দুই বিধায়কের মধ্যে বিশ্বজিৎ দাস বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক৷ আর সুনীল সিং নোয়াপাড়ার বিধায়ক৷ সুনীল সিং আবার সম্পর্কে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর শ্যালক৷
এ দিন বিধানসভায় প্রথমে বিশ্বজিতের সঙ্গে দেখা হয় মুখ্যমন্ত্রীর৷ তাঁকে দেখেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, 'কেমন আছো?' সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেন বিশ্বজিৎ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান তিনি৷ বিশ্বজিতের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান সুনীল সিং-ও৷ প্রায় বাইশ মিনিট মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা৷ এর পরই দুই বিধায়কের 'ঘর ওয়াপসির' সম্ভাবনা জোরাল হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে বিশ্বজিৎ দাস (ডানদিকে) ও সুনীল সিং(মাঝখানে)৷ রয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকও৷
সুনীল এবং বিশ্বজিৎ বেশ কিছুদিন ধরেই শাসক দলের শীর্ষ স্তরের দু' একজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন বলে খবর৷ কারণ বেশ কয়েক মাস আগে বিজেপি-তে গেলেও সেখানে তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ দুই বিধায়কের৷ আবার বিশ্বজিৎ প্রকাশ্যে কখনওই দলনেত্রীর বিরুদ্ধে কোনও কটূক্তি করেননি৷ তাঁর মূল অভিযোগ ছিল উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলা তৃণমূল সভাপতি এবং খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে৷ এ দিন অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সহ উত্তর চব্বিশ পরগণার বেশ কয়েক জন তৃণমূল বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন৷
দল ছাড়লেও বিশ্বজিতের প্রতি কিছুটা হলেও নমনীয়তা দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি৷ যদিও প্রকাশ্যে তৃণমূলনেত্রী জানিয়েছিলেন, যাঁরা দল ছেড়েছেন তাঁরা চাইলেও আর দলে ফেরানো হবে না৷ বিশ্বজিৎ- সুনীল সত্য়িই ফিরে আসতে চাইলে মমতার ঘোষিত অবস্থান থেকে শাসক দল সরে আসে কি না, সেটাই এখন দেখার৷
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর বিশ্বজিৎ এবং সুনীল দু' জনেই দাবি করেছেন, উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়েই কথা বলতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন৷ কিন্তু নির্বাচনের দোরগোড়ায় হঠাৎ উন্নয়নমূলক খাতে খরচ করা নিয়ে কেন দুই বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে৷ এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরিয়ে দুই আঙুলে 'ভিক্ট্রি' সাইনও দেখিয়েছেন সুনীল৷ মনে করা হচ্ছে, সুনীল- বিশ্বজিতের তৃণমূলে ফেরা হয়তো সময়ের অপেক্ষা৷ আর শেষ পর্যন্ত সেটা হলে তা বিজেপি-র কাছেও নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা হতে চলেছে৷
Abir Ghosal/Arup Dutta