#কলকাতা: সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির। মঙ্গলবার জেলায় দলের মুখপাত্র ও কোর কমিটির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা প্রবীর ঘোষাল। তাহলে কি দল ছাড়ছেন তিনি? জল্পনা জিইয়ে রাখলেন তিনি।
লোকসভা ভোটে খারাপ ফল হয় হুগলি জেলায়। দলের খারাপ ফলের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একাংশের খারাপ আচরণকে দায়ী করেছিলেন প্রবীর ঘোষাল। যাদেরকে দলের মধ্যে তিনি পচা মুখ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই দলের একাংশের সঙ্গে তার দুরত্ব তৈরি হয়। সেই দুরত্ব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যে প্রবীর ঘোষাল বলছেন, "একটা চক্র কাজ করছে আমাকে হারানোর জন্যে। আমাকে হারানোর জন্য একটা চক্র কাজ করছে৷ এটা একটা শক্তিশালী চক্র। সামনে এগোতে না দেওয়ার একটা চক্র কাজ করছে।" তবে প্রবীর ঘোষাল এখনও দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি জানিয়েছেন, "আমি এখনও দলেই আছি। দলের অনুষ্ঠানে সকাল থেকে আজ যোগ দিয়েছি। আমি এখনও দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিইনি।" তবে প্রবীরবাবু এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, "লোকসভায় আমাদের খারাপ ফল হয়েছে। আমি দলে শুদ্ধিকরণের কথা বলেছি। আমি এখনও মনে করি আমি ঠিক বলেছি।"
১৯৮২ সাল থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক। সাংবাদিক প্রবীর ঘোষালকে উত্তরপাড়ায় ২০১৬ সালে টিকিট দেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখান থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভাল। তার পরেও তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কেন কিছু জানালেন না? প্রবীরবাবু জানিয়েছেন, "আমি জানিয়েছি। যেদিন লক্ষীরতন শুক্লা ইস্তফা দেয়, সেদিন আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়। আমি সমস্যার কথা বলি। আমাকে অন্যত্র ভোটে দাঁড়ানোর কথা বলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। আমি ভূমিপুত্র তাই অন্য কোথাও দাঁড়াতে রাজি হইনি। আমি ভোটে দাঁড়ালে উত্তরপাড়া থেকেই দাঁড়াব।"
তবে আজকে যা পরিস্থিতি হল, তাতে আদৌ তিনি দলে থাকবেন কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমনকি জল্পনা চলছে আগামী ৩১ তারিখ তিনি অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেবেন। তবে হাসি মুখে সেই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। শুধু বলেছেন ভবিষ্যৎ সব উত্তর দেবে। জেলার কাজ নিয়ে যে তিনি অখুশি। তা গোপন রাখেননি তিনি। বিশেষ করে কলেজের বিষয়ে সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়ের নাক গলানো। তার রাস্তা ঠিক না করা। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী বলার পরেও কলেজের পরিচালন সমিতি খর্ব করে দেওয়ার অভিযোগ তিনি করছেন। এই অবস্থায় তার বক্তব্য, "এই পরিস্থিতি অভিপ্রেত নয়। আমি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এলাকার বিধায়কের কাজ আছে। জনগণের জন্যে তাকে কাজ করতে হয়।" তবে তিনি জানিয়েছেন, দলের মধ্যে আমি এখন ব্রাত্য। তবে এইসব কথা বলার পরে দল শো-কজ করেছে প্রবীর ঘোষালকে।