কলকাতা: ডিএ ইস্যুতে এবার সিপিএমকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তিনি একাধিক ইস্যুতে তোপ দাগেন বিজেপি এবং কংগ্রেস শিবিরকে। এদিন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "বাজেট পেশের দিন ডিএ নিয়ে ঘোষণা করেছিলাম। কেউ কেই বলছে ওটা নাকি প্রস্তাব। কোনও প্রস্তাব নয়, ঘোষণা। ৯৯ শতাংশ ডিএ আমরা দিয়ে দিয়েছি। পেনশন বন্ধ করে দিলে কুড়ি হাজার কোটি টাকা আমাদের হাতে থাকতো। অনেক রাজ্যেই পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে, কিন্তু আমরা পেনশন বন্ধ করি নি। আমরাও কুড়ি হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে পারতাম।"
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু আমরা সবার কথাই ভাবি। যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের কথা যেমন ভাবি, তেমনি যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁদের কথাও আমরা ভাবি।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সবদিক নজর রেখেই আমাদের প্ল্যানিং করতে হয়। কেন্দ্রে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের সঙ্গে রাজ্যে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁদের পে স্কেল আলাদা। আমাদের সেই পে স্কেলের উপর নির্ভর করেই প্ল্যান করতে হয়।"
তিনি বলেন, "সিপিএম এর আমলে সব ডিএ পেন্ডিং ছিল। আমরা ৯৯ শতাংশ প্লাস ৬ শতাংশ ডিএ দিচ্ছি। কত হল! ১০৫ শতাংশ ডিএ দিচ্ছি।আমরা তো পেনশন যদি বন্ধ করে দিই তাহলে আমাদের কুড়ি হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। তাহলে আমরা ঋণের বোঝা অনেকটা কমাতে পারতাম।"
বিরোধীকে নিশানা করে তিনি বলেন, "আমি বিরোধী দলের কাছে জানতে চাইছি আপনারাই বলুন পেনশন কি আমরা বন্ধ করে দেবো? ১ লক্ষ ৭৯ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। টাকা তো আর আকাশ থেকে পড়বে না। কেন্দ্রের হাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রয়েছে, আমাদের হাতে কি কোনও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রয়েছে? আমরা বিনা পয়সায় সব দিই। আমরা কি নন্দলাল? ১১৪৯ টাকা দিয়ে গ্যাস কিনতে হয়। যখনই নির্বাচন শেষ হয় তখনই গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়।"
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "আর কি কি পেলে নন্দলালরা সন্তুষ্ট হবে? একটা নির্বাচন নিয়ে আঙুল তুলবেন না, সব মুখোশ খুলে গেছে, বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস সব এক হয়ে গেছে। লড়ে যাবে একটাই দল তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস। কেউ যদি অন্যায় করে তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ থাকে না। দস্যুরা সবসময় দস্যুই হয়। বগটুই কান্ডে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাকে সিবিআইয়ের কাস্টডি তে মেরে ফেলা হল। এটা ঠিক যে কোভিডের পর কোনো রকম অসুখ হলেই আমরা ভয় পাই। আমার নিজের ভাই মারা গিয়েছে, আমার খুব বিশ্বস্ত আমার অফিসের মানিক দা মারা গিয়েছেন।"
অ্যাডিনো ভাইরাস ইস্যুতে তিনি বলেন, "মোট ১৯ জন মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে ১৩ জনের কো-মর্বিডিটি রয়েছে। বাকি ছয়জন মারা গিয়েছেন অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে। এখন এই মুহূর্তে আমার কাছে আর কিছু দেওয়ার ক্যাপাসিটি নেই, যখন হবে তখন দেব। কথা বলার স্বাধীনতা সকলের আছে। কিন্তু কু কথা বলার স্বাধীনতা কারোর নেই। কথার মধ্যে শালীনতা থাকার দরকার সৌজন্যতা থাকার দরকার ভদ্রতা থাকার দরকার। এমন কথা বলব না, যে কথা বলতে গিয়ে একদিন মুখটা বেঁকে যায়। "
আরও পড়ুন, হাফ মন্ত্রী বলে কটাক্ষ, পাল্টা বিজেপি বিধায়ক মিহিরকে 'অমানুষ' বললেন চন্দ্রিমা!
আরও পড়ুন, রাজ্য বাজেটের মধ্যেই অভিনব প্রতিবাদ বিজেপির, ডিএ ঘোষণা হতেই ওয়াক আউট!
তিনি আরও জানান, "আজকে শুনলাম রাবরী দেবীর বাড়িতেও ওরা চলে গেছে। কিন্তু দেখবেন কংগ্রেসের কারোর বাড়িতে যায়নি, কংগ্রেস হচ্ছে ওদের এ টিম, আর সিপিএম বি টিম।কত চাই, কত দিলে সন্তুষ্ট হবেন? দয়া করে আমার মুন্ডুটা কেটে নিন, তাহলে যদি আপনারা সন্তুষ্ট হন। আমাকে যদি পছন্দ না হয় তাহলে আমার মুন্ডুটা কেটে নিন, কিন্তু এর থেকে বেশি আমার থেকে আর পাবেন না।"
আবীর ঘোষাল
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।