বয়ঃসন্ধির সময় মেয়েদের শরীরে নানা রকম পরিবর্তন আসে। তার মধ্যে অন্যতম হল ঋতুস্রাব বা মাসিক। কিন্তু প্রথম ঋতুস্রাব কবে শুরু হবে, এটা তেমন জোর দিয়ে বলা যায় না। আজ প্রথম ঋতুস্রাব বা প্রথম পিরিয়ডসের প্রসঙ্গেই আলোচনা করছেন বেঙ্গালুরুর রিচমন্ড রোডের ফর্টিস হাসপাতালের ওবেস্ট্রেটিকস এবং ইউরো গাইনিকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. রুবিনা শাহনওয়াজ।
প্রথম পিরিয়ডস কবে শুরু হয়?
সাধারণত ১০ থেকে ১২ বছর বয়সেই প্রথম ঋতুস্রাব শুরু হয়। তবে যদি শরীরের বিএমআই গড় হিসেবের তুলনায় বেশি থাকে, তবে তা আরও আগেই শুরু হয়ে যেতে পারে। শুধু তা ই নয়, আরও কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল ওজন কম, মানসিক চাপ এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
দেহে বয়ঃসন্ধির প্রক্রিয়া চলছে, সেটা বোঝা যাবে কী করে?
আসলে স্তনের আকার বৃদ্ধিই বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ। এ-ছাড়া আন্ডারআর্ম ও পিউবিক হেয়ার বৃদ্ধি, শরীরের আকার-আকৃতিতে নানা পরিবর্তনও এর অন্যতম প্রধান লক্ষণ। বয়ঃসন্ধির প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার ২ বছর পরেই প্রথম ঋতুস্রাব হয়। এমনকী ৩ থেকে ৬ বছর পর্যন্তও সময় লাগতে পারে। বয়ঃসন্ধির লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরে ১৫ বছর বয়সেও যদি ঋতুস্রাব না-শুরু হয়, তা-হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রাথমিক উপসর্গ:
ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ বৃদ্ধি
তলপেটে ক্র্যাম্প
অ্যাকনে
পেটে ফোলা ভাব
অতিরিক্ত পরিমাণ মুড স্যুয়িং
প্রথম ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে ডিসচার্জের রঙ কী রকম হবে?
ডিসচার্জের রঙ গাঢ় বাদামি কিংবা উজ্জ্বল লাল এমনকী গাঢ় লালও হতে পারে।
কতটা পরিমাণ রক্তপাত হতে পারে?
প্রথম ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে কখনও কখনও মাঝারি স্পটিং হয়। তো আবার ছোট ছোট ব্লাড ক্লট-সহ হেভি ফ্লো হতে পারে।
প্রথম পিরিয়ড কত দিন স্থায়ী হবে?
কিছু কিছু মেয়ের প্রথম ঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে দিন দু’য়েক স্পটিং হতে পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রেই তা এক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। এর গড় মেয়াদ হতে পারে ২ থেকে ৭ দিন।
পিরিয়ডস শুরু হওয়ার প্রথম তিন বছর দু’টি মাসিকের মধ্যে সময়কাল ২ থেকে ৩ মাস কিংবা তার বেশিও হতে পারে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত যদি:
৭ দিনের বেশি স্থায়ী হয়
২টি মাসিকের মধ্যে সময় ২০ দিলের কম হয়
মাথা ঘোরে/ক্লান্তি আসে
প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়
প্রথম ঋতুস্রাব শুরুর ২-৩ বছর পরে যদি দু’টি মাসিকের মধ্যেকার সময়কাল ৪৫-৬০ দিন হয়
যত্ন-পরিচর্যা:
প্রথম পিরিয়ডসের অভিজ্ঞতা হলে অর্থাৎ জামা-কাপড়ে ঋতুস্রাবের দাগ হতে থাকলে প্রথমেই টিস্যু পেপারের মতো শোষণকারী উপাদান ব্যবহার করতে হবে। আর পরিবারের প্রাপ্তবয়স্ক কোনও সদস্যের পরামর্শ নিতে হবে। নিজস্ব পছন্দের উপর মেনস্ট্রুয়াল হাইজিনের সরঞ্জাম ব্যবহার করা উচিত। আজকাল পিরিয়ড আন্ডারওয়্যার এবং স্যানিটারি ন্যাপকিনের পাশাপাশি ট্যাম্পন ও মেনস্ট্রুয়াল কাপ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন : মূল্য ৯০ লক্ষ! মহার্ঘ্য মার্সিডিজ বেঞ্জ কিনলেন 'এমবিএ চাওয়ালা' প্রফুল্ল
ক্র্যাম্প দূর করতে:
তলপেটে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
উষ্ণ তরল পানীয় পান করতে হবে।
ব্যথামুক্তির জন্য প্যারাসিটামল অথবা মেফেনেমিক অ্যাসিডের মতো ওষুধ সেবন করা যায়।
নিজেকে সক্রিয় রাখতে হবে।
মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন:
প্রতি ৩-৪ ঘণ্টায় প্যাড বদলাতে হবে। আর মেনস্ট্রুয়াল কাপ খালি করতে হবে প্রতি ৬-৮ ঘণ্টায়।
প্রথম প্রথম জামা-কাপড়ে দাগ লাগতেই পারে, তাই নিজের সঙ্গে বেশি করে স্যানিটারি উপকরণ রাখতে হবে।
পিউবিক অংশ বাইরে থেকেই পরিষ্কার করতে হবে। ভ্যাজাইনার ভিতরের দিক পরিষ্কার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
অ্যাপ অথবা জার্নালের মাধ্যমে পিরিয়ডস ট্র্যাক করতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Health Tips