসঙ্গে মাঝে মাঝে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে রাজনৈতিক দলের নীতি-পুলিশের ভূমিকার কথাও উঠে আসে। কিন্তু আমরা যদি প্রাচীন ভারতের দিকে দৃষ্টিপাত করি, তাহলে কিন্তু বেশ অবাক হতে হয়। আমাদের সনাতন সংস্কৃতি কখনই প্রেম এবং তার বহির্প্রকাশকে খারাপ চোখে দেখেনি। শুধু তা-ই নয়, ভ্যালেন্টাইন'স ডে-র মতো এই দেশেও ছিল ভালোবাসা উদযাপনের একটি বাৎসরিক দিন। যা সুবসন্তক বা মদনোৎসব নামে পরিচিত ছিল।
এই দুই নাম একই উৎসবের না কি তা দু'টি আলাদা উৎসব, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বাৎস্যায়ণের কামসূত্রে এই দু'টি নাম পাওয়া যায় এবং কালিদাসের লেখায় বিশেষ করে উঠে আসে মদনোৎসবের কথা। প্রাচীন ভারতের হৃদয়রীতি বুঝতে হলে এই দুই লেখকের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া উপায় নেই। নরনারীর শারীরিক এবং মানসিক সম্পর্ক তাঁরা যেভাবে তুলে ধরেছেন নিজেদের লেখায়, তা আজও অনেক বেশি আধুনিক।
advertisement
অনেকে বলেন, বসন্তের প্রথম দিনে অর্থাৎ পয়লা ফাল্গুন পালন করা হত সুবসন্তক উৎসব। অন্য দিকে, বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে পালন করা হত মদনোৎসব। প্রচলিত বিশ্বাস- এই তিথিতেই শিবের তৃতীয় নেত্রের কোপাগ্নিতে ভস্ম হয়েছিলেন কামদেব বা মদন। রীতি অনুযায়ী, এই দিনটিতে যুবক-যুবতীরা সেজেগুজে কোনও উদ্যানে দেখা করতেন, পরস্পরকে ভালোবাসা জানাতেন ফুল বা মালা দিয়ে। খ্রিস্টপূর্ব ১৫০ থেকে ৬০০ বছর আগে তাঁর সময়ে প্রচলিত এই রীতির কথা লিখে গিয়েছিলেন কালিদাস।
advertisement
advertisement
এবার আসা যায় লাল ফুলের প্রসঙ্গে। হালফিলে ভালোবাসা জানানোর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে লাল গোলাপ। প্রাচীন ভারতেও কিন্তু এক্ষেত্রে নানা লাল ফুলের প্রচলন ছিল। কেন না, বসন্তের অধিকাংশ ফুল-ই লাল, যেমন, পলাশ, অশোক, কৃষ্ণচূড়া। আবার লাল পদ্মের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। নারীদের সাজেও বিশেষ মাত্রা যোগ করত এই লাল পদ্ম, সব সাজ শেষ করে নারীরা এটি ধরে থাকতেন এক হাতে, একে বলা হত লীলাকমল। এই লীলাকমল প্রিয় পুরুষের হাতে তুলে দিয়ে তাঁকে ভালোবাসা জানানো হত। আবার, সুঙ্গ শাসক অগ্নিমিত্রকে নিয়ে লেখা মালবিকাগ্নিমিত্রম নাটকে কালিদাস উল্লেখ করেছেন যে রানি ইরাবতী লাল ফুল পাঠিয়ে রাজাকে তাঁর ভালোবাসা জানিয়েছিলেন।
advertisement
এই মদনোৎসবের সময় থেকেই জীবনসঙ্গী/জীবনসঙ্গিনী নির্বাচন করতেন যুবক-যুবতীরা। নারীরা স্বাধীন ভাবে বেছে নিতেন মনের মানুষকে, তাঁদের পরিবারই এই বিষয়ে তাঁদের উৎসাহিত করে তুলত। অনেক সময়ে শুধু মালা বদল করেই সম্পন্ন হত বিবাহ, একে বলা হত গন্ধর্ব বিবাহ। এই গন্ধর্ব বিবাহ ছিল সে কালে গণ্য হওয়া সেরা বিবাহানুষ্ঠান, কেন না সরাসরি দুই হৃদয় এই বিবাহে বেছে নিয়েছে পরস্পরকে। কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম নাটকে এই মতে বিবাহ করেছিলেন শকুন্তলা এবং রাজা দুষ্মন্ত।
Location :
First Published :
February 23, 2021 12:24 PM IST