বউবাজারে একাকী "গণেশ"
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
পরিত্যক্ত বাড়িতে, আদরে, অবহেলায় গায়ে ধুলো মেখে তিনি বসে আছেন।
#কলকাতা: একাকী গণেশ। পরিত্যক্ত বাড়িতে, আদরে, অবহেলায় গায়ে ধুলো মেখে তিনি বসে আছেন। সিংহাসন পড়ে আছে, তিনি যদিও মাটিতে বসে। সদর দরজা খোলা, কোলাপসিবল গেটে ঝুলছে তালা। রাতারাতি কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে বড়ই একলা হয়ে গেছে ভগবানও। এই একটা ছবিই হাজার কথা বলে দিচ্ছে বউবাজারের গৌর দে লেনে।
"উনি তো একলা নন, উনিই তো আমাদের শেষ সম্বল রক্ষা করছেন। সব হারাতে বসেছি। শুধু এই ভগবান ছাড়া।" তিন নম্বর গৌর দে লেনের মুখে দাঁড়িয়ে কথা গুলো বলে চলেছেন উত্তম পাল। দু'জন মানুষ পাশাপাশি হেঁটে যেতে পারবে না। গৌর দে লেনের সেই বিখ্যাত গলির রাস্তা পেরোলেই চোখ আটকে যাবে। একটা ফাঁকা বড় জায়গা। যেখানে এখন ক্রেন বসানোর কাজ চলছে। আর তার পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে দুগা পিতুরি লেন। ওই জায়গার আশেপাশেই তো ছিল শীল বাড়ি, ছিল দাস বাড়ি, ছিল মল্লিক বাড়ি। হ্যাঁ ছিল। এখন শুধু তার ভাঙাচোরা খাঁচাটা পড়ে আছে। এই বাড়িগুলোর লোকজন এখন পাড়া ছাড়া। বদলে গিয়েছে তাদের ঠিকানা। আর এই ভয়টাই জাঁকিয়ে বসেছে গৌর দে লেনের একাধিক বাড়িতে। আধ ঘন্টার নোটিশেই বাড়ি ছাড়া হয়ে গিয়েছে প্রায় ৪৫টি পরিবার। আর যারা এখনও থেকে গেছেন, তারা কেউই রাতে বাড়িতে থাকছেন না। গৌর দে লেনে ঢোকার মুখেই থাকেন উত্তম দে। এক চিলতে ঘর থেকে নিজের প্রয়োজনীয় নথি সরাতে তিনি ব্যস্ত। তার সহজ জবাব, "রাতে মাথার ওপরে ছাদ ভেঙে পড়লে আমায় কে বাঁচাবে বলুন তো?" উত্তর নেই ওই এলাকায় নিযুক্ত থাকা মেট্রোরেলের শ্রমিকদের।" এই জন্যেই তো রাতের বেলা বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছি। দিনের বেলা এসে একবার করে দেখে যাচ্ছি। শেষ সম্বলের ঘরটা আছে তো?"
advertisement
শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বাড়ির ফাটল মেরামতির কাজ। গোটা এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মিটার দিয়ে চলছে বাড়িগুলি পরীক্ষার কাজ। কে এম আর সি এল-এর বক্তব্য বাড়ি ভেঙে পড়বে না। ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই ছাদেরও। তবে বেশ কিছু বাড়ির ফাটল বেড়ে যাওয়ায় সেগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে। বারবার ফাটল আর মেরামত। এই করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। তাদের ক্ষোভ, কবে থেকে তারা স্বাধীন ভাবে জীবন শুরু করতে পারবেন।
advertisement
advertisement
আপাতত গৌর দে লেন ছেড়ে বেরিয়ে অপেক্ষা করছে টানেল বোরিং মেশিন। সোমবার থেকে তার দৌড় শুরু করার কথা। এবার যে অংশ দিয়ে টানেল বোরিং মেশিন যাবে, সেখানেই এর আগে একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে বাকি অংশ নিয়ে ভীষণ সাবধানী ভূমিকা নিতে চায় সংস্থা। আপাতত গোটা এলাকায় গ্রাউটিং এর কাজ চলছে। জল, সিমেন্ট ও বিশেষ এক ধরণের রাসায়নিক সংমিশ্রণ পাঠানো হচ্ছে মাটির তলায়। ফলে নতুন করে আর সমস্যা হবে না বলে দাবি কে এম আর সি এল'এর ইঞ্জিনিয়ারদের।
advertisement
ABIR GHOSHAL
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
March 14, 2020 1:33 PM IST