Explained: সাধারণ জ্বর না কি ডেঙ্গু জ্বর, বুঝবেন কী ভাবে?

Last Updated:

How to differentiate between a dengue and a viral fever: ভাইরাল জ্বরের চেয়ে ডেঙ্গু অনেক বেশি উদ্বেগের। তাই এই দুই রোগের পার্থক্য জানা গুরুত্বপূর্ণ।

Representative Image
Representative Image
#কলকাতা: ডেঙ্গু (Dengue) সংক্রমণ একজন ব্যক্তির শরীরে দুর্বল প্রভাব ফেলতে পারে। ক্লান্তি, জয়েন্টে ব্যথার মতো অন্যান্য উপসর্গগুলির সঙ্গে জ্বর হল সব চেয়ে সাধারণ উপসর্গ। যার চিকিৎসা বাড়িতে থেকেই করা যেতে পারে। যাই হোক, গুরুতর উপসর্গের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। একই ভাবে, ভাইরাল জ্বর (Viral Fever) হলেও ঠাণ্ডা লাগা, গায়ে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায়। তবে এই জ্বর তিন থেকে পাঁচ দিন স্থায়ী হয়। যদিও ডেঙ্গু এবং ভাইরাল জ্বরের কয়েকটি উপসর্গ একই। তবে ভাইরাল জ্বরের চেয়ে ডেঙ্গু অনেক বেশি উদ্বেগের। তাই এই দুই রোগের পার্থক্য জানা গুরুত্বপূর্ণ (How to differentiate between a dengue and a viral fever)।
সাধারণত শীতকালে এবং বর্ষার শেষে ফ্লু-র প্রকোপ বেশি দেখা যায়। সাধারণ সর্দি-জ্বর ও ফ্লু-র উপসর্গ একই রকম হওয়ায় মানুষ অনেক সময় দু'টির পার্থক্য করতে পারে না। আমেরিকার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ মানুষ ফ্লু'তে আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় একশো কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। মৃত্যু হয় তিন-পাঁচ লাখ মানুষের। অন্য দিকে, ডেঙ্গু একটি এডিস মশাবাহিত ভাইরাল রোগ, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এডিস ইজিপ্টি (Aedes Aegypti) প্রজাতির মহিলা মশা (Mosquito) ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। এই মশা চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার এবং জিকা ভাইরাসের ভেক্টর। ডেঙ্গু একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং অপরিকল্পিত দ্রুত নগরায়ণের উপরে নির্ভর করে এই রোগের বৃদ্ধি ঘটে। ডেঙ্গু রোগের বিস্তৃত বিরাট। অনেক সময় মানুষ জানতেই পারে না যে সে সংক্রমিত। সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে ফ্লুর মতো গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেকে আবার মারাত্মক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন। যার কারণে রক্তপাত, অঙ্গ দুর্বলতা অথবা প্লাজমা লিকেজ হতে পারে। যথাযথ ভাবে চিকিৎসা না হলে মারাত্মক ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।
advertisement
advertisement
জ্বর বিভিন্ন রোগের একটি সাধারণ উপসর্গ:
জ্বর হল যে কোনও কিছুর সাধারণ উপসর্গ। তা সে ভাইরাল সংক্রমণ হোক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ (Viral Infection) হোক। ফ্লু, সাধারণ সর্দি-কাশি, কোভিড, এমনকী মারাত্মক টিউমারের মতো গুরুতর রোগেরও সাধারণ উপসর্গ জ্বর। অন্য উপসর্গ না থাকলে জ্বরের কারণ খোঁজা বেশ কঠিন হয়ে যায়। কোনও বিদেশি কণা (Foreign Particle) শরীরে ঢুকলে তার প্রতিক্রিয়ায় জ্বর হয়। ভাইরাস বা এমন কিছুর প্রতি শরীরের প্রতিক্রিয়া, যা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। এটি একটি চিহ্ন যে আপনার শরীর ঠিক নেই এবং নজর দেওয়া দরকার। জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে তা উদ্বেগজনক হতে পারে। তাই অবশ্যই এর কারণ খুঁজতে হবে।
advertisement
ডেঙ্গু জ্বর বনাম একটি সাধারণ ভাইরাল জ্বর, কী ভাবে দু'টির মধ্যে পার্থক্য করা যায়:
প্রায় সব অসুস্থতার ক্ষেত্রে জ্বর প্রথম উপসর্গ হতে পারে, যা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। ডেঙ্গু এবং একটি সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণের কারণে জ্বর আসতে পারে। সাম্প্রতিক অতীতে ডেঙ্গুর ঘটনা বেড়েছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সনাক্ত করা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই ডেঙ্গু দ্বারা সৃষ্ট জ্বর এবং ভাইরাল জ্বরের মধ্যে পার্থক্য করতে জানতে হবে। যদিও ভাইরাসজনিত জ্বর বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, সংক্রমিত ব্যক্তির ড্রপলেটের মাধ্যমে এই আরও ছড়িয়ে পড়ে। ডেঙ্গু জ্বর হল মশার কামড়ের (এডিস ইজিপ্টি) ফলাফল। একটি ভাইরাল জ্বর ৩-৫ দিন স্থায়ী হতে পারে, যেখানে ডেঙ্গু জ্বর ২-৭ দিন স্থায়ী হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে তা বাড়তে পারে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করে। সাধারণ জ্বর বা ফ্লু হলে শ্বাসযন্ত্রে প্রভাব ফেলে। শরীরে আক্রমণ করার ২ থেকে ৫ দিন পর থেকে একাধিক উপসর্গ প্রকাশ পায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ জ্বরে সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হতে সময় লাগে প্রায় ২ সপ্তাহ। উপরন্তু, ভাইরাল জ্বর সংক্রামক এবং এক ব্যক্তির থেকে অন্যের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে, ডেঙ্গু স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াতে পারে না, এটা বায়ুবাহিত নয়।
