চল্লিশ পেরিয়ে ভাল থাকার রহস্য? কী সাংঘাতিক, বিবাহবিচ্ছেদ কেন উঠে আসছে কারণ হিসেবে

Last Updated:

না, শুধু রুপোলি জগতে নয়। বাস্তবেও এমন সম্পর্কের সমীকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে মানসিক সুস্বাস্থ্য।

চল্লিশ পেরিয়ে ভাল থাকার রহস্য? কী সাঙ্ঘাতিক, বিবাহবিচ্ছেদ কেন উঠে আসছে কারণ হিসেবে
চল্লিশ পেরিয়ে ভাল থাকার রহস্য? কী সাঙ্ঘাতিক, বিবাহবিচ্ছেদ কেন উঠে আসছে কারণ হিসেবে
কলকাতা: এক সময় স্বপ্নের বিবাহ বাসর রচনা করেছিলেন হৃতিক রোশন আর সুজান খান। রাজপুত্রের মতো তাঁদের দুই ছেলে। কিন্তু একদিন ভেঙে গেল সংসার। কিন্তু ভাঙেনি ছোটবেলার বন্ধুত্ব। ছেলেদের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই দেখা যায় হৃতিক-সুজানকে। সম্প্রতি দু’জনের জীবনেই এসেছে নতুন বন্ধু। পঞ্চাশ ছুঁই-ছুঁই বয়সে নতুন করে সংসার বাঁধার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে সুজানের। হৃতিকের পাশেও এসেছেন নতুন সঙ্গী।
না, শুধু রুপোলি জগতে নয়। বাস্তবেও এমন সম্পর্কের সমীকরণের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে মানসিক সুস্বাস্থ্য। গবেষণা বলছে, ৪০ পেরোনোর পর বিবাহবিচ্ছেদ হলে আদতে লাভ হতে পারে, তা যেমন সম্পর্কের ক্ষেত্রে, তেমনই মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও। আর এই দুইয়ের প্রভাব শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে পড়া অবশ্যম্ভাবী।
পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক তাঁর গবেষণায় দেখেছেন, বিবাহবিচ্ছেদের পর প্রায় ৪৩ থেকে ৪৬ শতাংশ মানুষ ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অথচ, জীবনের এই বিশেষ পর্বের বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে।
advertisement
advertisement
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, ৪০-এর পর বিবাহবিচ্ছেদ কী ভাবে জীবনে ইতিবাচক মোড় এনে দিতে পারে।
১. অসুস্থ সম্পর্ক থেকে মুক্তি
জীবনের একটা বড় সময় যদি অসুস্থ সম্পর্কের মধ্যে কেটে যায়, তা হলে বার্ধক্যে আরও বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে। দিনের পর দিন বয়ে চলা অসুস্থ সম্পর্ক এবং তারই সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানসিক চাপ ও অশান্তি আসলে ভিতরে ভিতরে শেষ করে দিতে পারে একজন মানুষকে। তাই ৪০-এর পরে বিবাহবিচ্ছেদকে আশীর্বাদ হিসেবেই দেখা উচিত। এটা এমন একটা সময়, যখন কোনও ব্যক্তি মানসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে যথেষ্ট সাবলম্বী এবং নিজের দায়িত্ব নিতে সক্ষম। আবার, একটা নতুন জীবন শুরুর পক্ষেও এমন কিছু দেরি হয়ে যায়নি তত দিনে। ফলে এটাই আদর্শ সময়।
advertisement
২. সন্তানের পক্ষেও মঙ্গল
বিবাহ বিচ্ছেদ সন্তানের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু অসুস্থ দাম্পত্যের সন্তান আরও অনেক বেশি নেতিবাচক পরিবেশে বড় হয়। তার প্রভাব সুদূর প্রসারী, যা সন্তানের জীবনকেও তছনছ করে দিতে পারে।
