ARNAB HAZRA #কলকাতা: রেলের গ্রুপ-ডি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-এর গন্ধ। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের। "নর্মালাইজেশন" প্রশ্নে নাস্তানাবুদ চেয়ারপার্সন। রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের থেকে বিশদ নথি তলব। রেলের গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বের হয় ২০১২ সালে। শূন্যপদ প্রায় ৫০০০। আবেদন জমা পড়ে প্রায় ১৭ লক্ষ। ১০ দিন ধরে দুই শিফটে নেওয়া হয় পরীক্ষা। অর্থাৎ ২০ শিফটে চাকরির পরীক্ষা দেন ১৭ লক্ষ। ভিন্ন শিফটে পরীক্ষা হয় ভিন্ন প্রশ্নমালায়। কিছু প্রশ্নমালা হয় কঠিন, কিছু সহজ। ২০ প্রশ্নমালায় প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাখা হয় নর্মালাইজেশন পদ্ধতি। এই নর্মালাইজেশন পদ্ধতি কীভাবে কখন নেওয়া হয়, তা জানতে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলে'র চেয়ারপার্সন-কে জরুরি ভিত্তিতে শুক্রবার তলব করে হাইকোর্ট। দুপুর ২টোয় হাজিরা দেন চেয়ারপার্সন। যদিও হাইকোর্ট-কে সন্তুষ্ট করতে ব্যর্থ রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের চেয়ারপার্সন। গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সংস্থা এবং রেলওয়ে বোর্ডের মধ্যে যাবতীয় চুক্তি এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সাতদিনের মধ্যে রেলকে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে এদিন আদালত। একইসঙ্গে অডিট রিপোর্টও পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের চেয়ারপারসনকে। কেনো এমন নির্দেশ? চেয়ারপার্সন ডিভিশন বেঞ্চকে হাজিরা দিয়ে জানান, "রেলে গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সব ফাইল সঠিকভাবে গুছিয়ে রাখা যায়নি। ২০১২পরবর্তী সময়ে রেলের একাধিক জোনের রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড এবং সেলের চেয়ারপার্সন অদল বদল হয়, তাই সঠিকভাবে সেই সময় সমস্ত ফাইল মেনটেন করা যায়নি।" এই তথ্য জেনে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্যে এজলাসে তখন কার্যত পিনড্রপ সাইলেন্স। গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় "নর্মালাইজেশন" পদ্ধতির মানদন্ড কি ? গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মিনিটস কোথায়? কীভাবে চূড়ান্ত মেধা তালিকা প্রকাশের আগেই নিয়োগ হয়? এই তিন প্রশ্নের কৈফিয়ৎ-ও রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেল এর চেয়ারপার্সনের কাছে চায় ডিভিশন বেঞ্চ। উত্তর দিতে গিয়ে চেয়ারপার্সন জানান, সব নিয়োগ রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড-এর পলিসি মেনে হয়। ডিভিশন বেঞ্চ এর পাল্টা প্রশ্ন, " গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোন স্তরে নরমালাইজেশন পদ্ধতি প্রয়োগ হয়?" চেয়ারপারসনের উত্তর, "লিখিত পরীক্ষার পরই নর্মালাইজেশন। " নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখ কোথায়? ডিভিশন বেঞ্চের এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি চেয়ারপার্সন। চেয়ারপার্সন আদালতকে জানান, "বিশদে বিস্তারিত আকারে সমস্ত কিছু বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া যায়নি। এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের এমন সিদ্ধান্তের। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ "আইনের চোখে নথির মূল্য আছে, নথি পেশ করুক রেল।" চেয়ারপার্সনের এ দিনের বক্তব্য ও নথি সন্তুষ্ট করতে পারেনি আদালতকে। মামলাকারী বিপুল বিশ্বাসের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, "গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সংস্থা এবং রেলওয়ে বোর্ডের মধ্যে চুক্তি এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সাতদিনের মধ্যে রেলকে পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অডিট রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট সেলের চেয়ারপার্সনের থেকে।" ২০ ডিসেম্বর মামলাটি শুনানির জন্য ফের আসবে হাইকোর্টে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Group D, Indian Railway, Railway Recruitment