advertisement
ডেঙ্গু উচ্চ মাত্রার জ্বর সৃষ্টি করে:
যখন ভাইরাল জ্বর ডেঙ্গু সংক্রমণের মতো গুরুতর নাও হতে পারে। সর্দি, গলা ব্যথা, হালকা শরীরে ব্যথা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ হল সাধারণ ভাইরাল সংক্রণের উপসর্গ। তবে ডেঙ্গু রোগীরা আক্রান্ত হওয়ার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রচণ্ড জ্বর, তীব্র শরীরে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা এবং ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ অনুভব করতে পারে।
advertisement
কম প্লেটলেট ডেঙ্গুর একটি উল্লেখযোগ্য উপসর্গ:
ডেঙ্গু-জনিত জ্বর শনাক্ত করার সর্বোত্তম এবং নিশ্চিত উপায় হল সম্পূর্ণ রক্তের প্লেটলেটের সংখ্যা পরীক্ষা (Platelet Count), ডেঙ্গু এনএস ওয়ান অ্যান্টিজেন পরীক্ষা (Dengue NS1 Antigen Test) করা। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে ডেঙ্গু রোগীদের প্রায় ৮০-৯০ শতাংশের প্লেটলেট সংখ্যা ১ লাখের কম হয়। বাকি ১০-২০ শতাংশ রোগী প্লেটলেট কমে ২০ হাজার বা তার কম হয়ে যায়। ভাইরাল সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এই ধরনের জটিলতায় ভোগে না। যাই হোক, কম প্লেটলেট সংখ্যা অন্যান্য অসুস্থতার দিকে নির্দেশ করতে পারে। তাই পরীক্ষা করা ভালো।
advertisement
ভারতের ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে:
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলি থেকে জানা যাচ্ছে যে ভারতের অনেক রাজ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে, যার মধ্যে রয়েছে কেরল, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং ওড়িশার মতো রাজ্যগুলি। এই বছর, মশাবাহিত রোগে সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, আর এ সবই হচ্ছে ডেঙ্গু ভাইরাসের নতুন ডি-২ স্ট্রেনের (D2 Strain) কারণে। যা ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপের মধ্যে একটি। বাকিগুলি হল- ডিইএনভি ১ (DENV-1), ডিইএনভি ৩ (DENV-3) ও ডিইএনভি ৪ (DENV-4)। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে নতুন এই ডি-২ স্ট্রেন জ্বর, বমি, জয়েন্টে ব্যথা ও গুরুতর জটিলতার কারণ হতে পারে। যার ফলে ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর এবং ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম হতে পারে।
advertisement
প্রতিরোধই চাবিকাঠি:
যেহেতু একটি নিরাপদ এবং কার্যকর ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তৈরির অনুসন্ধান এখনও চলছে, তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলা এবং প্রতিরোধমূলক প্রোটোকল মেনে চলা সর্বোত্তম উপায়। এটি মনে রাখা উচিত যে ডেঙ্গু একটি সংক্রমণ হিসাবে রয়ে গিয়েছে যা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্মূল করা যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত ভালো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এটি সম্পূর্ণ রূপে এড়ানো যায়। দরজা, জানালার পর্দা, প্রতিষেধক, কীটনাশক সামগ্রী, কয়েলের ব্যবহার করতে হবে। ত্বকের সংস্পর্শে যাতে মশা কম আসতে পারে এমন পোশাক অবশ্যই পরতে হবে। প্রাদুর্ভাবের সময় স্প্রে হিসাবে কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। মশা ডিম পারতে পারে এমন জায়গায় নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। খোলা পাত্রে জল জমতে দিলে হবে না, এ জন্য নিয়মিত নজরদারি করতে হবে।
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইলের (Lifestyle News in Bengali)সব খবরের আপডেট পান নিউজ 18 বাংলাতে ৷ যেখানে থাকছে হেলথ টিপস, বিউটি টিপস এবং ফ্যাশন টিপসও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইনগুলি অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ সব খবরের আপডেট পেতে ! News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Explained: সাধারণ জ্বর না কি ডেঙ্গু জ্বর, বুঝবেন কী ভাবে?
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement