হোম /খবর /কলকাতা /
দুর্ঘটনার ঠিক আগে পুলকারে উঠে বন্ধুকে কী বলেছিল ঋষভ ?

দুর্ঘটনার ঠিক আগে পুলকারে উঠে বন্ধুকে কী বলেছিল ঋষভ ?

শনিবার বাবার কোলে বসে সেদিনের গল্প শোনাচ্ছিল সূর্যভ। যদিও এখনও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে।

  • Share this:

#কলকাতা: বন্ধু হারালে দুনিয়াটা খাঁ খাঁ করে। গানের এই বিখ্যাত লাইন এখন সূযাভ, সুপ্রভা আর ঐশানীর মনের লাইন। ঋষভ যে তাদের ছেড়ে চলে গেছে, তা এখনও জানে না এর কেউই। কিন্তু প্রিয় বন্ধুর সাথে যে আর দেখা হবে না, তা ভালোই বুঝতে পারছে খুদে তিনজন। ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি সকাল বেলা পবিত্রের গাড়িতে ওঠে সূযাভ ও সুপ্রভা। তার পরেই বৈদ্যবাটিতে শামিমের গাড়িতে করে আসে ঋষভ-সহ বাকিরা। শামিমের গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে তুলে নেয় পবিত্র। আর সেই গাড়িতেই একে একে সিঁধিয়ে যায় সকলেই।

সূযাভ ঘুম কাতুরে। তাই গাড়িতে উঠলেই চোখে চোখ লেগে যায় তার। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার বকাও দিয়েছে পবিত্র। যদিও সেদিন ঋষভ গাড়ির সামনে বসে। আর সূযাভ মাঝের আসনে। "গণেশ ঘুমিয়ে পড়বিনা। আমাকে বলেছিল ঋষভ।"

শনিবার বাবার কোলে বসে সেদিনের গল্প শোনাচ্ছিল সূর্যভ। যদিও এখনও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে। এদিনও বারবার ধরে বলেছে, ঋষভের বুকে খুব লেগেছিল। মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। ওর খুব যন্ত্রণা হচ্ছিল। কথা বলতে বলতে বারবার চোখ মুছছিল সূর্যভ। এদিন তাদের শেওড়াফুলির বাড়িতে বন্ধ রাখা হয়েছে টিভি। যাতে ঋষভের খবর দেখতে না পায় সে।

একই অবস্থা আরও দুই ছাত্রী সুপ্রভা ও ঐশানীর। সুপ্রভাকেও জানানো হয়নি তার বন্ধুর চলে যাওয়ার খবর। তবে সে বুঝতে পেরেছে তার বন্ধুর কিছু একটা হয়েছে। এদিনও সে বলেছে, ঋষভ ঠিক আবার স্কুল যাবে। আমরা একসাথে আবার স্কুলে যাব। তবে গাড়িতে করে নয়, ট্রেনে করে যাবে স্কুলে।

সুপ্রভাকেও পুল কারে করে স্কুলে পাঠাতে আর চায় না তার বাবা-মা। সুপ্রভার বাবা ভবেশ দাস বলেন, "বাধ্য হয়ে মেয়েকে ওই গাড়িতে করে স্কুল পাঠাতাম। কারণ আমার বাড়ির কেউ নেই স্কুলে পৌছে দেওয়ার জন্য। তবে এবার আমি স্কুলের বাস খুঁজে দেখছি। তাতে করে ওকে পাঠাব।" একই অবস্থা ঐশানীর।

কিছুদিন আগে তার এই গাড়িতে আঙুল ভেঙে যায়। তারপর থেকে এই গাড়িতে তার যাতায়াত বন্ধ ছিল। আবার সেই গাড়িতে করে যাতায়াত শুরু। সেখানেই বিপত্তি। ঐশানীর বাবা আর মা সকাল থেকে টিভি বন্ধ রেখেছেন। লুকিয়ে রেখেছেন মোবাইল ফোন। কিন্তু কোনও না কোনও ভাবে তাদের ছোট মেয়ে বোধহয় বুঝে গেছে আর নেই ঋষভ। একটা ভয় নিয়ে বালিশে মুখ ঢেকে বসে আছে সে। তার অভিভাবকরাও চাইছেন সবটা চেপে রাখতে। তবে সব কিছু কি আর ভুলে থাকা বা ভুলিয়ে রাখা সম্ভব। তাই সূর্যভ বলছে, পবিত্র কাকু তো কথা বলছে। কিন্তু ঋষভের বুক থেকে রক্ত বেরোচ্ছে, ওর কি হবে?" এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না কেউই। তাই প্রিয় বন্ধুকে আর স্কুলে বা পাশের আসনে না পাওয়ার যন্ত্রণায় একটাই কথা, "ঋষভ, আই মিস ইউ"....মিস করছে শ্রীরামপুর

Published by:Siddhartha Sarkar
First published:

Tags: Polba pool car accident, Rishav Death, Rishav Death In SSKM