ধুঁকছে গুপ্তিপাড়ার ঐতিহ্যময় গুপো সন্দেশ, বাংলার প্রথম ব্র্যান্ডেড সন্দেশ
Last Updated:
ধুঁকছে গুপ্তিপাড়ার ঐতিহ্যময় গুপো সন্দেশ, বাংলার প্রথম ব্র্যান্ডেড সন্দেশ
#কলকাতা: হাওড়া-কাটোয়া লাইনে পড়ে গুপ্তিপাড়া স্টেশন। সড়ক পথে পড়বে কল্যাণী একস্প্রেসওয়ে পেরিয়ে ঈস্বর-গুপ্ত সেতু ছাড়িয়ে অম্বিকা-কালনার রাস্তায় । এখানেই জন্মেছিলেন বিখ্যাত কবিয়াল ভোলা ময়রা।
গুপ্তিপাড়ার বড়বাজারে ঢুকে যে-কোনও কাউকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে ভোলা ময়রার দোকান।
কিন্তু মজার বিষয়, ভোলা ময়রার কোনও মিষ্টির দোকান ছিলই না। ভোলা ময়রার বাবা ছিলেন মিষ্টির ব্যবসায়ী। ভোলার কোনওদিনই মিষ্টির প্রতি নজর ছিল না। যত নজর ছিল ওই কবিগানেই। ১২-১৩ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে যান! তারপর বাড়ির লোকেরা আর তাঁকে স্বীকার করেননি। বাকি জীবনটা কাটিয়েছেন বাগবাজারেই। গুপ্তিপাড়ায় তাঁর আদিবাড়ি যেখানে ছিল, সেই জমিটা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এখন ওখানে ব্রাহ্মণরা থাকেন। নতুন করে ভিটেবাড়ি হয়েছে। ভোলা ময়রার আর কোনও স্মৃতিই নেই গুপ্তিপাড়ায়।
advertisement
advertisement
ভোলা ময়রার কোনও চিহ্ন গুপ্তিপাড়া ধরে রাখতে না পারলেও, এখনও ধরে রেখেছে এখানকার একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্য! গুপ্তিপাড়ার গুপো সন্দেশ। বাংলা ভাগ হওয়ার আগে থেকেই এখানে তৈরি হয় এই সন্দেশ। কলকাতা যখন তৈরি হয়নি, ছিল না রেলপথও, তখন থেকেই গুপ্তিপাড়া থেকে নৌকা করে সন্দেশ যেত বিভিন্ন জায়গায়। গুপো সন্দেশের পাশাপাশি বানানো হত মুড়কি, বাতাসা, মাখা সন্দেশ, বাটা সন্দেশ! অনেক পরে গুপো সন্দেশই হল প্রথম ব্র্যান্ডেড সন্দেশ। সেইসময় গোটা কলকাতায় এখান থেকেই সন্দেশ সরবরাহ করা হত।
advertisement
এখনও যে কলকাতায় গুপো সন্দেশ যায় না, তেমনটা নয়! কিন্তু চাহিদা কমে এসেছে। কিছু বাধা খদ্দের রয়েছেন, যাঁরা এখনও কোনও অনুষ্ঠানে এখান থেকেই গুপো সন্দেশ নিয়ে যান কলকাতায়।
কীভাবে বানানো হয় এই সন্দেশ? বিশাল কড়াইয়ে ছানা পাক দিয়ে, সেই ছানা কাপড়ে ভরে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে বাড়তি জল বের করে দেওয়া হয়। সেই পেটানো ছানা হাতে পাক দিয়ে জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় গুপো সন্দেশ। শীতকালে ছানায় মেশানো হয় গুড়, অন্যসময় চিনি। এই সন্দেশের আরেক নাম জোড়া সন্দেশ।
advertisement
এখন গুপ্তিপাড়ায় কয়েকটা মাত্র দোকানই রয়েছে, যারা এখনও গুপো সন্দেশ বানায়। আসলে গুপ্তিপাড়াতেও এখন নানা কেতাদার সন্দেশের রমরমা! কাজেই, কমছে গুপোর চাহিদা।
এক মিষ্টির দোকানের মালিক জানালেন,
