কলকাতা: নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের দিন উপস্থিত থাকছে না বিরোধীরা। এই মর্মে কার্যত একই বন্ধনীতে এসেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করা হয় বিরোধীদের পক্ষে।
রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট বিরোধীদের। বুধবার ২০টি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে জারি করা যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কট করবে। তালিকায় রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, সিপিআই, সিপিআইএম, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টি-সহ মোট ২০টি দল।
নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করা নিয়ে যৌথ বিবৃতি জারি করেছে তারা। সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ব্রাত্য রাখার বিরোধিতায় এই প্রতিবাদ বিরোধী শিবিরের।
আরও পড়ুন– জেলে অনুব্রত, তবুও পদ্ম সংগঠনের হাল বেহাল! আজ বীরভূমে সাংগঠনিক বৈঠকে সুকান্ত
বিরোধীদের পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “সংসদের অধিবেশন ডাকেন রাষ্ট্রপতি, তিনি যৌথ সংসদীয় অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং সভা স্থগিত করেন। সংসদে পাশ করা আইন কার্যকর করতে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে রাষ্ট্রপতিকে ছাড়া সংসদ অচল।”
এবার সেই সুরে সুর মিলিয়ে আইএসএফের তরফেও বিবৃতি জারি করা হয়েছে। বিবৃতিতে কার্যত বিরোধীদের পক্ষে দাঁড়িয়ে বলা হয়েছে, ২৮ মে নবনির্মিত সংসদ ভবনের উদ্বোধন হবার কথা। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অথচ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূর ভবনের উদ্বোধন করা উচিত। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সাংবিধানিক রীতিনীতির কোনও তোয়াক্কা করেন না বোঝা যাচ্ছে। এমনিতে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। অতিমারীর সময় যখন গোটা বিশ্ব লকডাউনের কবলে তখন পরিবেশ নষ্ট করে সংসদ ভবনের নির্মাণের কাজ চলেছে। দেশের অর্থনীতি যখন সঙ্কটে তখন এই রাজসূয় যজ্ঞে কোটি কোটি টাকা ঢালার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার দম্ভে মোদি সরকার এইসব কানে তোলেনি। ২০২০ সালে এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে তৎকালীন দলিত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এখন রাষ্ট্রপতিকে উদ্বোধন করতে না দিয়ে, প্রচারের সমস্ত আলো শুষে নিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। ইংরেজিতে একটা শব্দ আছে ‘মেগালোম্যানিয়াক’, অর্থাৎ নিজেকে শক্তিশালী বা ক্ষমতাধর ভাবার ভ্রান্তিতে ভোগেন এমন ব্যক্তি। সেই ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদি হচ্ছেন না তো ?
কিছুদিন আগে আদিবাসী সমাজের একজনকে রাষ্ট্রপতি করার সময় বিজেপি অনেক বাগাড়ম্বর করেছিল। আজ তাঁকেই ব্রাত্য করে রাখা হচ্ছে। ভারতীয় গণতন্ত্রের পীঠস্থান সংসদকে অসম্মান করছেন মোদি। সংবিধানের অমর্যাদা করছেন তিনি। বিশ্বের সামনে দেশের সম্মান ধুলোয় লুটিয়ে দিলেন তিনি। উদ্ধত প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত, যে সাধারণ মানুষের করের টাকা দিয়েই এই ইমারত তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে সমস্ত বিরোধী দল, যাদের সংসদে সদস্য আছেন, তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। এই জুমলাবাজ, গণতন্ত্র হত্যাকারী, স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে তাড়াতে জোটবদ্ধ হওয়া একান্ত জরুরি।”
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: ISF, Naushad Siddiqui