মাটির তলায় তৈরি হচ্ছে সুড়ঙ্গ, ওপরে পৈত্রিক ভিটে ছাড়ছে বউবাজার

Last Updated:

ফের দৌড় শুরু টিবিএমের, ঘর ছাড়া শুরু বউবাজারের

#কলকাতা: মাত্র ৭ মাসের ব্যবধান৷ ফের বাসা ছেড়ে হোটেলমুখী বউবাজার। আধার, ভোটার কাড থেকে প্রিয় পোষ্য, হাতের কাছে যা পাওয়া গেছে তা নিয়েই সোমবার সকাল থেকে বাড়ি ছাড়তে শুরু করেছে বউবাজারের গৌর দে লেন। ঘর ছাড়ার আগে প্রাথনা শুধু একটাই বাড়িটা যেন আস্ত থাকে, তাসের ঘরের মতো যেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে না পড়ে।
চৈতন সেন লেনের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। এ পাড়ায় তাদের বাড়ি পরিচিত চিড়িয়াখানা বলে। এ বাড়িতে রয়েছে তাদের নিজস্ব পোষ্য জেনি। রয়েছে অনেক গুলি বিদেশি পাখি। আর রয়েছে রঙিন মাছ। সাত মাসে আগে মেট্রোর কাজ শুরুর সময়ে যখন বউবাজারে বাড়ি ভেঙে পড়েছে, তখন অন্যদিকে তার সাধের পাখি মারা গেছে। তার অভিযোগ, "এক জোড়া পাখির দাম ছিল ৪৫ হাজার করে। তিন জোড়া পাখি মারা গেছে। ক্ষতির বহরটা একবার বুঝুন। মারা গিয়েছে আমার সাধের প্রচুর মাছ। যা জাপান থেকে নিয়ে আসা।" মৃত্যুঞ্জয়বাবুর কথায়, মাটির নীচে মেশিন চললে তাতে যে কম্পন তৈরি হয় তা এই সমস্ত পশু পাখিদের পক্ষে সহ্য করা মুশকিল। মেট্রো মানুষের জন্য না হয় হোটেলের ব্যবস্থা করল। পোষ্যদের কি হবে? তা নিয়ে বেজায় চিন্তায় মুখোপাধ্যায় পরিবার।
advertisement
সোমবার সকালে কে এম আর সি এলের পাঠানো গাড়িতে চেপে হোটেল রওনা হয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবুর পরিবার। মাছ ও পাখি ঘরেই ছেড়ে যেতে হয়েছে। সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন শুধু পোষ্য ল্যাব্রাডর জেনিকে। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর স্ত্রী বলেন, "মানুষ তো না হয়, তাদের ভাব প্রকাশ করতে পারে। কথাও বলতে পারে। কিন্তু অবলাদের কথা শোনার কেউ নেই। আমি রোজ একবার বাড়িতে আসব ওদের দেখতে। শুধু বাড়িটা যেন আস্ত থাকে আমাদের।" এ পাড়ার অনেকেই বলছেন, তাদের বাড়িতেও আগের বার ফাটল তৈরি হয়েছিল। কে এম আর সি এল বাড়ি সারিয়েও দিয়েছে। ফের যদি ফাটল ধরতে শুরু করে, বাড়ি সেটা সহ্য করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে তারা। তবে ইঞ্জিনিয়ারদের তরফ থেকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, বিপদ হবে না বলে।
advertisement
advertisement
অন্যদিকে, বউবাজারের কাজ শুরু হতেই আবার রোজগার বন্ধ হতে চলেছে সোনার কারবারিদের। গৌর দে লেনের একাধিক বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে চলে সোনার কারখানা। প্রচুর শ্রমিক এই কাজের সাথে যুক্ত। বাড়ি ফাঁকা করতে বলায়, কাজ বন্ধ সোনার কাজের ছোট ছোট কারখানায়। যারা এখানে কাজ করেন তাদের দিন আনি, দিন খাই ব্যপার। ফলে কাজ বন্ধ থাকায় সংসার চলবে কি করে? তা নিয়েই দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মানুষগুলি। সোনারপুরের বাসিন্দা বরুণ কুমার দাস। নয় বছর ধরে গৌর দে লেনের এক বাড়িতে সোনার কারখানায় কাজ করেন। হতাশ গলায় তিনি বলেন, "রোজ ৩০০ টাকা করে পাই। এখন এক টাকা করেও পাচ্ছিনা। মালিকও তো ব্যবসা থেকে টাকা পাচ্ছেন না। ফলে সংসার চালাবো কি করে? তাই তো বুঝে উঠতে পারছিনা।" একই অভিযোগ সুভাষ মন্ডলের। তিনি বলেন, "মালিক অন্য জায়গা খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পাচ্ছে না। ফলে আমাদের পকেটেও টাকা আসছে না।"
advertisement
তবে সবটাই সাময়িক বলে দাবি কে এম আর সি এলের। তারা নিশ্চিত করছেন, বউবাজারে আর বাড়ি ভেঙে পড়বে না। তবে ভয় আর কি হবে? কি হবে? করেই দিন কাটাচ্ছে বউবাজার।
ABIR GHOSHAL
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
মাটির তলায় তৈরি হচ্ছে সুড়ঙ্গ, ওপরে পৈত্রিক ভিটে ছাড়ছে বউবাজার
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement