#কলকাতা: বেহাল জাতীয় সড়ক। তার জেরে হাল খারাপ রাজ্য পরিবহণ সংস্থার। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (North Bengal State Transport Corporation) প্রতিদিন ক্ষতির মুখে পড়ছে। কখনও কম যাত্রী, কখনও জ্বালানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। এর সাথে নিত্যদিনের যন্ত্রণা বেড়েছে টায়ার খারাপ হয়ে যাওয়া এবং স্প্রিং লিফ নষ্ট হয়ে যাওয়া। আর এর সব কিছু মিশেলে এনবিএসটিসি'র চলা ৫৭ খানা বাস নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিদিন। এরই মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কৃষ্ণনগর অবধি বাসে যেতে সময় নিচ্ছে ৭ ঘন্টা। ফলে বাড়ছে জ্বালানি খরচ।
কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্য প্রধান রাস্তা হল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই রাস্তা ধরেই কলকাতা থেকে কোচিবিহার এসি, নন এসি, ভলভো বাস দৌড়য়। এই রাস্তার একটা বড় অংশ খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বারাসাত থেকে কৃষ্ণনগর অবধি অংশ৷ মালদার কিছু অংশ। এই সব জায়গায় রাস্তার ওপরে একাধিক বড় বড় গর্ত হয়ে পড়ে আছে। আর সেখান দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়েই ঘটছে দূর্ঘটনা। এন বি এস টি সি সূত্রে খবর, প্রতিদিনই ভাঙছে বাসের স্প্রিং লিফ। বাস পিছু মাসে অন্তত ৪ থেকে ৫ বার তা বদল করতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাসের টায়ার খারাপ হতে শুরু করেছে।
এন বি এস টি সি'র এক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন গত দু'মাসে অন্তত ১০০ কাছাকাছি নতুন টায়ার তাদের কিনতে হচ্ছে। এন বি এস টি সি'র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বাসের টায়ার একাধিক বার পাংচার হচ্ছে। আর তা বারবার সারাতে খরচ হচ্ছে ১০০০ টাকা করে। যদিও তা স্থায়ী হচ্ছে না। এন বি এস টি সি'র নোডাল অফিসার অনিল অধিকারী জানিয়েছেন, "বাসের টায়ার নিয়ে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে খরচ হচ্ছে প্রচুর টাকা।"
কলকাতা থেকে মালদা, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার সহ একাধিক রুটে মোট ৩০টি বাস যাতায়াত করে। কলকাতা থেকে মূর্শিদাবাদের মধ্যে যাতায়াত করে ২৭ টি বাস। আর এই সব বাসের খরচের বহর বাড়ছে। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে বদলে গেছে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার রাস্তাও। আগে বাস যেত বারাসাত-কৃষ্ণনগর হয়ে। এখন রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে সেই বাস যাচ্ছে বর্ধমান, ফুটিসাঁকো হয়ে সোজা মোড়গ্রাম। সেখান থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সরকারি বাস যাচ্ছে। এর ফলে কৃষ্ণনগর অবধি যে সব যাত্রী সরকারি বাসে যেতে চাইছেন তারা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: পুজো মিটলেই ফের ভোট বাংলায়, বাকি চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ কমিশনের
অন্যদিকে ঘুরপথে বাস যেতে গিয়ে জ্বালানি লাগছে বেশি। সময় লাগছে বেশি। আর সেই রাস্তায় গাড়ি বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক যানজট হচ্ছে। অনিল বাবু জানিয়েছেন, "বাসে যাত্রী কম হচ্ছে, তার ওপর যদি তেলের খরচ বেড়ে যায় তাহলে আমাদের পক্ষে মুশকিল।" এন বি এস টি সি সূত্রে খবর, কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি রুটে আসা যাওয়ার জন্য সাধারণ সময়ে নন এসি বাসে তেল খরচ হয় ৩০০ লিটার। এখন সেটা বেড়ে গিয়ে হচ্ছে ৩৬০ লিটার। এসি বাসে তেল লাগত ৩৪০ লিটার। সেটা এখন হচ্ছে প্রায় ৪০০ লিটার। কলকাতা থেকে মালদা আসা যাওয়ার জন্যে তেল প্রয়োজন ১৫২ লিটার। নন এসি বাসে এখন তেল লাগছে ১৮৫ লিটার। ফলে যে ভাবে তেলের খরচ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে তাতে আখেরে বিপুল টাকার ক্ষতি হচ্ছে রাজ্য সরকারের এই পরিবহণ সংস্থার। ফলে এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে কত সংখ্যক বাস চালানো সম্ভব তা নিয়ে বেজায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবহণ নিগম।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।