Panchayat Election 2023: প্রায় ৭৩ হাজার আসনে মনোনয়ন জমা দিতে হাতে সময় কার্যত ৬ দিন, সর্বদল বৈঠক ছাড়াই পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা
- Published by:Satabdi Adhikary
- Written by:ARUP DUTTA
Last Updated:
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কমিশনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তাঁর ট্যুইটে জানিয়েছেন, আসলে তৃণমূলকে সুবিধে করে দিতেই কমিশনের এই পদক্ষেপ। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে কোনও হানাহানি হলে তার জন্য কমিশনকেই দায়ী থাকতে হবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন শুভেন্দু।
কলকাতা: দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম পদক্ষেপেই বিতর্কে জড়ালেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। কোনওরকম সর্বদল বৈঠক না করেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে দিলেন নব নিযুক্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। একইসঙ্গে বাহিনী নিয়ে নিশ্চয়তা ছাড়াই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট একদফায় করার সিদ্ধান্তেও ক্ষুব্ধ বিরোধীরা।
গত বুধবারই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা। দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করলেন বৃহস্পতিবার। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সাধারণত, ভোটের দিন ও নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনার। এটাই দীর্ঘ দিনের রীতি। ১৯৯৪ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার পর থেকে সমস্ত পুর ও পঞ্চায়েত ভোটে এই নীতিই অনুসরণ করা হয়েছে। সর্বদল বৈঠকের সেই রীতি ভাঙল এবার।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: অন্তর্ঘাত না সিগন্যালে সমস্যা? করমণ্ডল-কাণ্ডের রহস্যের চাবি কি লুকিয়ে এখানেই
যদিও, এ বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার দাবি, ‘‘এটা কোন নিয়ম নয়। আইনে এরকম কোনও বিধি নেই। প্রয়োজন মনে করলে ওই বৈঠক ডাকা হবে।’’ কমিশনারের এই মনোভাবে ক্ষুব্ধ সব বিরোধী রাজনৈতিক দল।
প্রধান বিরোধীদল বিজেপির বিরোধীদলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর ট্যুইট প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘এটা গণতন্ত্রের হত্যা। মার্ডার অব ডেমোক্র্যাসি। ব্লক, জেলা বা রাজ্যস্তরে কোনও সর্বদল বৈঠক না করে এক তরফা ভোটের দিন ঘোষণা করা হল।’’
advertisement
সিপিএম-এর রবীন দেব বলেন, ‘‘কমিশনারের এই মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট বিরোধীদের গণতান্ত্রিক দাবির বিষয়ে উনি কতটা নিরপেক্ষ হবেন! এটা কমিশনারে ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ। আসলে, ৮ দিন ধরে কমিশনার নিয়োগকে ঝুলিয়ে রেখে আচমকা কমিশনার নিয়োগ ও তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা একটা চালাকি। রাজ্য সরকার গোপনে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল। এই চক্রান্তের শরিক নবান্ন এবং রাজভবন।’’
advertisement
যদিও, কমিশনের দিন ঘোষণায় কোনও অন্যায় দেখছে না তৃণমূল। তৃণমূলের মতে, নিয়ম অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোটের দিন স্থির করে রাজ্য সরকার। ঘোষণা করে কমিশন। এরমধ্যে কোথাও কোনও নিয়ম ভাঙা হয়নি।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মতে, শুধু সর্বদল বৈঠককে বুড়ো আঙুল দেখানোই নয়, ভোটের দফা ও সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের জন্য বিরোধীদের কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের দাবি নিয়েও কোন আলোচনার প্রয়োজন মনে করছেন না এই কমিশনার। প্রসঙ্গত, এক দফায় ভোটের দিন ঘোষণা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে, কমিশনার রাজীব সিনহা বলেন, ‘‘ভোটের দফা ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকার নিশ্চিত বলেই তো সব দিক খতিয়ে দেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
advertisement
রাজ্য পুলিশ দিয়েই যে ভোট করাতে চায় কমিশন, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কমিশনার রাজীব। রাজীবের মতে, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আগাম সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। জেলায় জেলায় আইন- শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দফায় দফায় পর্যালোচনা করেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: বাড়ল রাজ্যের ‘অস্বস্তি’! নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে ‘বড়’ প্রশ্ন তুলল আদালত, রইল আপডেট
যদিও, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া মনোনয়ন জমা দেওয়াই সম্ভব হবে না বলে আগেই দাবি করেছে বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ও পাহাড়ের দ্বিস্তর পঞ্চায়েতে প্রায় ৭৩ হাজারের মতো আসনে প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য সাকুল্যে মাত্র ৬ দিন সময় পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে আবার একটা শনিবার। অধিকাংশ সরকারি দফতরে সেদিন কোনও কাজই হয় না। ফলে, মননোয়ন জমা করার জন্য কার্যত হাতে পাওয়া যাবে ৫ টা দিন। কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই আচমকা নির্বাচন ঘোষণা করে দেওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়ন জমা করাটাই বিরোধীদের কাছে কঠিন হয়ে যাবে।
advertisement
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কমিশনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তাঁর ট্যুইটে জানিয়েছেন, আসলে তৃণমূলকে সুবিধে করে দিতেই কমিশনের এই পদক্ষেপ। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে কোনও হানাহানি হলে তার জন্য কমিশনকেই দায়ী থাকতে হবে বলে আগাম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন শুভেন্দু।
এদিকে, শুভেন্দু ও বিজেপির এই সমালোচনার জবাবে তৃণমূলের কূণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী আর তিন চার দফায় ভোট করেও রাজ্য ক্ষমতায় আসতে না পেরে বিজেপি হতাশ। বাহিনী আর দফার বিষয়ে কমিশন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু,বিজেপি ও বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দেওয়ার লোক না পেলে তৃণমূল তো তাদের প্রার্থী খুঁজে দিতে পারবে না!’’
advertisement
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ১৯৭৮ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটে বরাবর এক দফাতেই ভোট হয়েছে। একমাত্র ২০১৩ তে তিন দফায় ভোট হয়। সে সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মীরা পান্ডে। রাজ্যের সঙ্গে দিন ঘোষণা ও দফা নিয়ে দাবি আদায় করতে যিনি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন।
কিন্তু, সেই পরিস্থিতি আজ নেই। বর্তমান কমিশনার রাজীব সিনহাকে এই পদে মনোনীত করে পাঠিয়েছিল নবান্ন। আর, ঘনিষ্ঠ মহলে রাজীবের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সুসম্পর্ক সুবিদিত। ফলে, প্রত্যাশা মতোই নবান্নের সঙ্গে কোনও সংঘাতে যাননি রাজীব।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷
Location :
West Bengal
First Published :
June 09, 2023 8:03 AM IST