Subrata Mukherjee: চিরকুটেই আসত নির্দেশ, সুব্রতদাকে চিরকুটেই বিদায় বার্তা লিখলেন দেবব্রত
- Published by:Debamoy Ghosh
Last Updated:
জ্যোতিবাবুুর ঘরে ঢুকেই জ্যোতিবাবুকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'এলিতেলিকে জমি দিয়েছেন। আর আমাদের অফিস করার জন্য জমি দেবেন না'?
#কলকাতা: চল্লিশ বছরের সম্পর্ক। একসঙ্গেই রাজনৈতিক জীবনের পথচলা শুরু। মেয়র পদের প্রথম দিন থেকেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দেবব্রত রায়চৌধুরী ছিলেন সেই একই পদে। স্মৃতির অ্যালবামে কত গল্প। স্মৃতির পাহাড়।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সর্বক্ষণের সঙ্গী। কলকাতার মেয়র হোন কিংবা পঞ্চায়েত মন্ত্রী। যখনই গুরুত্বপূর্ণ যে পদই সামলেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তাঁর আপ্ত সহায়কের দায়িত্বে ছিলেন দেবব্রতবাবুই। রাজনৈতিক জীবনের বন্ধু। দেবব্রত রায়চৌধুরী। কলেজে পড়তে পড়তেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ১৯৮০ সালে পরিচয়।
advertisement
advertisement
তরুণ সুব্রত তখন আইএনটিইউসির সভাপতি। সেই থেকেই জোড়ায় জোড়ায় বন্ধুত্ব। রাজনীতির পথ চলা শুরু। যতদিন গেছে ততই ঘনিষ্ঠ হয়েছে বন্ধুত্ব। ২০০০ সালে মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করার ডাক আসে। সে এক মহাবিপদ। একদিকে ব্যাঙ্কের চাকরি, অন্যদিকে মেয়রের আপ্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করার সুযোগ। ৫৩ বছর বয়সে এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন সুব্রতর আজীবন সঙ্গী দেবব্রত রায়চৌধুরী।
advertisement
নিউজ এইট্টিন বাংলার মুখোমুখি হয়ে বললেন, 'ওনার ডাকে ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়ে, ২০০১ সালের ২ মে , কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়রের আপ্ত সহায়ক হিসেবে যোগদান করি। সেই থেকে কখনও সঙ্গ ছাড়া হইনি।'
advertisement
কিন্তু হঠাৎ করেই ছন্দপতন। সুব্রত মুখোপাধ্যায় যে নেই, তা আজও দেবব্রত বাবুর বিশ্বাসই হয়না। দেবব্রতবাবুর কথায়, 'প্রতি মুহূর্তে ওঁর মুখে লেগে থাকত আমার নাম।' স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে গলা ধরে আসছে। চোখ ভিজে আসছে। 'দেবু কই ?' চেনা কণ্ঠে আজ আর কেউ তাঁকে ডাকছে না। এই আক্ষেপই প্রতি মুহূর্তে গ্রাস করছে দেবব্রতবাবুকে।
advertisement
দেবব্রতবাবুর কথায়, 'ওনার অধীনে কাজ করলেও সম্পর্কটা হয়ে গিয়েছিল বন্ধুর মতোই।' আজ সুব্রত মুখোপাধ্যায় নেই। তবে রয়ে গিয়েছে স্মৃতির পাহাড়। আইএনটিইউসির অফিসের জন্য রাইটার্স বিল্ডিংয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎ। সে এক বিরল অভিজ্ঞতা দেবব্রতবাবুর কাছে। কী অভিজ্ঞতা? প্রশ্নের জবাবে দেবব্রতবাবু বললেন, ''ঘরে ঢুকেই জ্যোতিবাবুকে সুব্রত মুখোপাধ্যায় বললেন, 'এলিতেলিকে জমি দিয়েছেন। আর আইএনটিইউসি ( INTUC )কে অফিস করার জন্য জমি দেবেন না?' জ্যোতিবাবু শুনেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা করলেন সেই জমির।'
advertisement
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আপ্তসহায়ক। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে সবার প্রিয় দেবুদা। খুব কাছ থেকে দেখেছেন প্রশাসনিক সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। সদা হাস্যময়, অফুরন্ত এনার্জি, যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন। একঘণ্টা একডালিয়াতে আড্ডা না মারলে চলত না।
মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের থেকে কাজের জন্য মাঝেমধ্যেই আসত নানা রকম চিরকুট। তাতে নির্দেশ থাকত কাজের। শেষ চিরকুটের লেখা নিয়ে স্মৃতি মেদুর ৭৩ বছর বয়সি দেবব্রত রায়চৌধুরী। সারা জীবন চিরকুটের নির্দেশই পালন করেছেন। 'বন্ধু' বিদায়ের পর নিজেই দু' এক কলমে এক চিরকুটেই লিখলেন বন্ধু বিদায়ের বার্তা। 'যেখানেই থেকো ভালো থেকো সুব্রতদা। ইতি তোমার দেবু৷'
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
November 19, 2021 2:45 PM IST