গুপো সন্দেশ যেমন হারিয়ে যাওয়ার পথে, তেমনি বোধহয় আর কিছুকাল পরে বন্ধ হয়ে যাবে আমাদের গুপ্তিপাড়ার অন্যতম ঐতিহ্য বিন্ধ্যবাসিনী মায়ের পুজো। এটাই, অবিভক্ত বাংলার প্রথম বারোয়ারি দুর্গা পুজো। যদিও মায়ের যগদ্ধাত্রী রূপেরই পুজো হয় এখানে। এই পুজো শুরু হওয়া নিয়ে একটা গল্প আছে। সেই সময় শুধুমাত্র বড়লোকেদেরই পুজো করার অধিকার ছিল। গরীব বা নিচুজাতের লোকেরা সেই পুজোতে প্রবেশের অধিকার পেতেন না। তখন এই অঞ্চলের ১২জন বন্ধু, যাঁরা বড়লোক ছিলেন না, সমাজের উঁচু জাতের মধ্যেও পড়তেন না, তাঁরা এক হয়ে বিন্ধ্যবাসিনী মায়ের পুজো শুরু করেন। ১২জন বন্ধু মিলে শুরু করেছিলেন বলে পুজোর নাম হয় 'বারোয়ারি' (১২জন ইয়ার অর্থাৎ বন্ধু থেকে বারোয়ারি কথাটা এসেছে)। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় এই পুজো হয়। এটা ১দিনের পুজো। সপ্তমী থেকে দশমীর পুজো, একদিনেই সেরে ফেলা হয়। এখনও আমরা গ্রামের মানুষেরা মিলে এই পুজো করে আসছি, কিন্তু কতদিন পারব, জানি না! অনেকটা ওই গুপো'র মতোই! এখনও বানিয়ে যাচ্ছি! চাইছি, ছেলেপিলেরাও এই ব্যবসায় আসুক, কিন্তু আসছে না। সরকার বা অন্য কোনও সংস্থার তরফ থেকেও এই মিষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কোনওরকম আর্থিক সাহায্য পাচ্ছি না। দেখি, যতদিন পারব আমরাই আমাদের ঐতিহ্যকে আগলে রাখব।

.quote-box { font-size: 18px; line-height: 28px; color: #767676; padding: 15px 0 0 90px; width:70%; margin:auto; position: relative; font-style: italic; font-weight: bold; }
.quote-box img { position: absolute; top: 0; left: 30px; width: 50px; }
.special-text { font-size: 18px; line-height: 28px; color: #505050; margin: 20px 40px 0px 100px; border-left: 8px solid #ee1b24; padding: 10px 10px 10px 30px; font-style: italic; font-weight: bold; }
.quote-box .quote-nam{font-size:16px; color:#5f5f5f; padding-top:30px; text-align:right; font-weight:normal}
.quote-box .quote-nam span{font-weight:bold; color:#ee1b24}
@media only screen and (max-width:740px) {
.quote-box {font-size: 16px; line-height: 24px; color: #505050; margin-top: 30px; padding: 0px 20px 0px 45px; position: relative; font-style: italic; font-weight: bold; }
.special-text{font-size:18px; line-height:28px; color:#505050; margin:20px 40px 0px 20px; border-left:8px solid #ee1b24; padding:10px 10px 10px 15px; font-style:italic; font-weight:bold}
.quote-box img{width:30px; left:6px}
.quote-box .quote-nam{font-size:16px; color:#5f5f5f; padding-top:30px; text-align:right; font-weight:normal}
.quote-box .quote-nam span{font-weight:bold; color:#ee1b24}
}
স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইলের (Lifestyle News in Bengali)সব খবরের আপডেট পান নিউজ 18 বাংলাতে ৷ যেখানে থাকছে হেলথ টিপস, বিউটি টিপস এবং ফ্যাশন টিপসও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইনগুলি অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ সব খবরের আপডেট পেতে ! News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
April 21, 2018 5:16 PM IST