অনেক সময়ই দেখা যায় অসুস্থ দাম্পত্যের ফলে বাবা, মা সন্তানকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে পারেন না। তাঁরা সময় পায় না। এর থেকে অনেক ভাল, একলা মা বা একলা বাবা হিসেবে সন্তানকে অনেক সময় দেওয়া। তা ছাড়া, অশান্তির মধ্যে বড় হতে থাকলে, অসুস্থ দাম্পত্যকেই স্বাভাবিক বলে ভেবে ফেলতে পারে কোনও শিশু। ভবিষ্যতে নিজের সম্পর্কগুলির ক্ষেত্রেও হয়তো সে একই ভুল করে বসবে। তাই একেবারে শুরুতেই সন্তাকে আদর্শ সম্পর্কের একটা ধারণা দিয়ে রাখা প্রয়োজন। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয় তো তাকে বাস্তবটা বুঝতেও সাহায্য করতে পারে।
advertisement
৩. নিজের জন্য বাঁচা
জীবনের শুরুতে দায়িত্ব, প্রতিশ্রুতির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকতে থাকতে মানুষ একটা সময় নিজেকেই ভুলে যেতে শুরু করে। বিবাহ বিচ্ছেদের অব্যবহিত পরে তাঁদের মধ্যে নিজেকে দেখার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। শারীরিক, মানসিক ভাবে একটা নতুন উদ্যম তৈরি হতে পারে। ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা থেকে শুধু নিজের জন্য কাজ করা, নিজেকে সময় দেওয়া, নিজের যত্ন নেওয়ার উপলব্ধি তৈরি হয়। যা, আদতে উপকার করে।
advertisement
৪. কেরিয়ারে সাফল্য
দেখা গিয়েছে, বিচ্ছেদের পর চল্লিশোর্ধ্ব মানুষ নিজের কাজে ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছেন। সেটাই স্বাভাবিক। একদিকে পরিবারের দায়িত্ব সামলে কাজ করার ক্লান্তি কেটে গিয়েছে তাঁর। অন্যদিকে নিজের জন্য কাজ করার তাড়নাও বেড়েছে। এ দুয়ে মিলে কেরিয়ারের উন্নতি ডেকে আনতে পারে। আরও অনেক বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী করে তুলতে পারে।
advertisement
৫. বাধা গতের ভাবনা থেকে মুক্তি
একজনের প্রতি অনুগত প্রেম এবং সে সংক্রান্ত মিথ ভেঙে ফেলাও জীবনের জন্য জরুরি। বৈবাহিক সম্পর্কে থাকতে থাকতে সম্পর্কের প্রতি প্রত্যাশা বেড়ে যায়। আর অতি প্রত্যাশা থেকেই তৈরি হতে পারে ভাঙনের সূত্রপাত। বিচ্ছেদের ফলে সে সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হতে পারে। তার ফলে পরবর্তী জীবনের প্রত্যাশার চাপ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
advertisement
৬. পুরনো প্রেমে ফেরা
অনেক সময়ই দেখা যায়, বিচ্ছেদের পরও দম্পতির মধ্যে ভালোবাসা বা বন্ধুত্ব কমেনি। সেটা খুবই ভাল লক্ষণ। আসলে নৈমিত্তিক সংসারের জাঁতাকলে পুরনো প্রেমে পেষাই হয়ে গিয়েছিল হয় তো। বিচ্ছেদ সেখানে নতুন মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। প্রাক বৈবাহিক প্রেমের আমেজ ফিরে আসতে পারে অনেক দম্পতির মধ্যেই।
৭. দীর্ঘ জীবন
সুস্থ জীবনই দীর্ঘ জীবনের রহস্য। আর শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য। অসুস্থ, অসুখী দাম্পত্য থেকে বেরিয়ে আসা যার এক এবং একমাত্র উপায় হতে পারে।
যেমন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে প্রবীণা হিসেবে পরিচিত এমা মোরানো (Emma Morano) বলেছিলেন, মধ্য বয়সের বিবাহবিচ্ছেদই তাঁকে শান্তি দিয়েছিল, আর এটাই তাঁর ১১৬ বছরের জীবনের রহস্য ৷
বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
চল্লিশ পেরিয়ে ভাল থাকার রহস্য? কী সাংঘাতিক, বিবাহবিচ্ছেদ কেন উঠে আসছে কারণ হিসেবে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement