#কলকাতা: "লিট্টি-আলু চোখা বিহারীদের থেকে চেয়ে খাই। চাপাটি চেয়ে খাই।"...এ কথা শেষ হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠেকুয়া খেতে কেমন লাগে প্রশ্ন এসেছিল বৈঠকে উপস্থিত একজনের থেকে। তার উত্তরে মমতা যা বলেছেন, তাতেই জিতে নিয়েছেন লাখো মানুষের মন, এমনই বলছে ওয়াকিবহাল মহল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃণমূল ভবনে হিন্দিভাষী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। সেখানে মমতা বলেন, "ঠেকুয়া হাম জাদা খাতে হ্যায়। হামারা জিন্দেগিকা স্টিয়ারিং জিসকে হাত মে হ্যায়, মেরা ড্রাইভার বীরেন্দর জি অউর সিকিউরিটি দ্বিবেদী জি সবসে আচ্ছা ঠেকুয়া বানাতে হ্যায়।"
এ দিন আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক একটি বৈঠকে মমতা যে আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন, তাতে বাঙালিদের পাশাপাশি অবাঙালি ভোট যাতে কোনভাবেই বিজেপিতে না চলে যায়, তা নিয়ে যথেষ্ট স্পর্শকাতর তিনি। মমতা এ দিনের বৈঠকের পুরোটাই বক্তব্য রেখেছেন হিন্দিতে। ঠিক যেভাবে হিন্দি বলতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে, সেই ঢঙেই। মমতা বলেন, "ওঁরা আমাকে কি হিন্দি শেখাবে। আমি কান ধরে শেখাব, আমি গুজরাটি ভাষা, পঞ্জাবি জানি। আমি পঞ্জাবের বিভিন্ন গ্রামে গিয়েছি। টেলিপ্রম্পটার দেখে দেখে হিন্দি পড়েন উনি, আমি না।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজ্যে আপনাদের কারও কোনওদিন কাজে অসুবিধা হয়েছে? টাটা, বিড়লা হোক বা অন্য কেউ কারও অসুবিধা হয়নি। এখন আপনাদের দায়িত্ব ভোট দেওয়া। বিজেপি বাঙালি-অবাঙালি ভেদাভেদ তৈরি করতে চাইছে। আমি চাই বাঙালিদের থেকে বেশি ভোট আপনারা আমাদের দিন। আমি দেখিয়ে দিতে চাই আমরা সবাই এক। আমার ওপর ভরসা রাখুন।" মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "আমি হেমন্ত সোরেনের শপথে গিয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমার খারাপ লাগল, দুঃখ লেগল যখন ওঁ ঝাড়গ্রামে এসে রাজনীতি করল। এ রকম করলে আমিও ওঁদের রাজ্যে গিয়ে বাঙালি ভোট চাইব।"
অবাঙালিদের প্রতি আস্থা বোঝাতে গিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমার জীবনের স্টিয়ারিং যাঁর হাতে আছে। যে আমার নিরাপত্তা দেয়, আমি কখনও জানতে চাইনি তাঁরা কারা। আমি বিহারী রাজীব সিনহাকে মুখ্যসচিব করেছিলাম। আমার ডিজি হরিয়ানার লোক। সচিব গোপালিকা বিহারের। রাজীব কুমার উত্তরপ্রদেশের। এঁরা আমার সঙ্গে এক পরিবারের মতো ভাল কাজ করছে। আপনারাও চায়ের দোকান, মহল্লা সব জায়গায় যান। টিম তৈরি করুন। আপনাদের জন্য হিন্দি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় করেছি।ভোটের পর ৩৬৫ দিন আমি আছি। আমি বিজেপিকে কিছু ছাড়তে রাজি নই।" এ দিন সংগঠনের সভায় মমতায় আবেগাপ্লুত বক্তৃতা শেসে হাততালিতে ভরেছিল তৃণমূলভবনের ছোট্ট অডিটোরিয়াম।