#বিষ্ণুপুর: ইটিভি নিউজ বাংলার খবরের সাফল্য। সোমবার থেকে স্কুলে যাবে একরত্তি রোহন(নাম পরিবর্তিত)। আবার উড়বে রোহনের স্বপ্নের উড়ান। রোহন এইচআইভি পজিটিভ শিশু। বিষ্ণুপুরের একটি স্কুলে ক্লাস ওয়ানের পড়ুয়া। বাধা পেরিয়ে আবার স্কুল যাবে সে। তার সহপাঠীদের সঙ্গেই পাশাপাশি বসে ক্লাস করবে সে। ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে চান শিশুর মা-ও।
রক্তে এইচআইভি সংক্রমণ। সেই অপরাধে একঘরে হয়েছিল এইচআইভি পজিটিভ শিশু রোহন। খবর জানাজানি হতে, চলতি বছরের জুন মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের দরজাও। অন্য অভিভাবকেরা তীব্র আপত্তি তোলায় শিশুটিকে স্কুলে যেতে বারণ করে দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষও। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে শিশুটির ভবিষ্যৎ। সেই খবর সম্প্রচারিত হয় ইটিভি নিউজ বাংলায়। এইচআইভি আক্রান্ত ছাত্র, তার মা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের নিয়ে স্টুডিওয় আলোচনা-সমালোচনা-কথোপকথন শুরু হয়। স্কুলের অধ্যক্ষ সঞ্জীব নস্কর ছাত্রটিকে বৃহস্পতিবার থেকে স্কুলে আসার অনুমতি দেন। কিন্তু অভিভাবকদের সম্মতি ছাড়া ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে রাজি হননি মা। স্কুল ও প্রশাসনের মধ্যস্থতায় অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা চান তিনি। সেই অনুযায়ী শনিবার স্কুলে জেলা প্রশাসন এবং অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিষ্ণুপুরের স্কুলে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। বৈঠকে স্থানীয় বিধায়ক, মহকুমা শাসক, ব্লক ডেবিডিও, জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সহ স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মূলত অভিভাবক অভাবিকাদের একাধিক প্রশ্ন ও অভিযোগ শোনেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। মূলত বৈঠকে অনেকেই অবিভাবক দাবি করেন, আলাদা করে শিশুটির ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু প্রশাসনের আধিকারিকরা তা মানতে চাননি। যদিও এদিন প্রায দেড় ঘণ্টা ধরে প্রত্যেক অভিভাবককে বোঝানো হয় রোগ সম্পর্কে। কিছুটা আশ্বস্থ হন তাঁরা। সবার সঙ্গে কথা বলেই নেওয়া হয় সিদ্ধান্ত। সোমবার থেকে আর পাঁচটা শিশুর মতোই ক্লাস করতে পারবে রোহন। শুধু তাই নয়, তার জন্য আলাদা করে কোন শিক্ষিক বা আয়া থাকবে কিনা তা স্কুল ঠিক করবে। এরপরই সোমবার থেকে ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে রাজি হন মা।
এদিন মহকুমা শাসক প্রলয় তালুকদার, ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা দেন। অন্যদিকে দিলীপ মণ্ডল, বিষ্ণুপুরের বিধায়কও এই বিষয়ে সচেতন করতে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে শিশুটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় বিধায়কের কথায় পরিস্কার কুসংস্কারের বেড়াজালে আটকে আছে পথ। ফলে আরও অনেক পথ চলা বাকি। সচেতনতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হবে প্রশাসন। অভিভাবকদের মধ্যে যে অজ্ঞতা ও অন্ধবিশ্বাস রয়েছে তা দূর করতে হবে। তাঁদের নিয়েই লড়াই চালিয়ে যেতে চান ওই মহিলা। যারা একঘরে করেছিল তাঁদের পাশে নিয়েই পথ পাড়ি দিতে চান তিনি। আমাদের পক্ষ থেকে এই ন্যায়ের লড়াইয়ে রইল শুভেচ্ছা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Child, ETV News Bangla, Hiv, Positive, School